রাস্তা সংস্কারে টাকা নয়ছয়, অভিযুক্ত রায়নার পঞ্চায়েত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রায়না |
বর্ষার জেরে মোরামের রাস্তা লাল কাদায় ভর্তি রাস্তা। তবু রাস্তার পাশে বোর্ড লাগিয়ে ঘোষণা করা হয়েছে, রাস্তাটি কংক্রিটের করা হয়েছে। এই কাজের তারিখ ও খরচপত্রও সেখানে লিখে দেওয়া হয়েছে রায়নার শ্যামসুন্দর পঞ্চায়েতের তরফে। বয়রা গ্রামে একশো দিনের কাজে এই রাস্তা সংস্কার ছাড়াও পুকুরের ঘাট নির্মাণ নিয়ে বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে বিডিও-র কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন এলাকার কিছু বাসিন্দা। রায়না ১ বিডিও সুরেশচন্দ্র রানো জানান, তদন্ত শুরু হয়েছে।
গত ১৬ অগস্ট কয়েক জন স্থানীয় বাসিন্দা বিডিও-র কাছে অভিযোগে জানান, বায়রা মসজিদতলা থেকে কবর স্থান পর্যন্ত কংক্রিটের রাস্তা, মসজিদতলা থেকে সিমলা পুকুর পর্যন্ত কংক্রিটের রাস্তা এবং সিমলাপুকুরের ঘাট নির্মাণ- এই তিনটি প্রকল্পের কাজ না হওয়া সত্ত্বেও বোর্ড লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের আরও অভিযোগ, কাজের মাস্টার রোলের টাকা নয়ছয় করা হয়েছে। |
গ্রামের বাসিন্দা তথা খেতমজুর শেখ নাজির আলমের অভিযোগ, “এক দিনও এই তিনটি প্রকল্পের কাজ করতে দেখা যায়নি। কিন্তু এক দিন সকালে দেখি, তিনটি প্রকল্পের বোর্ড লাগানো হয়েছে। কবে কাজ শুরু হয়েছে এবং কত খরচ, তা-ও জানানো হয়েছে।” অভিযোগকারী বাসিন্দাদের দাবি, সিমলাপুকুরের কাজ গত ১ মার্চ, বায়রা মসজিদতলা থেকে সিমলাপুকুর পর্যন্ত ও মসজিদতলা থেকে কবরস্থান পর্যন্ত রাস্তার কাজ গত ২ মার্চ শুরু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। তিনটি প্রকল্পের জন্য মজুরি ও সামগ্রী বাবদ কত করে টাকা লাগবে তা-ও বলে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা নাজির মল্লিকের অভিযোগ,“ আমার জব কার্ডের নম্বর ব্যবহার করে কেউ ওই মসজিদতলা থেকে কবর স্থানের রাস্তার কাজে মজুরির ১৯৫০ টাকা তুলেছেন। এই টাকা তোলার সময়ে আমার নাম মাজির মল্লিক বলে দেখানো হয়েছে।” আর এক বাসিন্দা শেখ নুরুলের দাবি, “সিমলা পুকুরের ঘাট নির্মাণের মাস্টার রোলে আমার নাম দেওয়া হয়েছে। আমি ওই প্রকল্পে কোনও কাজ করিনি। কিন্তু আমার নামে ১৩ দিনের কাজ দেখিয়ে ১৯৫০ টাকা তোলা হয়েছে।”
পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের দেবাশিস সাহার অবশ্য দাবি, “ওই তিনটি প্রকল্পের কাজ এখনও শুরু হয়নি। তবে কাজ হবে বলেই বোর্ড লাগানো হয়েছে। এটা মোটেই আইনবিরুদ্ধ নয়।” তাহলে কাজ শুরু হয়েছে বলে নির্দিষ্ট তারিখ বোর্ডে কেন লেখা রয়েছে, তার কোনও সদুত্তর প্রধান দিতে পারেননি। কাজ না শুরু হলে মজুরিই বা দেওয়া হল কী ভাবে, এই প্রশ্নের উত্তরে প্রধানের মন্তব্য, ‘‘ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হবে।” রায়না ১ বিডিও বলেন, “অভিযোগ জমা পড়ার পরে ওই তিনটি প্রকল্পের জায়গা পরিদর্শন করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।” |