|
|
|
|
উন্নয়নই লক্ষ্য, লালগড়ে এসে বোঝালেন মন্ত্রী |
কিংশুক গুপ্ত ²লালগড় |
মন্ত্রী হয়েই জানিয়েছিলেন পশ্চিমাঞ্চলের পাঁচ জেলায় ছড়ানো ৭৪টি ব্লকের অন্তত কয়েকটিতে সরেজমিনে পরিদর্শনে যেতে চান। গন্তব্যের তালিকায় লালগড় থাকছে বলেও জানিয়েছিলেন। সেই মতো রবিবার লালগড়ে এলেন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতরের নতুন মন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা। তবে সে ভাবে এলাকা পরিদর্শন নয়, বিডিও-সহ ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে উন্নয়ন-সংক্রান্ত বৈঠকেই এ দিন ব্যস্ত থাকলেন মন্ত্রী।
গত বুধবার ঝাড়গ্রাম ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে বাঁধগোড়ায় গিয়েছিলেন সুকুমারবাবু। এলাকার প্রয়োজনীয় উন্নয়নের নির্দেশও দিয়েছিলেন। এ দিন দুপুরে লালগড় ব্লক অফিসে দু’দফায় ঘন্টা দেড়েক বৈঠক করেন তিনি। বিডিও মানস হালদার, যুগ্ম বিডিও রাজা আদক-সহ ব্লকের বিভিন্ন আধিকারিকদের পাশাপাশি বিরোধী জোট পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহ-সভাপতি, কর্মাধ্যক্ষ ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, ছুটির দিন হওয়া সত্ত্বেও বৈঠক করার জন্য মন্ত্রী নিজেই উদ্যোগী হন। বৈঠকে সিপিএমের কোনও জনপ্রতিনিধি ছিলেন না। তবে ছিলেন বিরোধী জোটের পঞ্চায়েত সমিতির বেশিরভাগ সদস্য, যাঁরা গত আড়াই বছরে বেশিরভাগ উন্নয়ন বৈঠকে অনুপস্থিত থেকেছেন। |
|
নেতাইয়ে নিহত ধীরেন সেনের স্ত্রী তরুলতাদেবীর শুভেচ্ছা।- দেবরাজ ঘোষ। |
গত আড়াই বছরে অশান্তির জেরে লালগড়ের উন্নয়ন বারবার বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। দিনের পর দিন বন্ধ থেকেছে একাধিক পঞ্চায়েত কার্যালয়। একটা সময় মেদিনীপুর জেলা-সদর থেকে ব্লকের কাজকর্ম পরিচালনা করতে হয়েছে। এখন পরিস্থিতি পাল্টেছে। বিরোধী সিপিএমের দখলে থাকা ধরমপুর, বৈতা, দহিজুড়ি ও বেলাটিকরির মতো গ্রাম পঞ্চায়েতেও স্বাভাবিক কাজকর্ম হচ্ছে বলে প্রশাসনের দাবি। স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই সব পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধানেরা ইস্তফা দিলেও তা সরকারি ভাবে গৃহীত হয়নি। তাঁরা মাঝেমধ্যে পঞ্চায়েত অফিসে এসে নথিপত্রে সই করে যাচ্ছেন। নিয়মিত খোলা হচ্ছে পঞ্চায়েত অফিসও।
এ দিন বৈঠকের শুরুতেই সুকুমারবাবু জানিয়ে দেন, উন্নয়ন দিয়ে মানুষের ক্ষোভ নিরসন করতে হবে। পানীয় জল-সহ উন্নয়নের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশাসনের তরফে তাঁর দফতরে প্ল্যান-এস্টিমেট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে মন্ত্রী জানান, যত শীঘ্র সম্ভব সব প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হবে। ব্লক অফিসে কর্মী অপ্রতুলতার প্রসঙ্গ বৈঠকে ওঠে। মন্ত্রীকে জানানো হয়, সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারের মতো গুরুত্বপূর্ণ ৫টি পদের মধ্যে চারটি শূন্য। বৈঠক শেষে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি উন্নয়নের কাজ জরুরি ভিত্তিতে শুরুর আশ্বাস দেন সুকুমারবাবু। প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে, লালগড়ের দুর্গম এলাকায় ৪টি রাস্তা তৈরি, লালগড়-রামগড় রাস্তা সংস্কার, জলাশয় সংস্কার করে কৃষিসেচের ব্যবস্থা করা। লালগড়ে বিদ্যুতের সাব-স্টেশন তৈরির ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দেন মন্ত্রী। প্রশাসনের সব মহলের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করে উন্নয়নের নির্দেশ দেন তিনি। বৈঠকের শেষ দিকে এসে পৌঁছন শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো। শ্রীকান্তবাবু প্রশাসনিক আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিদের উন্নয়ন করার ক্ষেত্রে আন্তরিক হওয়ার পরামর্শ দেন। পরে সুকুমারবাবু বলেন, “এরপর প্রশাসনকে না জানিয়ে লালগড়ে এলাকা-পরিদর্শনে আসব। মানুষের কাছ থেকে তাঁদের চাহিদার কথা শুনব।”
এ দিন প্রশাসনিক বৈঠকের আগে লালগড়ের নবকুঞ্জ মাঠে বিনপুর ১ (লালগড়) ব্লক তৃণমূলের পক্ষ থেকে সুকুমারবাবুকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। মন্ত্রী তথা ঝাড়গ্রামের বিধায়ক সুকুমারবাবুর হাতে উন্নয়নের দাবি সংবলিত সবুজ ফাইল তুলে দেন লালগড় ব্লক তৃণমূল সভাপতি বনবিহারী রায়। সংবর্ধনা-সভায় সুকুমারবাবু বলেন, “এলাকার মানুষ আমাকে জিতিয়েছেন। মানুষের জন্য উন্নয়ন করেই কৃতজ্ঞতা জানাব।” |
|
|
|
|
|