|
|
|
|
স্টেডিয়ামে ধুন্ধুমার, ক্ষমাপ্রার্থী মমতা |
কাউন্সেলিংয়ে লাঠি খেলেন পড়ুয়ারা |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
এসেছিলেন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য কাউন্সেলিংয়ে যোগ দিতে। সারা দিন সল্টলেক স্টেডিয়ামের কাউন্সেলিং কেন্দ্রে অপেক্ষা করার পরে ছাত্রছাত্রীদের অনেকেরই কপালে জুটল পুলিশের লাঠি। চলল ভাঙচুর। অবরোধ করা হল ই এম বাইপাস। জয়েন্ট এন্ট্রান্সের কাউন্সেলিং ঘিরে এই ধুন্ধুমার কাণ্ডে সোমবার রাতে ওই স্টেডিয়াম এবং আশপাশের এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে রাতেই ছাত্র-অভিভাবকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার ছিল এ বারের জয়েন্ট এন্ট্রান্সের কাউন্সেলিংয়ের প্রথম দিন। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মোট আসনের পাঁচ শতাংশ আসনে আর্থিক দিক থেকে অসমর্থ পড়ুয়াদের সুযোগ দেওয়ার কথা। সংখ্যাটা প্রায় ১৫০০। কিন্তু এ দিন হাজির হন প্রায় ৩০ হাজার প্রার্থী। সেন্ট্রাল সিলেকশন কমিটির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ দত্ত জানান, যে-সব পড়ুয়ার পরিবারের বার্ষিক আয় আড়াই লক্ষ টাকা পর্যন্ত, ফি ছাড়ের প্রকল্পে তাঁরাই আবেদন করতে পারেন। গ্রামের ছাত্রছাত্রীদের ক্ষেত্রে বিডিও এবং ওই স্তরের উপরের অফিসার আর কলকাতায় প্রথম শ্রেণির সরকারি অফিসারের কাছ থেকে এই আয় সংক্রান্ত শংসাপত্র নেওয়ার কথা। এ দিন অসংখ্য পড়ুয়া শংসাপত্র নিয়ে কাউন্সেলিংয়ে হাজির হন। রাত পর্যন্ত ১২ হাজার আবেদন পরীক্ষা করে দেখা যায়, ২২৫ জনের শংসাপত্র যথাযথ। তাঁদের কাউন্সেলিংয়ের সুযোগ দেওয়া হয়। যাঁদের কাছে যথাযথ শংসাপত্র ছিল না, তাঁদের জন্যই দেরি হয় বলে মন্তব্য করেন চেয়ারম্যান। |
|
জয়েন্ট এন্ট্রাসের কাউন্সেলিংয়ে ভাঙচুরের পরে।-অর্কপ্রভ ঘোষ |
তার পরেই গণ্ডগোল বাধে। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে করতে অসংখ্য ছাত্রছাত্রী এবং তাঁদের অভিভাবকদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায়। উত্তপ্ত আলোচনা থেকে শুরু হয় ভাঙচুর। বিক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা বাইপাস অবরোধ করেন। ব্যাপক যানজট হয়। পুলিশ এলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। র্যাফ নামানো হয়। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে এক সময় পুলিশ লাঠি চালায়।
সন্ধ্যায় জঙ্গলমহলে যাওয়ার পথে এই খবর পান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “এই হেনস্থার জন্য আমি ছাত্রছাত্রী ও তাঁদের অভিভাবকদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে এই ব্যাপারে আমি একমত যে, এই ঘটনার জন্য সেন্ট্রাল সিলেকশন কমিটিই দায়ী।” রাজ্যের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং উচ্চশিক্ষা সচিব সতীশ তিওয়ারির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী কথা বলেন। পরে তিনি উচ্চশিক্ষা সচিবকে নির্দেশ দেন, যে-সব ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবক রাত পর্যন্ত আটকে আছেন, সল্টলেক স্টেডিয়ামের কাছেই ইউথ হস্টেলে যেন তাঁদের থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়। এর জন্য ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্রের সঙ্গে কথা বলতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশকে সংযত থাকারও
নির্দেশ দেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, ফি ছাড়ের প্রকল্পে শারীরিক প্রতিবন্ধী এবং তফসিলি উপজাতির যে-সব প্রার্থী আবেদন করেছিলেন, এ দিন
তাঁদের কাউন্সেলিং হয়েছে। আজ, মঙ্গলবার ওই প্রকল্পে তফসিলি
জাতির প্রার্থীদের কাউন্সেলিং হবে। ফি ছাড়ের প্রকল্পে সাধারণ প্রার্থীদের কাউন্সেলিং হবে ১৯ জুলাই।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, আগামী বছর কাউন্সেলিং ব্যবস্থা বদলে ফেলা হবে। তার বদলে আগের মতো মেধা-তালিকা অনুযায়ী যে-পড়ুয়ার যে-ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়ার সুযোগ পাওয়ার কথা, সেখানেই তাঁর পড়ার ব্যবস্থা চালু করা হবে। শিক্ষামন্ত্রীও রাতে জানান,
আগামী বছর থেকে মেধা-তালিকা অনুসারে অনলাইনে কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা হবে। |
|
|
|
|
|