পুরসভা-হাসপাতাল দ্বন্দ্ব
মেডিক্যাল চত্বরে জঞ্জালের স্তূপ
ছরভরই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। রবিবার পরিবেশ দিবসেও ছবিটা এতটুকু বদলাল না।
মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রাবাসের পাশেই আবর্জনার স্তূপ। ঘুরে বেড়াচ্ছে কুকুর। কাকের দলও আসর জমিয়েছে। আবর্জনা নার্সিং হস্টেলের পাশেও। অদূরেই হাসপাতালের পুরনো ভবন। কিন্তু হুঁশ নেই কর্তৃপক্ষের। জেলার মানুষ সুস্থ পরিবেশে থেকে স্বাস্থ্য পরিষেবা পেতে যেখানে আসেন, সেখানেই এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ!
কেন এই পরিস্থিতি? জানা গিয়েছে, আবর্জনা পরিষ্কার করা নিয়ে হাসপাতালের সঙ্গে মেদিনীপুর পুর-কর্তৃপক্ষের চাপানউতোর শুরু হয়েছে। চিঠি দেওয়া-নেওয়াও হয়েছে। কিন্তু সমস্যা মেটেনি। হাসপাতালের আবর্জনা সাফাইয়ের জন্য অর্থ চেয়েছে পুরসভা। তাদের বক্তব্য, পুরসভাকে বছরে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিতে হবে। তা হলে পুরকর্মীরা সময় মতো আবর্জনা সাফাই করবেন। মেদিনীপুরের পুরপ্রধান পারিষদ (জঞ্জাল) সুনন্দা খান বলেন, “কর্তৃপক্ষের অনুরোধে এত দিন হাসপাতাল চত্বরের আবর্জনা পরিষ্কার করা হত। এ বার পুরসভার প্রস্তাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাড়াই দেননি। এ ভাবে তো বেশি দিন চলতে পারে না। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান জরুরি।” হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য পরিবেশ নিয়ে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। সুপার রামনারায়ণ মাইতি বলেন, “নিয়মিতই আবর্জনা সাফাই হয়। প্রয়োজনে নজরদারি আরও বাড়ানো হবে। তবে নির্দিষ্ট জায়গায় জমে থাকা আবর্জনা পুর-কর্মীরাই সাফাই করেন। ক’দিন ধরে সাফাই বন্ধ রয়েছে। এ নিয়ে ফের পুর-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।” পাশাপাশি তিনি জানান, হাসপাতালে আরও একটি নতুন ভ্যাট তৈরি হচ্ছে। এর ফলে হাসপাতাল চত্বর আরও পরিষ্কার থাকবে। পুরসভার প্রস্তাব নিয়ে অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি সুপার। তাঁর কথায়, “বিষয়টি খতিয়ে দেখেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”
প্রায় সাত বছর আগে মেদিনীপুর জেলা হাসপাতাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে উন্নীত হয়েছে। অভিযোগ, খাতায়-কলমে মেডিক্যাল কলেজ হলেও পরিষেবার মান রয়ে গিয়েছে আগের মতোই। এখনও রোগীরা অনেক ক্ষেত্রেই প্রয়োজনীয় পরিষেবাটুকু পান না। হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকার পরিবেশ নিয়েও অভিযোগ রয়েছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের পাশেই একটি পুকুর রয়েছে। আগে এই পুকুরে রোগীর পরিজনেরা স্নান করতেন, কাপড়-জামা কাচতেন। সে সব অনেক দিন হল বন্ধ হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নির্দেশ জারি করে জানিয়ে দিয়েছেন, এই পুকুরের জলে স্নান করা বা কাপড়-জামা কাচা করা যাবে না। কিন্তু নির্দেশ জারি করেই দায় সেরেছেন কর্তৃপক্ষ। পুকুর পরিষ্কার রাখার ব্যাপারে তাঁরা উদ্যোগী নন বলেই অভিযোগ। ফলে, পুকুরের চারপাশে জঞ্জাল জমেছে। জল ভর্তি সবুজ পানা। পুকুর পাড়ের বসার জায়গাও আগাছায় ঢেকেছে। গোটা চত্বরে দুর্গন্ধ। বিভিন্ন ওয়ার্ড সংলগ্ন এলাকাও নিয়মিত সাফাই হয়ে না বলে অভিযোগ। ক’মাস আগেই হাসপাতালের নতুন ভবন গড়ে উঠেছে। সেখানে বহির্বিভাগ স্থানান্তরিত হয়েছে। কিন্তু এই ভবনের আশপাশেও প্রায়ই আবর্জনা জমে থাকে বলে অভিযোগ রোগীর পরিজনদের।
আগে হাসপাতাল চত্বরের পুকুর সংস্কার হত। আবর্জনা সাফাই হত। কিন্তু এখন আর সংস্কার হয় না। অথচ কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, হাসপাতালের মধ্যে থাকা পুকুর ঘিরেই গোটা চত্বরের পরিবেশ ঢেলে সাজা হবে। চারপাশে ভেপার ল্যাম্প লাগানো হবে। মাঝে থাকবে ফোয়ারা। কিন্তু গোটা বিষয়টি ভাবনার স্তরেই রয়ে গিয়েছে। এরই মধ্যে ক’মাস ধরে আবর্জনা সাফাই নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পুরসভার চাপানউতোর চলছে। মাঝে এমসিআই-এর প্রতিনিধি দল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনে এসেছিল। সেই সময় জমে থাকা আবর্জনা সাফাইয়ের জন্য পুর-কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়। সেই অনুরোধে সাড়া দিয়ে পুর-কর্মীরা আবর্জনা সাফাইও করেন। কিন্তু চাপানউতোর শেষ হয়নি। হাসপাতালের এক আধিকারিকের কথায়, “এই পরিস্থিতিতে একমাত্র আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান সম্ভব।”
Previous Story Swasth Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.