|
|
|
|
সফল হলেও দুশ্চিন্তা তাড়া করে সোহমকে |
নিজস্ব সংবাদদাতা ²বালুরঘাট |
পাঁচ বছর আগে বাবাকে হারিয়েছিলেন। সামান্য পেনশনের টাকায় ঘরে বাইরে লড়াই শুরু হয়েছিল মা সুপতপাদেবীর মতো তাঁরও। অবশেষে মার চোখের জল মুছিয়ে হাসি ফোটাল বালুরঘাট ললিতমোহন আদর্শ হাইস্কুলের সোহম দত্ত। উচ্চমাধ্যমিকে এ বার ৪৬৭ পেয়ে রাজ্য মেধা তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে ওই ছাত্র। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট হাইস্কুলের ছাত্র সঞ্চয়ন বাগচী পেয়েছেন ৪৬৮।
সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হলেও দুঃশ্চিন্তা তাড়া করছে সোহমকে। উচ্চ শিক্ষার পড়ার খরচ জোগাড় হবে কী ভাবে সেই চিন্তায় কপালে ভাঁজ পড়েছে সুতপা দেবীর। তিনি বলেন, “আর ২ বছর বাদে পুর পেনশন বন্ধ হয়ে, ফ্যামিলি পেনশন চালু হবে। তাতে পেনশনের অর্ধেক টাকা মিলবে। ছেলের পড়ার খরচ কী ভাবে জোগাড় হবে বুঝতে পারছি না।” এ বার জয়েন্টে বসে ভাল পরীক্ষা দিয়েছে সোহম। উচ্চ মাধ্যমিকে সোহম অঙ্কে ১০০, পদার্থবিদ্যায় ৯৮, রয়াসনে ৯৭, বাংলায়, ৮১ এবং ইংরেজিতে ৯১ পেয়েছেন।
বাবা প্রয়াত সঞ্জয়বাবু বালুরঘাট রথতলা এলাকার বাউল পরমেশ্বর হাই স্কুলের শিক্ষক এবং কবি ছিলেন। ২০০৬ সালে তিনি মারা যান। স্ত্রী সুতপাদেবী বাংলায় এমএ। মৃতের পোষ্যের চাকরির দাবিতে স্বামীর কর্মস্থলে সুযোগ পেতে লড়াই শুরু হয় তাঁর। নেতা, মন্ত্রী যাঁদেরই কাছে গিয়েছেন আশ্বাস মিলেছে। জেলা দফতর থেকে রাজ্যের শিক্ষা দফতরে বারবার অসহায় পরিস্থিতির কথা জানিয়ে দরবার করেছেন। কিন্তু স্বামীর পেনশন ছাড়া চাকরি জোটেনি সুতপাদেবীর। তা নিয়েই লড়াই করতে হয়েছে তাঁকে। মায়ের পাশাপাশি ছেলের লড়াই এবং সাফল্যে এলাকার বাসিন্দারা উচ্ছ্বসিত। খুশি স্কুলে শিক্ষকেরাও। এ দিন দুপুরে তাদের রথতলার বাড়িতে গিয়ে ফুল মিষ্টি দিয়ে সোহমকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আসেন পুরসভার চেয়ারপার্সন সুচেতা বিশ্বাস।
কারামন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তীও সোহমের সাফল্যের প্রশংসা করেন। আশার আলো দেখছেন সুতপাদেবী। প্রয়াত স্বামীর জায়গায় তাঁর কাজ মিলবে বলে মনে করছেন। তা হলে সোহমের পড়াশোনা চালিয়ে নিতে পারবেন বলে জানান। |
|
|
|
|
|