টানা তিন দিন উত্থানের পর শুক্রবার পতনের মুখ দেখল শেয়ার বাজার। প্রায় ২৯৯ পয়েন্ট খুইয়ে ফের ১৭ হাজারের নীচে নেমে গেল সেনসেক্স। মুনাফার টাকা ঘরে তোলার পাশাপাশি মার্কিন অর্থনীতির ‘স্বাস্থ্য’ নিয়ে আশঙ্কা যার মূল কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কিছুটা ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত দিয়ে গত তিন দিন লাগাতার ঊর্ধ্বমুখী ছিল সূচক। ১৭ হাজারের ঘরেও ঢুকে পড়েছিল সেনসেক্স। স্বাভাবিক ভাবেই এ দিন লাভের টাকা ঘরে তোলার হিড়িক ছিল লগ্নিকারীদের মধ্যে। বিশেষত এশিয়া ও ইউরোপের বাজার পড়তে থাকায় শেয়ার ধরে রাখার ঝুঁকি নিতে চাননি অনেক লগ্নিকারীই। যার ‘মাসুল গুণে’ ২৯৮.৫৭ পয়েন্ট পড়েছে সূচক। দিনের শেষে থেমেছে ১৬,৮৬৬.৯৭ অঙ্কে। ৯৩.৮০ পয়েন্ট খুইয়ে ৫,০৫৯.৪৫ অঙ্কে নেমেছে ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক নিফটি-ও।
অবশ্য এ দিন বাজারের পতনে ইন্ধন জুগিয়েছে মার্কিন অর্থনীতির হাল নিয়ে নতুন করে তৈরি হওয়া আশঙ্কা। বিশেষত ফের মন্দার মুখে ঢলে পড়ার সম্ভাবনা রুখতে মার্কিন প্রশাসন ঠিক কী করতে চায়, সে সম্পর্কে যথেষ্ট ধোঁয়াশা থাকায় বাজার হতাশ বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত। ফের মন্দা আটকাতে আমেরিকায় যত বেশি সম্ভব কাজের সুযোগ তৈরি করতে চান প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তিনি চান, যত দ্রুত সম্ভব কমুক বেকারত্ব। যাতে নতুন কাজ পাওয়ার পর বেতনের টাকা আসে মানুষের পকেটে। একই সঙ্গে বৃদ্ধি পায় বর্তমানে বিভিন্ন সংস্থায় কর্মরতদের বেতনের অঙ্ক। কারণ তাঁর মতে, ওই টাকা হাতবদল হয়ে বাজারে এলে, তৈরি হবে বিভিন্ন পণ্য ও পরিষেবার চাহিদা। চাকা ঘুরতে শুরু করবে মার্কিন অর্থনীতির।
এই লক্ষ্য মাথায় রেখেই ‘আমেরিকান জবস অ্যাক্ট’ (মার্কিন চাকরি আইন) পাশ করাতে চান ওবামা। যার মাধ্যমে নতুন কর্মী নিয়োগ করলে, কর ছাড় পাবে কোনও সংস্থা। একই ধরনের সুবিধা মিলবে ‘পে-রোল’ ভুক্ত কর্মীদের বেতন বাড়লেও। আর এই খাতে সরকারি অর্থের সংস্থান সুনিশ্চিত করতে ৪৪,৭০০ কোটি ডলারের ত্রাণ প্রকল্প ঘোষণা করতে চান তিনি। তাই রাজনৈতিক দূরত্বকে দূরে সরিয়ে রেখে যত শীঘ্র সম্ভব এই পরিকল্পনা পাশ করার জন্য সব দলের কাছেই আবেদন জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু বাজারের আশঙ্কা, আমেরিকায় ঋণের ঊর্ধ্বসীমা বৃদ্ধির মতো রাজনৈতিক দড়ি টানাটানির শিকার হতে পারে এই প্রস্তাবও। মার্কিন অর্থনীতিকে ফের কী ভাবে চাঙ্গা করা যায়, মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেড রিজার্ভের গভর্নর বেন বার্নানকে-র সাম্প্রতিক বক্তব্যেও তার কোনও হদিশ মেলেনি বলে ধারণা লগ্নিকারীরাদের। ফলে তা-ও সপ্তাহের শেষ লেনদেনের দিনে পতনের মুখে ঠেলে দিয়েছে বাজারকে। |