রেলমন্ত্রী হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছেড়ে যাওয়া কুর্সিতে বসতে নারাজ নতুন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী।
আজ নিজের ঘরে সরকারি ভাবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে রেল কর্তাদের তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, দলনেত্রী যে চেয়ারে বসতেন সেই চেয়ারে বসা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। পরিবর্ত ব্যবস্থা হিসাবে তড়িঘড়ি দীনেশের জন্য নতুন চেয়ার আনা হয়। ঠিক হয়েছে, মমতার ব্যবহৃত চেয়ারটি রাখা থাকবে রেলমন্ত্রীর অ্যান্টি-চেম্বারেই।
গত মঙ্গলবার পূর্ণমন্ত্রী হিসাবে রেল মন্ত্রকের দায়িত্ব পেলেও আজ আজ প্রথম বার রেল মন্ত্রকে আসেন দীনেশ। নিজের কামরায় প্রবেশের আগে তিনি রেল কর্তাদের জানিয়ে দেন, মমতা যে চেয়ারে বসতেন, সেই চেয়ারে বসার যোগ্যতা তাঁর নেই। তাঁর জন্য বরং নতুন চেয়ার আনা হোক। নতুন চেয়ার জোগাড়ে যে সময় লাগে সেই সময়টুকু নিজের কামরার বাইরে অপেক্ষা করেন তিনি। পরে ঘনিষ্ঠ মহলে দীনেশ জানান, “ওই চেয়ারটি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চেয়ার। তাতে বসার যোগ্যতা আমার নেই। এটাই তৃণমূল কংগ্রেসের সংস্কৃতি। মানসিক ভাবে আমি ওই চেয়ারে বসতে পারব না। ওই চেয়ারটি অ্যান্টি-চেম্বারে রেখে দেওয়া হয়েছে। মমতা কখনও রেল ভবনে এলে ওই চেয়ারেই বসবেন।” দীনেশ সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, যাত্রী ভাড়া বৃদ্ধি থেকে পিপিপি মডেল সব ক্ষেত্রেই প্রাক্তন রেলমন্ত্রীর প্রদর্শিত পথই অনুসরণ করবেন তিনি। মমতার ধাঁচেই আজ দীনেশ জানিয়ে দেন, এখনই রেলে যাত্রী ভাড়া বাড়ানোর কোনও সম্ভাবনা নেই। |
আজ সাংবাদিক সম্মেলনে শুরুতেই রেলমন্ত্রী হিসাবে নিজের স্বল্প কয়েক দিনের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে দীনেশ স্বীকারোক্তি “রেলের বিষয়ে বিশেষ কিছুই জানি না।” তবে এ-ও জানান, “আমি বিমান চালক। তাই প্রযুক্তিগত বিষয়গুলি বুঝতে ভালবাসি। মমতা রেলমন্ত্রী থাকাকালীন রেল মন্ত্রকের অনেক কিছু বোঝার চেষ্টা করতাম। কিন্তু রেলের গোটা বিষয়টি এত বড় যে দশ বছরেও তা বোঝা সম্ভব নয়।” এ দিন রেল মন্ত্রকের দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি আগামী দিনে রেলের সাফল্যের জন্য দলগত সংহতির উপর জোর দেওয়ার কথা বসেছেন তিনি।
রেলমন্ত্রী হিসাবে ১১ দফা কর্মসূচির ঘোষণা করেন দীনেশ। মমতার ভিশন ২০২০ রূপায়ণ ছাড়া যাত্রী সুরক্ষা, যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের উপর আগামী দিনে সব থেকে বেশি জোর দেওয়া হবে বলেই জানান তিনি। এ ছাড়া দুর্ঘটনা এড়াতে সিগন্যালিং ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ, সংঘর্ষ প্রতিরোধক যন্ত্র খুব দ্রুত বসানো হবে বলে তাঁর দাবি। এ দিন নতুন রেলমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের সাক্ষী হতে এসেছিলেন দীনেশের স্ত্রী ও ছেলে। মন্ত্রীর ঘরে রেল কর্তাদের ভিড় দেখে আর ভিতরে ঢুকতে চাননি তাঁরা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁদের ঘরে নিয়ে যান। সাংবাদিক সম্মেলনেও একেবারে শেষ সারিতে বসে থাকতে দেখা যায় তাঁদের। |