|
|
|
|
কৃষ্ণসার আর চৌশিঙা পৌঁছল রমনাবাগানে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বর্ধমান |
কিছুদিন আগেই দু’টি হরিণের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে গিয়েছিল রমনাবাগানের একমাত্র কৃষ্ণসার হরিণীটি। শিংয়ের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়ে মারা যায় সে।
অরণ্য সপ্তাহ (১৪-২০জুন) শুরুর দিনেই দুই নতুন অতিথি পেয়ে সেই দুঃখ ভুলল বর্ধমান বনবিভাগের রমনাবাগান মিনি জু। কলকাতার সল্টেলেকের বন্যপ্রাণী রক্ষা কেন্দ্র থেকে বৃহস্পতিবারই রমনাবাগানে এসে পৌঁছেছে একটি কৃষ্ণসার হরিণী ও চৌশিঙা হরিণ। দু’টিরই বয়স বেশ কম। কৃষ্ণসারের বয়স সাত-আট মাস ও চৌশিঙাটির এক বছর। তাই রমনাবাগান কর্তৃপক্ষের ধারণা, সহজেই এরা বর্ধমানের আবহাওয়া মানিয়ে নিতে পারবে। উল্লেখ্য, বর্ধমানের এই অভয়ারণ্যে আগে কৃষ্ণসার মৃগ থাকলেও চৌশিঙা এই প্রথম এসেছে।
বর্ধমানের বনাধিকারিক গোপালচন্দ্র কাজুরী বলেন, “আপাতত এই দু’টি হরিণ-হরিণীকে রাখা হয়েছে অভয়ারণ্যের ওয়াচটাওয়ার সংলগ্ন একটি ঘেরা জায়গায়। তাদের একটানা ২০ থেকে ২৫ দিন পর্যবেক্ষণের পরেই দর্শকদের সামনে আনা হবে।” তাঁর কথায়, “একাধিক কৃষ্ণসার হরিণী চাওয়া হয়েছিল রাজ্য বনবিভাগের কাছে। চাওয়া হয় একজোড়া চৌশিঙ্গা হরিণ-হরিণীও। কিন্তু আপাতত যা মিলেছে তাতেই আমরা খুশি।” |
|
শিশু কৃষ্ণসার হরিণী। নিজস্ব চিত্র।
|
রাজ্য বনবিভাগের এক কর্তা এ দিন বলেন, “আমাদের হাতে এর চেয়ে বেশি হরিণ নেই। সল্টলেকের হরিণ পুনর্বাসন কেন্দ্রটি উঠে গিয়েছে কিছুদিন হল। তাই আমাদের পক্ষে এক সঙ্গে বেশি হরিণ রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তাই সামান্য বড় করেই চৌশিঙ্গা ও কৃষ্ণসার মৃগদের পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বর্ধমানে।” তাঁর দাবি, “চৌশিঙা প্রজাতির হরিণ গুজরাত, রাজস্থান প্রভৃতি রাজ্যে দেখা গেলেও দেশের পূর্বাঞ্চলে তা দুষ্প্রাপ্য।”
বর্ধমানের এই রমনাবাগানে চিতল হরিণের সংখ্যা বেশি। কয়েক বছর আগে রমনাবাগানের ‘ডিয়ার এনক্লোজার’ থেকে হরিণের একাংশকে পাঠানো হয়েছিল কাঁকসার দেউলে। গোপালবাবুর কথায়, “দেউলে আপাতত ৩০টির মত চিতল হরিণ রয়েছে। রমনাবাগানে রয়েছে ৪২টি। এরা সহজেই বংশবৃদ্ধি করতে পারে।”
বনবিভাগ সূত্রে বলা হয়েছে, বর্ধমানের ওই ডিয়ার এনক্লোজারের এক পাশে একটি খাঁচায় রাখা হয়েছে দু’টি পুরুষ কৃষ্ণসারকে। নতুন কৃষ্ণসার হরিণীর আসায় বংশধারা শুরু করা যাবে বলে আশা কর্তৃপক্ষের। যদিও বন বিভাগের কর্মীরা জানান, কিছু দিন আগে ওই দুই পুরুষের খাঁচায় একটি কৃষ্ণসার হরিণীও ছিল। বার বার দুই পুরুষের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে শিংয়ের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়ে মৃত্য হয় হরিণীর। তাই এই একটি হরিণী পেয়ে কৃষ্ণসার বংশধারা শুরুর আশা না করাই ভাল। সেটা সম্ভব হত এক জোড়া হরিণী পেলে।
বর্ধমানের সহ বনাধিকারিক প্রশান্তকুমার রায় বলেন, “আমাদের তরফে ওই হরিণীকে পুরষদের খাঁচায় ছেড়ে সতর্ক নজর রাখতে হবে। সম্ভব হলে আমরা তুলনায় কম বয়স্ক হরিণটির সঙ্গে তাকে একটি আালাদা খাঁঁচায় রাখতে পারি। কারণ এই কৃষ্ণসার অ্যান্টিলোপ প্রজাতির হরিণ। সেটি বিপন্ন প্রজাতির প্রাণীর তালিকাতেও পড়ে। বংশবৃদ্ধির তাগিদে আমরা এই দুর্লভ প্রজাতির হরিণীকে হারাতে পারি না।” |
|
|
|
|
|