|
|
|
|
ফিরলেন ওড়িশায় ‘অপহৃত’ ইঞ্জিনিয়ার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • অশোকনগর |
ফিরে এলেন উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের ‘অপহৃত’ ইঞ্জিনিয়ার কমলকৃষ্ণ পোদ্দার। মঙ্গলবার দুপুরে অশোকনগর থানার পুলিশ স্থানীয় নিতাই দাসের বাড়ি থেকে কমলকৃষ্ণবাবুকে উদ্ধার করে নিজের বাড়িতে পৌঁছে দেন। তাঁর কাছে একটি ব্যাগে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা ছিল। তবে তাঁর কথাবার্তা ছিল অসংলগ্ন। অসুস্থ থাকায় কমলকৃষ্ণবাবুকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। প্রসঙ্গত। গত ২৯ জুন ওড়িশার খুর্দা জেলার রসুলগড় থেকে ‘অপহৃত’ হয়েছিলেন কমলকৃষ্ণবাবু।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, অশোকনগর থানার গুমার নিবেদিতা পল্লির বাসিন্দা কমলকৃষ্ণবাবু ওড়িশায় একটি সংস্থার হয়ে ঠিকাদরির কাজে গিয়েছিলেন। সপ্তাহান্তে বাড়ি আসতেন। গত ২৯ জুন তাঁর স্ত্রী লাকিদেবী ওড়িশার খুর্দা জেলার রসুলগড়ে গিয়েছিলেন স্বামীর কাছে। স্ত্রীকে ভাড়াবাড়িতে পৌঁছে দিয়ে কমলকৃষ্ণবাবু কাছের একটি হোটেলে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন। পথে যানজট থাকায় চালককে পরে হোটেলে গাড়ি নিয়ে যেতে বলে তিনি হোটেল থেকে কিছুটা দূরে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন। পরে গাড়ির চালক হোটেলে গিয়ে আর তাঁর খোঁজ পাননি। সেদিন গভীর রাত পর্যন্ত স্বামী বাড়ি না ফেরায় লাকিদেবী গুমার বাড়িতে দেওর রতনবাবুকে ফোন করে সব জানান। কমলকৃষ্ণবাবুর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের জন্য তাঁরা বার বার চেষ্টা করলেও তাঁর মোবাইলের সুইচ বন্ধ ছিল। পরদিন ওড়িশার মন্তেশ্বর থানায় একটি অপহরণের অভিযোগ দায়ের করতে গেলে থানা অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে বলে লাকিদেবী জানান। এর পরে একটি নিখোঁজ মামলা দায়ের হয়। এদিকে কমলকৃষ্ণবাবুর পরিবারের তরফে অশোকনগর থানায় একটি অপহরণের মামলা করা হয়। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতের নির্দেশ নিয়ে অপহরণের মামলাটি মন্তেশ্বর থানায় পাঠানোর ব্যবস্থা হয়।
পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে, হাবরার এক বস্ত্র ব্যবসায়ীর মাধ্যমে কমলকৃষ্ণবাবু ওড়িশায় এই কাজ পান। পরিবারের অভিযোগ, সম্প্রতি ওই ব্যবসায়ী কমলকৃষ্ণবাবুকে ফোনে টাকার জন্য হুমকিও দেন।
এতদিন কোথায় ছিলেন কমলকৃষ্ণবাবু?
পুলিশের বক্তব্য, কমলকৃষ্ণবাবু তাঁদের জানিয়েছেন, ঘটনার দিন হোটেলে যাওয়ার আগে গাড়ি থেকে নামার পরে তাঁর হঠাৎই মনে হয় মথুরা, কাশী, বৃন্দাবন, হরিদ্বার যাওয়ার কথা। সেই মতো তিনি ওই সব জায়গায় চলে যান। সেখানে গিয়ে মাথা ন্যাড়া করেন। কিছুদিন সেখানে থাকার পরে তাঁর মনে হয় এ বার বাড়ি ফেরা উচিত। সেইমতো তিনি হরিদ্বার থেকে ট্রেন উঠে পড়েন। কিন্তু বর্ধমান স্টেশনে নেমে পড়েন তিনি। সেখান থেকে বাসে করে কাটোয়ায় পৌঁছন। কাটোয়া থেকে রানাঘাট হয়ে আসেন গাধামারাতে। সেখান থেকে ভ্যানে করে পৌঁছন বেরাবেরিতে নিতাই দাসের বাড়িতে।” নিতাইবাবুই পুলিশকে খবর দেন। প্রাথমিক ভাবে অবশ্য পুলিশ কমলকৃষ্ণবাবুর এই বক্তব্যে সম্পূর্ণ নিশ্চিত হতে পারছে না। তাঁদের ধারণা তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ। সুস্থ হওয়ার পরে তাঁকে আদালতে তোলা হতে পারে বলে জেলা পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে।
|
|
|
|
|
|