প্রায় তিন সপ্তাহের মধ্যে দু’বার। ৫ অগস্টের পর ফের ২৪ অগস্ট। আমেরিকার পর জাপান। বুধবার মূল্যায়ন সংস্থা মুডিজ এক ধাপ রেটিং কমাল শিল্পোন্নত দুনিয়ার এই প্রথম সারির রাষ্ট্রেরও।
তবে স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরস আমেরিকার রেটিং এক ধাপ কমানোর ঢেউ যেমন বিশ্ব জুড়ে ধস নামিয়ে কাঁপিয়ে দিয়েছিল শেয়ার বাজারকে, সে তুলনায় জাপানের রেটিং ‘Aa2’ থেকে ‘Aa3’-তে নামার অভিঘাত ছিল অনেকটাই কম। এশীয় বাজার পড়ার ধাক্কায় এ দিন সেনসেক্স ২১৩.৪৯ পয়েন্ট পড়ে গেলেও ইউরোপ পুরোপুরি এড়িয়ে গিয়েছে তার প্রভাব। খোলার পরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ছিল মার্কিন বাজারের।
মুডিজ সূত্রের ইঙ্গিত, তাদের তরফে জাপানের রেটিং কমানোর কারণ ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতির ১০ লক্ষ কোটি ডলার সরকারি ঋণের বোঝা এবং গত পাঁচ বছর ধরে চলা রাজনৈতিক অস্থিরতা। যার জেরে ঘাটতি কমাতে সঠিক আর্থিক নীতি রূপায়ণেও অপারগ জাপান। এ ছাড়া ঋণের ভারে নুয়ে পড়া জাপানি অর্থনীতির উপর মার্চের ভয়াবহ ভূকম্প ও সুনামির আঘাত তাকে আর মাথা তুলতে দেয়নি বলেই মনে করছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা।
পর পর দু’দিন অবশ্য ভারতে শেয়ার সূচক বেড়েছিল ৩৫৭ পয়েন্ট। তবে এ দিন শুধু জাপানের রেটিং কমার জন্যই যে সূচকের পতন হয়েছে, তা মানতে নারাজ বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা মনে করেন, এই অনিশ্চিত বাজারে দু’দিন সূচক ওঠার ফলে যে মুনাফা হয়েছিল, তাই তুলে নিতে বুধবার শেয়ার বিক্রির বহর বেড়ে যায়।
বর্তমানে মুদ্রাস্ফীতি এবং সুদের হার বৃদ্ধিই বাজারের প্রধান আতঙ্ক। এর জেরে যে সব সংস্থার পণ্য বিপননের সঙ্গে ব্যাঙ্ক ঋণের সরাসরি যোগ রয়েছে, সেগুলির দরই বেশি পড়ছে। যেমন এ গাড়ি সংস্থা, ব্যাঙ্ক এবং নির্মাণ সংস্থার শেয়ার দর।
এ দিকে, এ দিন সোনার দামও পড়েছে। সোনার বাজার সূত্রের খবর, এ ক্ষেত্রেও মুনাফার টাকা তুলে নিতে সোনা বিক্রির হিড়িক পড়ে যাওয়াই এর কারণ। কলকাতার বাজারে ২৪ ক্যারাট সোনা প্রতি ১০ গ্রামে ৩৪০ টাকা কমে হয় ২৭,৯৮০। কমেছে রুপোও। এক কিলো রুপোর বাটের দাম ৮৫০ টাকা কমে হয় ৬৩,৭০০ টাকা।
তবে শেয়ারের ক্ষেত্রে যে অনিশ্চয়তা রয়েছে, সোনা বা রুপোর ক্ষেত্রে তা কম বলে মত বিশেষজ্ঞদের। তাঁরা মনে করেন, শেয়ারের দাম দ্রুত কমলেও কিন্তু সোনার দাম তত কমবে না। এ দিনের দাম কমাকে সংশোধন হিসাবেই আখ্যা দেন তাঁরা। তবে শেয়ার বাজার প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞ অজিত দে বলেন, “এটা ঠিক, সূচকের ওঠা-পড়া নির্ভর করে তার আওতায় থাকা কিছু গুরুত্বপূর্ণ শেয়ার দরের উপর। কিন্তু সূচকের ওঠা-পড়ার প্রভাব সরাসরি তার বাইরের শেয়ারের উপরও অনেকটাই এসে পড়ে।” |