|
|
|
|
ইন্দাসে যুবকের অপমৃত্যু |
দুই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ বধূর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ইন্দাস |
এক যুবকের অপমৃত্যুর ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হল তৃণমূলের দুই স্থানীয় নেতার বিরুদ্ধে। ইন্দাস থানার মঙ্গলপুর গ্রামের ঘটনা। এই ঘটনাকে ঘিরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর চাপানউতোরও শুরু হয়েছে।
পুলিশ জানায়, মৃত যুবকের নাম ভাদু বাগদি (৩৫)। মঙ্গলবার রাতে মঙ্গলপুর গ্রামের বাসিন্দা তথা তৃণমূল নেতা অম্বুজাকর সামন্তের বাড়ির সামনে থেকে ভাদুর দেহ উদ্ধার করা হয়। বুধবার সকালে ইন্দাস থানায় অম্বুজাকরবাবু ও অন্য তৃণমূল নেতা মণিকাঞ্চন সু-র বিরুদ্ধে তাঁর স্বামীকে খুনের লিখিত অভিযোগ করেন ভাদুর স্ত্রী শোভা বাগদি। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার প্রণব কুমার বলেন, “ওই যুবককে খুনের অভিযোগ হয়েছে। তবে প্রাথমিক তদন্তে খুনের প্রমাণ মেলেনি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই বোঝা যাবে, কী ভাবে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। কেউ গ্রেফতার হয়নি।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেলে ইন্দাসের মোলখিরি গ্রামে একটি গাছে ভাদুর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান এলাকাবাসী। খবর পেয়ে বাড়ির লোকজন গিয়ে গাছ থেকে দেহ নামান। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ দেহটি নিয়ে গিয়ে অম্বুজাকরবাবুর বাড়ির সামনে ফেলে রাখা হয়। ওই তৃণমূল নেতার বাড়ি ঘিরে ক্ষতিপূরণের দাবিও জানান মৃতের পরিবারের সদস্যরা এবং স্থানীয় কিছু গ্রামবাসী। পরে পুলিশ গিয়ে রাত ৯টা নাগাদ মৃতদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পেশায় দিনমজুর ভাদুর দুই নাবালক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। স্ত্রী শোভাদেবীর অভিযোগ, “পাড়ায় মদ খেয়ে মাতলামি করার জন্য আমার স্বামীকে গত রবিবার প্রাণে মারার হুমকি দিয়েছিলেন অম্বুজাকরবাবু ও মণিকাঞ্চনবাবু।”
এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে ওই দুই তৃণমূল নেতাই দাবি করেছেন, “এলাকায় মদ খেয়ে গালিগালাজ করার জন্য ভাদুকে আমরা একটু বকাবকি করেছিলাম। কিন্তু প্রাণনাশের কোনও হুমকি দিইনি। আমরা যতদূর শুনেছি, মদ খেয়েই ভাদু আত্মহত্যা করেছে।” অম্বুজাকরবাবুর আরও অভিযোগ, “আমাদের উপরে চাপ সৃষ্টি করে মোটা টাকা আদায়ের জন্যই ভাদুর দেহ বাড়ির সামনে ফেলে নাটক করা হয়। কিন্তু আমরা টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তৃণমূলেরই দলের এক নতুন নেতা আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করিয়েছেন।” ইন্দাস ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক গৌতম বেরারও অভিযোগ, “ওই যুবক আত্মহত্যা করেছেন। অথচ সদ্য সিপিএম থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া এক নেতা নিজের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে আমাদের দলের স্থানীয় বুথ কমিটির সভাপতি অম্বুজাকর ও মণিকাঞ্চনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করিয়েছেন।”
দলীয় যে নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন গৌতমবাবুরা, তিনি কোনও ভাবেই এই ঘটনার সঙ্গে ‘জড়িত নন’ বলে দাবি ব্লক তৃণমূল সভাপতি রবিউল হোসেনের। তাঁর বক্তব্য, “ওই যুবক আত্মহত্যা করেছেন। তবে দিন কয়েক আগে অম্বুজাকর ও মণিকাঞ্চন তাঁকে হুমকি দিয়েছিল বলে খবর পেয়েছি। পুলিশ আইন অনুযায়ী দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক।” |
|
|
|
|
|