|
|
|
|
একাধিক বিয়ে করে প্রতারণা, ধৃত শিক্ষক |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ক্যানিং |
একাধিক বিয়ের অভিযোগে ক্যানিংয়ের প্রাথমিক স্কুলের এক শিক্ষককে গ্রেফতার করল পুলিশ। বুধবার দুপুরে ক্যানিংয়ের এসআই অফিসে আসছিলেন দেবব্রত মণ্ডল নামে ওই শিক্ষক। সেখানেই ভবানী মণ্ডল এবং কল্পনা মণ্ডল নামে দুই মহিলা তাঁর উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েন। দেবব্রতবাবু ধাক্কা দিয়ে কল্পনাদেবীকে ফেলে পালানোর চেষ্টা করেন। আশপাশের লোকজন তাঁকে ধরে ফেলেন। দুই মহিলাই নিজেকে দেবব্রতবাবুর স্ত্রী বলে দাবি করেন। দু’জনেরই দাবি, তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। সে কথা শুনেই দেবব্রতবাবুকে গণধোলাই দিতে শুরু করে অনেকে। চড়াও হন দুই মহিলাও। অফিসের লোকজন থানায় জানালে পুলিশ দেবব্রতবাবুকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
বিকেলে পুলিশের কাছে কল্পনাদেবী এবং ভবানীদেবী আলাদা ভাবে লিখিত অভিযোগ করেন দেবব্রতবাবুর বিরুদ্ধে। এর পরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানায়, কল্পনাদেবী দেবব্রতবাবুর সঙ্গে তাঁর বিয়ের রেজিস্ট্রির কাগজ দিয়েছেন। দু’জনের একসঙ্গে ছবিও রয়েছে। দেবব্রতবাবুর অবশ্য দাবি, তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। তিনি কল্পনাদেবীকে চেনেন না। ছবি নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। তবে স্বীকার করেন, “ভবানীকে বিয়ে করেছি। বিয়ে ওই এক বারই।” ভবানীদেবীর বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “বেশ কিছু দিন ধরেই ওঁর সঙ্গে থাকি না। ডিভোর্সের মামলা করেছি।”
|
|
দেবব্রতবাবুর উপর চড়াও দুই স্ত্রী। বাঁ দিকে কল্পনাদেবী এবং
ডান দিকে ভবানীদেবী। বুধবার সামসুল হুদার তোলা ছবি। |
ভবানীদেবী জানান, ১৯৯৮-এর গোড়ায় দেবব্রতবাবুর সঙ্গে আলাপ। সে বছর ১২ জুন তাঁরা কালীঘাট মন্দিরে বিয়ে করেন। তাঁদের ১১ বছরের মেয়েকে নিয়ে সোনারপুরে ভাড়াবাড়িতে থাকেন ভবানীদেবী। মানসিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “স্বামীকে ফিরে পেতে চাই। না-হলে মেয়েকে নিয়ে ভেসে যাব। স্বামী আমার সঞ্চয়ের সব টাকা নিয়ে নিয়েছে।”
কল্পনাদেবী গড়িয়ায় শ্রীনগরে ভাড়াবাড়িতে থাকেন। তিনি বলেন, “ও কোনও দিন আমাকে নিজের বাড়ি নিয়ে যায়নি। ২০০৩ সালে আমার প্রথম বিয়ে। স্বামী ছেড়ে চলে যাওয়ার পরে কলকাতার নার্সিংহোমে আয়ার কাজ নিই। ট্রেনে দেবব্রতর সঙ্গে আলাপ। ও-ই বিয়ের প্রস্তাব দেয়। ২০০৫-এ রেজিস্ট্রি। এই ক’বছরে ও প্রায় ৬৭ হাজার টাকা নিয়েছে।” কল্পনাদেবীর কথায়, “ওঁর মোবাইলে প্রায়ই শ্যামবাজার, ক্যানিং, মালদহ থেকে মহিলারা ফোন করত। কয়েক বার আমি ধরেছি। মহিলারা ওঁর স্ত্রী বলে পরিচয় দিত। এ ভাবেই ভবানীর সঙ্গে আলাপ।”
এ দিন দেবব্রতবাবু এসআই অফিসে আসছেন জানতে পেরে ভবানীদেবী আগেই সেখানে পৌঁছন। কল্পনাদেবীকে দেবব্রতবাবুর খোঁজ দেন এলাকার কয়েক জন। তিনি এসআই অফিসে পৌঁছনোর সময়ে দেখেন ভবানীদেবী দেবব্রতবাবুকে ধরে ফেলেছেন। পরে কল্পনাদেবীও চড়াও হন। |
|
|
|
|
|