খনিকর্মী আবাসন দখলমুক্ত করার জন্য জনস্বার্থ মামলাকারী আইনজীবীকে নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। সম্প্রতি আদালত বর্ধমানের পুলিশ সুপারকে আইনজীবী পার্থ ঘোষের নিরাপত্তার ব্যাপারে নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি, এই মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে পার্থবাবু নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ জানাতে গেলে সে ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে বলে জানানো হয়েছে।
২০০৯ সালের ডিসেম্বরে আইনজীবী পার্থ ঘোষ ইসিএলের বিরুদ্ধে টাকা নয়ছয়ের অভিযোগে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। তিনি দাবি করেন, ইসিএল বিআইএফআর-এর অধীন। এই অবস্থায় ৭০ শতাংশ কর্মী আবাসনই বহিরাগতদের দখলে চলে গিয়েছে। অন্য দিকে, আবাসন দিতে না-পেরে ইসিএল প্রতি মাসে কর্মীদের বহু টাকা আবাসন ভাতা দিচ্ছে। একই সঙ্গে বহিরাগতদের দখলে চলে যাওয়া কর্মী আবাসনগুলিতে জল ও বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং রক্ষণাবেক্ষণে কোটি-কোটি টাকা খরচ করছে।
পার্থবাবুর দাবি, অবিলম্বে বহিরাগতদের ইসিএলের আবাসন থেকে উচ্ছেদ করে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করতে হবে। ইসিএলের তরফে হাইকোর্টকে জানানো হয়, রাজনৈতিক মদতে পুষ্ট মাফিয়াদের দখলে থাকা কর্মী আবাসন তারা দখলমুক্ত করতে পারছে না। রাজ্য পুলিশের তরফেও সাহায্য করা হচ্ছে না বলে জানানো হয়। গত ৮ জুলাই ইসিএলকে সাহায্য করার জন্য রাজ্য পুলিশকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। তার পরে ইসিএলের আইনজীবী মলয় বসু জানিয়েছিলেন, আবাসন দখলমুক্ত করতে তাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশও কোনও রকম সাহায্য করছে না বলে তিনি ফের অভিযোগ করেন।
এর পরে গত ২ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি জয়নারায়ণ পাটিল ও অসীমকুমার রায়ের এজলাশ থেকে বর্ধমানের পুলিশ সুপারকে ওই জনস্বার্থ মামলাকারীর নিরাপত্তার ব্যাপারে নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি, আবাসন দখলমুক্ত করতে বাধা পাওয়ার যে দাবি ইসিএল করেছে, সে ব্যাপারে আইনজীবী পার্থবাবুকে একটি হলফনামা জমা দিতে বলেছে আদালত। পার্থবাবু জানান, আবাসন দখলমুক্ত করতে গিয়ে ইসিএল বিদ্যুৎ ও জলের সংযোগ ছিন্ন করছে। ফলে বৈধ আবাসিকরাও সমস্যায় পড়ছেন। এ ব্যাপারে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়ে তার পরে জল-বিদ্যুৎ ছিন্ন করা উচিত বলে পার্থবাবুর দাবি।
এ ছাড়াও, আদালতের তরফে ইসিএলকে যে সব মাফিয়া আবাসন দখল করে রয়েছে তাদের তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। সংস্থার যে সব আধিকারিক এর সঙ্গে যুক্ত বলে সন্দেহ তাদের তালিকাও তৈরি করতে বলা হয়েছে। পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর জানান, কোর্টের নির্দেশ এখনও হাতে পাননি। পেলে বিষয়টি আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেট দেখবে। ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় জানান, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করা হবে। |