প্লাবিত খানাকুলে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষ ।
এখনও পর্যন্ত খানাকুলের ২টি ব্লকে ডায়েরিয়ার প্রকোপ দেখা না দিলেও বিক্ষিপ্ত ভাবে জ্বর শুরু হয়েছে। বিশেষত, খানাকুল ২ ব্লকের ৬৮টি গ্রামের কেউ না কেউ জ্বরে আক্রান্ত। স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত গোটা আরামবাগ মহকুমায় জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩১৪৬ জন। এঁদের মধ্যে অধিকাংশই খানাকুলের মাড়োখানা এবং পলাশপাই ১ পঞ্চায়েত এলাকার। বুধবার পলাশপাই ১ পঞ্চায়েতের চকমাংরি গ্রামের হরিবাসর তলায় শিবির করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। খানাকুল ২ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অভিজিৎ কাঁড়ার বলেন, “মাড়োখানা এবং পলাশপাই ১ পঞ্চায়েতে যথাক্রমে ১২টি এবং ৫টি গ্রামে জ্বর হচ্ছে। ডায়েরিয়ার ঘটনাও ঘটছে কিছু কিছু। তবে আতঙ্কের পরিস্থিতি নেই। অজ্ঞাত কোনও জ্বর নয়।” খানাকুল ১ ব্লকেও বিক্ষিপ্ত ভাবে প্রায় ৭০০ জনের জ্বরের চিকিৎসা চলছে। খানাকুল ১ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সব্যসাচী সাহা এবং অভিজিৎবাবুর আশঙ্কা, পর্যাপ্ত ব্লিচিং পাউডার এবং হ্যালোজেন ট্যাবলেটের সরবরাহ না বাড়ালে অসুবিধায় পড়তে হবে।
খানাকুল ২ ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েত প্রধানদের অভিযোগ, গ্রামের মানুষের দাবি, ঘরে ঘরে ব্লিচিং ছড়ানো হোক। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতর ব্লিচিং দিতেই পারছে না। কোথাও জ্বর, পেটের সমস্যা দেখা দিলেই পঞ্চায়েতের কর্মী, প্রধানদের উপরে ক্ষোভ বাড়ছে। ধান্যগোড়ীর প্রধান নিমাই দলুই, জগৎপুরের স্বপন হাজরা, মাড়োখানার রূপালি মণ্ডল, নতিবপুর ১ এবং ২ পঞ্চায়েতের প্রধান জাকির হোসেন, অনিল মণ্ডল প্রমুখের অভিযোগ, বন্যার আগে থেকেই কয়েক দফা মিটিং করে বিভিন্ন দফতরের যে অ্যাকশন প্ল্যান হয়, তা কার্যকর হয় না। বছরের পর বছর ধরে জোড়াতালি দিয়ে বন্যা মোকাবিলার কাজ চলছে। খানাকুল ২ ব্লকের জন্য ২০০ বস্তা ব্লিচিং পাউডার, ৫ লক্ষ হ্যালোজেন ট্যাবলেট চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোথায় কী?
স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে দু’টি ব্লকেই মানুষের নানান ক্ষোভ। খানাকুল ১ ব্লকের অরুণ্ডা পঞ্চায়েতের ধারাশিমূল গ্রামের বিনয় মালিক বা কাবিলপুর গ্রামের তাপস রায়েদের বক্তব্য, মেডিক্যাল টিম ঘুরছে ঠিকই, কিন্তু প্রয়োজনীয় ওষুধ, সরঞ্জাম নেই। ডাক্তারবাবু, স্বাস্থ্যকর্মীরা বলছেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে। এ দিকে, ব্লিচিং চাইলে বলছে পঞ্চায়েতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। খানকুল ২ ব্লকের মাড়োখানা পঞ্চায়েতের বনাহজালি গ্রামের কিছু বাসিন্দার বক্তব্য, বন্যার জল নামা শুরু হতেই জ্বর, পেট খারাপ, চামড়ার রোগ হচ্ছে। প্রতি দিনই শুনছি, ঘরে ঘরে ওষুধ ছড়ালে রোগবালাই হবে না। কিন্তু সে সব ওষুধ-বিষুধ এখনও কিছু তো এল না!
অভিজিৎবাবু বলেন, “ইতিমধ্যেই ২৫১টি বাড়িকে জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। বাকি বাড়িগুলিকেও চেষ্টা হচ্ছে। ১৫টি মেডিক্যাল টিম গ্রামে গ্রামে ঘুরছে। ব্লকের ১ লক্ষ ৯০ হাজার মানুষের মধ্যে প্রায় ১ লক্ষ ৬০ হাজার মানুষই আক্ষরিক অর্থে বন্যাপীড়িত। প্রতিটি মানুষকে স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে যে জিনিসপত্র দরকার, তা অপ্রতুল। হ্যালোজেন ট্যাবলেট ৫ লক্ষ চাওয়া হলেও মজুত আছে মাত্র হাজার ৪০। ব্লিচিং পাউডার কম পক্ষে ৪৫ বস্তা চাওয়া হয়েছে। আছে ১৮ বস্তা। হুগলি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক উন্মেষ বসু জানিয়েছেন, ব্লিচিং পাউডার, হ্যালোডেন ট্যাবলেট-সহ প্রয়োজনীয় জিনিস দফায় দফায় পাঠানো হচ্ছে। মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগীর কথায়, “খানাকুলের দু’টি ব্লকে প্রায় ২৫টি মেডিক্যাল টিম হয়েছে। তাঁরা জোরকদমে কাজ করছেন। ব্লিচিং পাউডার, হ্যালোডেন, সাপে কাটার প্রতিষেধক, ওআরএস-সহ ১৭ দফা ওষুধ সরবরাহের ব্যাপারে জেলাশাসক হস্তক্ষেপ করেছেন।”
যে পানীয় জলের কলগুলি ক্রমে জলের তলা থেকে জেগে উঠছে, সেগুলি পরিস্রুত করার দাবি উঠেছে গ্রামবাসীদের তরফে। মহকুমাশাসক জানান, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর ও পঞ্চায়েত যৌথ ভাবে গ্রামগুলিতে ব্লিচিং ছড়ানো শুরু করেছে।
|
পাঁশকুড়া পুরসভার ওয়ার্ড কমিটির উদ্যোগে চক্ষু পরীক্ষা শিবির হল পাঁশকুড়ার হজরত দেওয়ান বালিকা বিদ্যালয়ে। গত ২১ ও ২২ অগস্ট দু’দিন ব্যাপী এই শিবিরের উদ্বোধন করেন রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। ছিলেন পাঁশকুড়ার বিধায়ক ওমর আলি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ রাসেদ আলি। পুরসভার কাউন্সিলর কল্যাণ রায় জানান, শিবিরে ৪২৯ জনের চক্ষু পরীক্ষা হয়। ১৩৮ জনকে চশমা দেওয়া হয়। |
বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ দিবসে বুধবার অন্ডাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে একটি মিছিল বের হয়। উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের গ্রাম প্রধান মিনতি হাজরা, অন্ডাল পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএম সভাপতি শুভাশিস মুখোপাধ্যায়, অন্ডালের বিডিও এবং সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের সিডিপিও। |