|
|
|
|
হারের ভয়েই রান তাড়া করেননি অধিনায়ক |
সংবাদসংস্থা • রসো, ডমিনিকা |
জনপ্রিয় ক্রিকেট ওয়েবসাইটে যথেচ্ছ সমালোচনা হলে কী হবে, রান তাড়া না করা নিয়ে একেবারেই হতাশ নন ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। জেতার জন্য রান তাড়া করলে হেরে যাওয়ার ঝুঁকি থাকত এবং সে জন্যই ভারত রান তাড়া করেনি বলে দাবি করছেন ভারত অধিনায়ক। একই সঙ্গে জানাচ্ছেন, সিরিজ জিতেই তিনি খুশি, শেষ টেস্ট জিততে পারেননি বলে হা-হুতাশের কোনও কারণ নেই।
ধোনি বলছেন, “রান তাড়া থামিয়ে দেওয়া নিয়ে আমি একেবারেই হতাশ নই। রান তাড়া করা মানে সিরিজ জেতা নিয়েই একটা ঝুঁকি থাকত। তিনটে উইকেট পড়ার পরে আমাদের মনে হয়েছিল, আর ঝুঁকি নেওয়ার দরকার নেই। আমরা প্রথমে চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু দিনের শেষে সিরিজ জিতেই খুশি।” টেস্ট জিততে গেলে শেষ দিনে ৪৭ ওভারে করতে হত ১৮০। শেষ পর্যন্ত ৩২ ওভারে ভারত করে ৯৪-৩। প্রসঙ্গত, আজ পর্যন্ত কোনও ভারতীয় দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়ে দুটো টেস্ট জিততে পারেনি। আইসিসি-র ভবিষ্যৎ ক্রীড়াসূচি মনে রাখলে ২০১৬-এর আগে ভারতের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর নেই। তাই তার আগে ২-০ করার সম্ভাবনাও নেই। ০-২ হারতে হয়নি বলে স্বভাবতই খুশি ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক। ডারেন সামি বলছেন, “ভারত রান না করার সিদ্ধান্ত নিল দেখে আমরা বেশ অবাক হয়েছিলাম। শেষমেষ ড্র হওয়ায় আমরা খুশি।”
ধোনির পাশে আবার দাঁড়াচ্ছেন কোচ ডানকান ফ্লেচারও। শেষ ১৫ ওভারে ৮৬ রান দরকার ছিল ভারতের এবং ম্যাচ শেষে ফ্লেচার বলছেন, “এই উইকেটে সেট হওয়া শক্ত নয়। কিন্তু রান করা খুব কঠিন। যে পিচে ওভার প্রতি তিন করাই কঠিন, সেখানে ৫-৬ রান কী করে করা যেত?” আরও ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, “গোটা ম্যাচেই দেখা গিয়েছে, বোলিং খারাপ না হলে এই উইকেটে রান করা যাচ্ছে না। স্কোয়ার অব দ্য উইকেট প্রায় খেলাই যাচ্ছিল না। এটা বোলিং টিমের কাছে সুবিধে।”
ভারতীয় কোচ জানাচ্ছেন, রায়নার রান পেতে সমস্যা হচ্ছে দেখে ঝাঁপ ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় টিম। “আমরা সুরেশকে তো ব্যাটিং অর্ডারে আগে পাঠিয়েছিলাম। ওরও রান পেতে কষ্ট হচ্ছিল। একজন বাঁ হাতি যদি লেগস্পিনারের সামনে রান পেতে সমস্যায় পড়ে, রান তাড়া করার কোনও মানে হয় না। এই উইকেটে ওভার প্রতি চার রান করা খুব কঠিন। সুরেশ যদি সহজে ব্যাট করত, গোটা দুয়েক চার মারত, তা হলে আমরা চেষ্টা করতাম। কিন্তু দ্রাবিড় বা বিজয় দু’জনেই বলছিল, রান করতে কতটা অসুবিধে হচ্ছে। একজন ব্যাটসম্যান যদি ২২ ওভার ব্যাট করার পর ৪০ করেও রান তুলতে সমস্যায় পড়ে, তা হলে কী করে হবে ওভার প্রতি পাঁচ রান?”
ফ্লেচারের মতে, মুম্বই থেকে টিম যখন এখানে আসার বিমান ধরেছিল, একটা নেতিবাচক ভাবনা ছিল, কারণ বেশ কিছু নামী ক্রিকেটারকে এই সফরে পাওয়া যায়নি। বলছেন, “নিশ্চয়ই টেস্ট সিরিজ ২-০ বা ওয়ান ডে সিরিজ ৪-১ জিততে পারলে ভাল হত। কিন্তু এখানে এসে আমরা সব ধরনের ক্রিকেটে জিতেছি। টি-টোয়েন্টি, ওয়ান ডে, টেস্ট—সব কিছু। সে দিক দিয়ে দেখলে নিশ্চয়ই এটা একটা বড় ব্যাপার। তা ছাড়া বৃষ্টি না হলে বার্বেডোজে আমরাই জিততাম। গোটা সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ কখনও মাথাই তুলতে পারেনি।” তা হলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেষ চার উইকেট তুলতে পঞ্চম দিন এত সময় লাগল কেন? ফ্লেচারের ব্যাখ্যা এইরকম: “কখনও কোনও স্ট্র্যাটেজি কাজ করে, কখনও করে না। এটা হয় ঠিক, নয়তো ভুল। মাঝামাঝি কিছু নেই। অন্য একটা দিন হয়তো একই স্ট্র্যাটেজি কাজ করত। ধোনি অন্তত কিছু ঘটার অপেক্ষায় না থেকে একটা চেষ্টা করছিল।”
উইকেট নিয়ে যে ধন্দে ছিলেন, মেনে নিচ্ছেন ধোনি। বলছেন, “কীরকম আচরণ করবে, তা নিয়ে আমরা নিশ্চিত ছিলাম না। ২-২ কম্বিনেশনে যাব আর দেখা যাবে ফ্ল্যাট উইকেট, তখন সমস্যা হত। জানতাম, বল ঘুরলে রায়নার মতো কাউকে ব্যবহার করা যাবে। হরভজন বল ঘোরাচ্ছিল, বাউন্সও পাচ্ছিল। দামি উইকেটও পেয়েছে ও।”
সিরিজে ২৩ উইকেট নিয়ে ম্যান অব দ্য সিরিজ হওয়া ইশান্ত শর্মার জন্য ধোনির সার্টিফিকেট, “দারুণ বল করেছে ও। ভাল লাগছে দায়িত্ব নেওয়ার একটা ক্ষমতা এসেছে।”
আর ইশান্ত বলছেন, “এই প্রথম কোনও সিরিজে সবচেয়ে বেশি উইকেট পেলাম। উইকেট অনেকটা ভারতের মতো, কিন্তু এটা নিয়ে আমার বিশেষ কিছু বলার নেই, কারণ এটা হাতে নেই।” |
|
|
 |
|
|