|
|
|
|
জঙ্গলমহল |
প্রকল্পের টাকা কোথায়, প্রশ্ন সিপিএমের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
জঙ্গলমহলের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে একগুচ্ছ প্রকল্প ঘোষণা করেছেন, তার অর্থ সংস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলল সিপিএম। তাদের বক্তব্য, রাজ্য এখন ভোট-অন-অ্যাকাউন্টের ভিত্তিতে চলছে। সাময়িক ব্যয়বরাদ্দের ওই হিসেবে নতুন প্রকল্পের জন্য আর্থিক সংস্থান থাকে না। তা হলে পূর্ণাঙ্গ বাজেটের আগেই এত প্রকল্পের কথা মুখ্যমন্ত্রী কী ভাবে ঘোষণা করলেন, রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের প্রশ্ন সেখানেই।
গত বামফ্রন্ট সরকার জঙ্গলমহল তথা অনগ্রসর এলাকার জন্য যে সব কর্মসূচি হাতে নিয়েছিল, তার অনেক কিছুই নতুন মোড়কে মমতা ফের ঘোষণা করেছেন বলে সিপিএমের মত। তাদের বক্তব্য, জঙ্গলমহলে মাওবাদী সমস্যার জন্যই উন্নয়নের কাজ গত কয়েক বছরে এগোনো যায়নি। সংশ্লিষ্ট জেলা থেকে সিপিএম রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠানো রিপোর্টে বলা হয়েছে, মাওবাদীরা সেখানে ফের সংগঠিত হচ্ছে। যৌথ বাহিনী ‘নিষ্ক্রিয়’ থাকায় একাধিক স্কোয়াড এলাকায় ফিরে সক্রিয়তা বাড়াচ্ছে। পুলিশ সক্রিয় হতে গেলে তৃণমূলের নেতারাই নিজেদের ‘নিরাপত্তার স্বার্থে’ তাদের এগোতে দিচ্ছেন না। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণামাফিক প্রকল্পের কাজ আদৌ সম্ভব কি না, ঘোরতর সংশয়ী সিপিএম। বিরোধী দলনেতা তথা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্রের কথায়, “অনেকগুলি কর্মসূচিই বিগত সরকার হাতে নিয়েছিল। খুব বেশি অভিনবত্ব মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার মধ্যে এখনও দেখা যায়নি। কিন্তু যা-ই করতে চাওয়া হোক, আসল কথা হল শান্তি। সেটা কি এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে? তা হলে মুখ্যমন্ত্রীকেই জঙ্গলমহলে ‘ডামি’ নিয়ে যেতে হত না!” মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত প্রকল্পগুলির মধ্যে তিনটি নতুন কলেজ তৈরির কথা বাম সরকার ভাবেনি বলে সূর্যবাবু মেনে নিয়েছেন। তবে তাঁর প্রশ্ন, “বাজেটের আগে সরকারের নীতিগত পরিকল্পনার কথা জানানো যেতে পারে। বাজেটে অর্থ বরাদ্দ হওয়ার আগেই নির্দিষ্ট প্রকল্পের কথা ঘোষণা করে দেওয়া কী করে সম্ভব, কে জানে!”
জঙ্গলমহলের তিন জেলা থেকে ১০ হাজার যুবককে এনভিএফ, হোমগার্ড ও বিশেষ পুলিশ
কনস্টেবল হিসেবে নিয়োগের কথা মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন। ছত্তীশগঢ়ে যে ভাবে আদিবাসীদের নিয়ে সালওয়া জুড়ুম তৈরি এবং এসপিও (স্পেশ্যাল পুলিশ অফিসার) নিয়োগে বিতর্ক হয়েছে, এ রাজ্যেও নুতন সরকার সেই ‘মডেল’ অনুসরণ করতে চাইছে কি না, ইতিমধ্যেই সেই প্রশ্ন উঠছে। সূর্যবাবু বলেন, “বিশেষ পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ নিয়ে সরকারি নির্দেশ জারির আগে কিছু বলা
যাবে না। তবে সুপ্রিম কোর্ট তো ছত্তীশগঢ়ের এসপিও-কে নিরস্ত্র করার নির্দেশ দিয়েছে।”
মাওবাদী বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী ও কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্য বলেন, “জঙ্গলমহলে চেষ্টা করেও আমাদের সরকার উন্নয়নের কাজ করতে পারেনি মাওবাদীদের অশান্তির জন্যই।” এ বার মমতা মাওবাদীদের সঙ্গে ‘গোপন রাজনৈতিক সমঝোতা’র ভিত্তিতে কাজ হাসিল করতে পারেন কি না, দেখতে চাইছে সিপিএম। |
|
|
|
|
|