|
|
|
|
সময়সীমা বাড়িয়েও বিদ্যুৎ যায়নি গ্রামে |
অনুপরতন মোহান্ত ²বালুরঘাট |
রাজীব গাঁধী গ্রামীণ বিদ্যুদায়ন প্রকল্পে দক্ষিণ দিনাজপুরে কাজের সময়সীমা বছর বছর বাড়ানো হলেও এখনও জেলার ৮৭৫ গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি। এই প্রকল্পে দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০০৯ সালের মার্চে কাজ শুরু হয়। মোট ১৩৪৬টি গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা ধরে সময়সীমা দেওয়া হয় ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মাত্র ৪৭১টি গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে। এখনও বাকি ৮৭৫টি গ্রাম। জেলার জন্য কেন্দ্রের এই প্রকল্পে বরাদ্দ ১০১ কোটি টাকা।
ইতিমধ্যে প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয়েছে। ১৮৫টি মৌজায় ওই কাজ শুরু হয়েছিল। ওই কাজ শেষ হয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, দ্বিতীয় পর্যায়ে ১০০ বেশি জনসংখ্যা রয়েছে এমন ১৩৪৬টি গ্রামে কাজ শুরু হয়। কিন্তু ঠিকাদার সংস্থা সময়মত বিদ্যুতের খুঁটি সরবরাহ করতে না পারায় প্রকল্পের কাজ ব্যাহত হয় বলে অভিযোগ। জেলার গ্রামীণ বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার উত্তম জানা বলেন, “১৩৪৬টি গ্রামে মোট ৫৭,৩৫৫টি খুঁটি প্রয়োজন। সম্প্রতি সমস্ত খুঁটি জেলায় চলে এসেছে। ২৩০টি গ্রামে খুঁটি বসিয়ে তার লাগানোর কাজ শেষ হয়েছে। বাকি ৬৪৫টি গ্রামে দ্রুত কাজ শুরু হবে।” সভাধিপতি মাগদালিনা মুর্মু শুধু বলেন, “দ্রুত প্রকল্প রূপায়ণের জন্য বলা হয়েছে। সেপ্টেম্বরে কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।”
এপ্রিল মাসে বিধানসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পর খুঁটি বসানো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলি থেকে আপত্তি ওঠায় গোটা এপ্রিল মাস প্রকল্পের কাজ ব্যাহত হয়। সম্প্রতি বালুরঘাটে জেলাশাসকের সঙ্গে জেলা পরিষদ এবং বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির আধিকারিকদের বৈঠকে অগস্টের মধ্যে বাকি ৬৪৫টি গ্রামে খুঁটি বসিয়ে বিদ্যুৎ দেওয়ার পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। সেপ্টেম্বরের মধ্যে গ্রামগুলিতে বিদ্যুতের আলো পৌঁছানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। প্রকল্প শেষের সময় আরেকবার এক বছর বাড়ানো হল। প্রকল্পটি ঢিমেতালে চলার জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছে কংগ্রেস ও তৃণমূল। তপন, হরিরামপুর, কুশমণ্ডি, বংশীহারি ও কুমারগঞ্জ ব্লকের নির্ধারিত বিপিএল ভুক্ত গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকায় খুঁটি বসানো হলেও সংযোগ দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। তপন ব্লকের মালঞ্চা, আউটিনা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ওই অবস্থা। তপন পঞ্চায়েত সমিতির আরএসপি-র সহ সভাপতি আনিসুর রহমানের অভিযোগ, “কবে গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছবে তা কেউ বলতে পারছে না।”
জেলা পরিষদের বিরোধী তৃণমূল সদস্য অখিল বর্মন বলেন, “বিদ্যুৎ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ, সিপিএমের বাজন টুডু চাকরি পেয়ে ২০০৯ সালে পদ থেকে ইস্তফা দেন। সভাধিপতি ওই দায়িত্বে আছেন। ঠিক সময়ে কেন্দ্রীয় প্রকল্প মিললেও কাজের গতি নেই। বহুবার বিষয়টি জানতে চাইলেও সদুত্তর মেলেনি।” জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায়ের অভিযোগ, “ভোটের আগে শাসক দলের নেতারা বাড়ি বাড়ি বিদ্যুৎ পৌঁছানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রচার করেন। অথচ তাঁরা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে কাজের ক্ষেত্রে। আমরা আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছি।” এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪৫ হাজার বিপিএল পরিবার প্রকল্পের সুবিধা পাননি বলে জেলা পরিষদ সূত্রের খবর। |
|
|
|
|
|