কোচবিহার
বিমানই ওড়ে না, কিন্তু স্থায়ী কর্মী নিয়োগ
খনও-সখনও ডানা মেলে উড়ে যায় শামুকখোল পাখি। একটা বিমানও ওড়ে না কোচবিহারের রানওয়ে ছেড়ে।
আর সেই বিমানবন্দরেই স্থায়ী কর্মী নিয়োগের নির্দেশ দিল ভারতের বিমান নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ। ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ) জানিয়ে দিয়েছে, অবিলম্বে সমস্ত বিভাগে স্থায়ী কর্মী-অফিসার নিয়োগ না-করলে কোচবিহার বিমানবন্দরের লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়া হবে।
ফলে লাইসেন্স বাঁচাতে এ বার কোচবিহার বিমানবন্দরের জন্য স্থায়ী এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) অফিসার পাঠানো হচ্ছে। এ যাবত কলকাতা থেকে এটিসি অফিসারদের ক’মাসের জন্য কোচবিহারে ‘সফরে’ পাঠানো হত। সম্প্রতি স্থায়ী অফিসার নিয়োগের নোটিস জারি হয়েছে। দমকলের যে গাড়ি কোচবিহার বিমানবন্দরে রাখা আছে, তার চালক থাকলেও দমকলের অফিসার ছিলেন না। প্রয়োজনও ছিল না। কিন্তু লাইসেন্স বাতিল হওয়ার ভয়ে এখন পাঠানো হচ্ছে দমকলের স্থায়ী অফিসারও।
খাঁ খাঁ কোচবিহার বিমানবন্দর। হিমাংশুরঞ্জন দেব
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের রিজিওনাল এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর গৌতম মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সব মিলিয়ে জনা কুড়ি কর্মী-অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে কোচবিহারের জন্য। কিন্তু তাঁরা থাকবেন কোথায়?
গৌতমবাবু বলেন, “কোচবিহার বিমানবন্দর চত্বরেই কয়েকটা কোয়ার্টার্স রয়েছে। অনেকে তাতে থাকছেন। কেউ বাইরে বাড়ি ভাড়া করেছেন। আশা করা হচ্ছে, খুব তাড়াতাড়ি কোচবিহারে উড়ান চালু হবে।”
তবে বিমান ওঠানামা না-করলেও বিমানবন্দরে কাজ থেমে থাকে না। কোচবিহারে বিমান পরিবহণ সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যে কমিউনিকেশন অফিসারকে পাঠানো হয়েছে, সেই অরিন্দম চক্রবর্তী বলেন, “এখানে ট্রান্সমিটার, উচ্চ মানের ভয়েস রেকর্ডার, নন-ডিরেকশনাল বেকন রয়েছে। নিরাপত্তা ও যাত্রী-পরিষেবার জন্য আছে এক্স-রে মেশিন, সিসিটিভি, কনভেয়ার বেল্ট। এগুলো নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয়। তাই বিমান নেই বলে কাজও নেই, এমন কথা ঠিক নয়। এটিসি অফিসারও এখানে বসে মাথার উপর দিয়ে উড়ে যাওয়া বিমানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।”
কবে চালু হবে বিমান চলাচল?
বাম জমানায় ঠিক হয়েছিল, ডেকান চার্টার্স নামে এক সংস্থা কলকাতা-কোচবিহার রুটে ছোট বিমান চালাবে। যার দিনও স্থির হয়ে যায় ২০১০-এর ১ অগস্ট। প্রতিটি উড়ানের অর্ধেক আসন রাজ্য সরকার কিনে নেবে বলে সংস্থার সঙ্গে চুক্তিও হয়। কিন্তু বিমানবন্দরের লাইসেন্সের গেরোয় আটকে যায় সেই উড়ান। ডেকান শেষ পর্যন্ত কলকাতায় বিমান এনে জামশেদপুরে চালাতে শুরু করে। আবার কোচবিহার বিমানবন্দরের লাইসেন্স আসার আগেই, গত ফেব্রুয়ারিতে তারা ভাড়ায় আনা বিমানটি তুলে নেয়, কারণ ভাড়ার মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়েছিল। তবে তারা এখনও কোচবিহারে উড়ান চালাতে আগ্রহী।
অন্য দিকে আর এক সংস্থা ‘ট্রান্স-ভারত’ও সম্প্রতি কোচবিহারে উড়ানচালাতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এবং ডেকানের মতো তারাও অর্ধেক আসনের চুক্তি করতে চাইছে রাজ্যসরকারের সঙ্গে। সংস্থার কর্তা প্রদীপ বিশ্বাসের কথায়, “১৭ আসনের বিমান চালাতে গেলে সরকারকে অর্ধেক আসনের টাকা দিতেই হবে। সেই শর্তে রাজি হলে তবেই বিমান ভাড়া নেওয়া সম্ভব।” উত্তর-পূর্বের আর একটি বিমান সংস্থাও এ নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে প্রাথমিক কথা বলেছে। যদিও কিছু চূড়ান্ত হয়নি।
আর তা না-হওয়া পর্যন্ত শুধুমাত্র লাইসেন্স টিঁকিয়ে রাখতে কর্মী-অফিসারদের স্থায়ী ভাবে বহাল করতে হচ্ছে ‘বিমানহীন’ বিমানবন্দরে। তাঁদের বেতন ও বিমানবন্দর রক্ষণাবেক্ষণে মাসে খরচ হচ্ছে প্রায় সাত লক্ষ টাকা। অথচ রোজগার নেই কানাকড়িও!
First Page Uttarbanga Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.