|
|
|
|
স্বামী-স্ত্রীকে ছুঁড়ে-পিষে মারল হাতি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
এক দম্পতিকে ঘর থেকে টেনে বার করে মারল বুনো দাঁতাল। রবিবার রাতে শিলিগুড়ির অদূরে নকশালবাড়ির জমিদারগুড়ি গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। মৃতদের নাম মদন ছেত্রী (৫২) এবং পার্বতী দেবী (৩৮)। রাত প্রায় ১২টা নাগাদ দুটি হাতি ওই গ্রামে ঢোকে। গ্রামে বুনো হাতি ঢুকেছে টের পেয়ে ওই দম্পতি পালাচ্ছিলেন। সেই সময়ে দাঁতালটি ছুটে গিয়ে দু’জনকেই টেনে বাড়ির উঠোনে নিয়ে আসে। পার্বতী দেবীকে শুঁড়ে করে তুলে ছুড়ে ফেলে দেয়। মদন ছেত্রীর পা চিরে পা দিয়ে বুক পিষে দেয়। কার্শিয়াঙের ডিএফও ওয়াই টি এডেন বলেন, “এলাকায় কয়েকশো হাতি ঘোরাফেরা করছে। গভীর রাতে দুটি হাতি ওই গ্রামে ঢুকে পড়ে। মৃতের পরিবারকে নিয়ম মাফিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।” ওই দিন রাতেই গ্রামে ৩০-৩৫টি বুনো হাতি ঢোকে। খবর পেয়ে বনকর্মীরা হাতির পালকে তাড়িয়ে দেন। তার পরে রাতে বুনো দাঁতালের হামলার জেরে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। নিরাপত্তা ও ক্ষতিপূরণ দাবি করে বাসিন্দারা এ দিন সোমবার ৮টা থেকে আড়াই ঘণ্টা শিলিগুড়ি-নকশালবাড়ি সড়ক অবরোধ করে রাখেন। খবর পেয়ে পুলিশ, বন দফতরের কার্শিয়াং বিভাগের আধিকারিক, নকশালবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির কর্তারা গিয়ে বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করেন। পঞ্চায়েত সমিতির বন কর্মাধ্যক্ষ সুনীল ঘোষ বলেন, “চলতি বছরে ওই গ্রামে ৩টি ওয়াচ টাওয়ার তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে। ক্ষতিপূরণও দ্রুত দেওয়া হবে। সন্ধ্যার পরে এলিফ্যান্ট স্কোয়াড কর্মীরা ওই গ্রামে যাবেন বলে ঠিক হয়েছে।” এ দিন এলাকার বাসিন্দারা নকশালবাড়িতে ঘাঁটি গেড়ে থাকা বুনোর পালকে মহানন্দা অভয়ারণ্যে তাড়ানোর দাবি তোলেন। তাঁদের অভিযোগ, নেপালে মেচি নদীর চরের ফসলের লোভে গত জুন মাস থেকে এই এলাকায় শতাধিক বুনো হাতি ঘোরাফেরা করছে। সন্ধ্যা নামলেই কিছু হাতি নেপালে ঢুকছে। বাকিগুলি পানিঘাটা, নকশালাবড়ি, হাতিঘিষা এলাকায় ফসল নষ্ট করছে। খাবারের বাড়িঘর ভাঙছে। বাসিন্দাদের সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন নেতারাও। সিপিএমের হাতিঘিষা লোকাল কমিটির সম্পাদক মাধব সরকার বলেন, “বাসিন্দারা হাতির উপরে পাল্টা হামলা করেন না। কিন্তু সকলেরই ধৈর্য্যের সীমা রয়েছে। বন দফতরকে সেটা বুঝে ব্যবস্থা নিতে হবে।” দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রাজ্যের বনমন্ত্রী হিতেন বর্মনের হস্তক্ষেপ চাইছে নকশালবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতিও। বন কর্মাধ্যক্ষ বলেন, “মঙ্গলবার বন কমিটির বৈঠকে আলোচনা করে বনমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠানো হবে। কুনকি হাতির সাহায্য নিয়ে বুনো হাতির পাল মহানন্দায় সরানোর আর্জি জানানো হবে। পাশাপাশি, এলাকার এলিফ্যান্ট স্কোয়াডের কর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা দরকার।” বন দফতরের বক্তব্য, বুনো হাতির পাল সরাতে ঊর্ধ্বতন কর্তাদের কাছে কুনকি হাতি চাওয়া হয়েছে। কার্শিয়াং বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, “বর্ষার সময়ে জঙ্গলে কুনকি ছাড়া এগোনো সম্ভবও নয়। ঊর্ধ্বতন কর্তাদের সে কথা জানানো হয়েছে।” |
|
|
|
|
|