|
|
|
|
‘আক্রান্ত’ সিপিএম নেতা |
মমতার সফরের আগেই গুলিযুদ্ধ মাওবাদী-বাহিনীর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • লালগড় |
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জঙ্গলমহল সফর শুরুর আগেই ‘মাওবাদী-সক্রিয়তা’র সাক্ষী রইল লালগড়। তুলে নিয়ে গিয়ে ‘মারধর’ করা হল এক সিপিএম নেতাকে, ‘হামলা’ হল আরও এক সিপিএম নেতা ও কর্মীর বাড়িতে। যৌথ বাহিনীর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ গুলির লড়াইও হয় মাওবাদীদের। তবে হতাহতের খবর নেই।
রবিবার রাতে লালগড়ের ধরমপুরের তলবামাল এলাকায় এই ঘটনার পর থেকে মুখে কুলুপ জেলা পুলিশের কর্তাদের। তবে ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক সি মুরুগান বলেন, “রবিবার রাতে তলবামালে বাহিনী ও মাওবাদীদের গুলির লড়াই হয়েছে বলে খবর পেয়েছি।” এ প্রসঙ্গে সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকারের বক্তব্য, “জঙ্গলমহলে মাওবাদী তৎপরতা বাড়ছে। নতুন সরকারের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। না হলে গণতন্ত্র বিপন্ন হবে।”
বিধানসভা ভোটের পরেই পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলমহল জুড়ে মাওবাদীদের শক্তি বেড়েছে বলে আগেই জানিয়েছিল গোয়েন্দারা। সম্প্রতি মাওবাদী সন্দেহে ধরপাকড়ও হয়। তবে মাওবাদী-বাহিনী গুলির লড়াই ভোটের পরে এই প্রথম। রবিবার রাত ৮ টা নাগাদ প্রথমে বাঘঘরা গ্রামে সিপিএমের স্থানীয় শাখা সম্পাদক খোকন মাহাতোর বাড়িতে ‘হানা’ দেয় জনা তিরিশের সশস্ত্র দলটি। দু’হাত পিছমোড়া করে বেঁধে খোকনবাবুকে তুলে নিয়ে যায় তারা। পরে ‘মারধর’ করে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সিপিএমের সশস্ত্র বাহিনীর অস্ত্র কোথায় রয়েছে, তা জানতেই খোকনবাবুকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল তারা।
এর পরেই ‘হামলা’ হয় বাঘঘরা থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে তলবামাল গ্রামে সিপিএমের ধরমপুর লোকাল কমিটির সদস্য সুব্রত মাহাতোর বাড়িতে। লোহার গ্রিলের দরজা ভাঙার চেষ্টা করে ‘হামলাকারীরা’। গ্রামেরই সিপিএম কর্মী বুলেন সর্দারের বাড়িতেও ‘চড়াও হয়’ সশস্ত্র লোকজন। বুলেনবাবু বাড়ির জানলা ভেঙে পালিয়ে বাঁচেন। রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ যৌথ বাহিনী তলবামালে পৌঁছয়। তখনও সুব্রতবাবুর বাড়ির দরজা ভাঙার চেষ্টা চলছে। কয়েকজন বাড়িটি ঘিরেও রেখেছিল। যৌথ বাহিনী ৫০ গজ দূর থেকে ‘সার্চ-লাইট’ ফেলতেই গুলি চালায় সশস্ত্র দলটি। যৌথ বাহিনী পাল্টা গুলি ছোড়ে। দু’তরফের মধ্যে আধ ঘণ্টায় প্রায় ৩০ রাউন্ড গুলি বিনিময় হয়। শেষ পর্যন্ত মাওবাদীরা ভুলাগাড়ার জঙ্গলের দিকে পালিয়ে যায় বলে যৌথ বাহিনী সূত্রের খবর।
সিপিএম নেতা সুব্রতবাবু লালগড় থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন, রবিবার রাতে মাওবাদীরাই বাড়িতে হামলা চালিয়েছিল। ‘মাওবাদ জিন্দাবাদ’ স্লোগানও দিচ্ছিল তারা। সুব্রতবাবুর কথায়, “সময় মতো বাহিনী চলে আসায় বেঁচে গেলাম।” তবে ঘটনার পরে সুব্রতবাবু গ্রাম ছেড়েছেন। মঙ্গলবার থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জঙ্গলমহল সফর শুরু। সোমবার রাতেই তাঁর মেদিনীপুরে যাওয়ার কথা। তার আগেই লালগড়ে এই ঘটনায়, বাড়তি সতর্কতা নিচ্ছে পুলিশ-প্রশাসন। এ দিকে, এ দিনই বেলপাহাড়ির শিমুলপাল অঞ্চলের বদাডি মোড়ে জনগণের কমিটির পোস্টার উদ্ধার হয়েছে। তাতে নতুন মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে লেখা, ‘আগে যৌথ বাহিনী প্রত্যাহার করুন, তারপরে জঙ্গলমহলে আসুন।’ |
|
|
|
|
|