|
|
|
|
হাড়গোড় নিয়ে হয়নি রহস্যভেদ |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
সিপিএম নেতা সুশান্ত ঘোষের আদি বাড়ির কাছের গ্রামে খুলি, হাড়গোড় উদ্ধারের ঘটনায় তদন্ত শুরু করল পুলিশ। গড়বেতা-৩ ব্লকের উড়াসাই পঞ্চায়েতের বেনাচাপড়ায় আদি বাড়ি সুশান্তবাবুর। তার কিলোমিটার খানেক দূরের মল্লিকডাঙা গ্রামের দাসেরবাঁধে শনিবার উদ্ধার হয় হাড়গোড়।
রবিবার ওই জায়গা পরিদর্শনে আসেন আইজি (পশ্চিমাঞ্চল) জুলফিকার হাসান, ডিআইজি (মেদিনীপুর রেঞ্জ) বিনীত গোয়েল, পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠি। পাশাপাশি সিআইডি-র স্পেশ্যাল সুপারিন্টেনডেন্ট অশোক প্রসাদের নেতৃত্বে একটি দলও আসে। এলাকা ঘুরে দেখার পাশাপাশি পুলিশ-কর্তারা গ্রামবাসীদের সঙ্গেও কথা বলেন। পুলিশ সুপার জানান, তদন্ত জেলা পুলিশই করবে। এক সঙ্গে অনেক হাড়গোড় মেলায় সিআইডি-কে ‘বিশেষ পরিদর্শন’-এ ডাকা হয়েছিল। |
|
দাসেরবাঁধে তদন্তে সিআইডি দল। রবিবার। |
শনিবার খুলি, হাড়গোড়ের সঙ্গে কিছু পোশাকও উদ্ধার হয়েছিল। ওই পোশাকগুলির মধ্যে একটি জামা ও পাজামা দেখে কেশপুরের খেতুয়া গ্রামের এক বাসিন্দাতাঁর বাবার দেহাবশেষ বলে দাবি করেছিলেন। তৃণমূল শিবিরেরও দাবি, কেশপুরে সিপিএমের সন্ত্রাসের ‘শিকার’ লোকজনের দেহ বেনাচাপড়ার আশপাশের জঙ্গলে পোঁতা আছে বলে তাদের সন্দেহ। পুলিশ সুপার অবশ্য জানিয়েছেন, ডিএনএ পরীক্ষা না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাচ্ছে না।
বেনাচাপড়ার আশপাশের এলাকায় আরও হাড়গোড়ের সন্ধানে গ্রামবাসীরা এ দিনও মাটি খোঁড়াখুঁড়ি চালান। তবে, এ দিন আর কোথাও সে রকম কিছু মেলেনি। সন্ধ্যার দিকে আলমপুর গ্রামের একটি খালপাড় থেকে ১৮টি মাস্কেট এবং ৫টা অন্য আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়। এলাকার জঙ্গলে তল্লাশি চালাতে এ দিন পুলিশের কাছে দাবি জানান স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব এবং গ্রামবাসীরা। পুলিশ সুপার তল্লাশির আশ্বাস দিয়েছেন। শনিবার যে সিপিএম নেতার তথ্যের উপর ভিত্তি করে দাসেরবাঁধে হাড়গোড় উদ্ধার হয় বলে এলাকাবাসীর দাবি, সেই মদন সাঁতরা রবিবার সকাল থেকেই বেপাত্তা। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, মদন সাঁতরা সিপিএমের ‘সশস্ত্র শিবির’ দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন। বেনাচাপড়া গ্রামে সুশান্তবাবুর আদি বাড়িতে গিয়ে এ দিন দেখা গেল, বৃদ্ধ মা মৃন্ময়ী ঘোষ, খুড়তুতো ভাই নিমাই ঘোষ, ভাইপো-সহ অন্যরা রয়েছেন। তবে দীর্ঘ দিন নানা ভাবে ‘দাপট’ দেখানোর অভিযোগ রয়েছে যাঁর বিরুদ্ধে, সুশান্তবাবুর সেই নিজের ভাই প্রশান্ত ঘোষ বাড়িতে নেই। যাঁরা রয়েছেন, তাঁরাও কিছুটা আতঙ্কের মধ্যেই আছেন। মৃন্ময়ী দেবী বলেন, “ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকেই গ্রামের মানুষ আমাদের সঙ্গে কথা বলা কমিয়ে দিয়েছে। শনিবার কী সব হাড়গোড় পাওয়া গিয়েছে শুনছি। তার পর থেকে অবস্থা আরও যেন থম মেরে গিয়েছে। সব সুশান্তকে জানিয়েছি।” ফোনে সুশান্তবাবুর বক্তব্য, “এত দিন অস্ত্র উদ্ধারের নাটক চলছিল। এ বার হাড়গোড় নিয়ে সে-সব শুরু হয়েছে। তদন্ত করুক না পুলিশ।” |
|
সুশান্ত ঘোষের মা মৃন্ময়ী দেবী। |
রবিবার বাঁকুড়ার ইন্দাসের জয়নগর ও বাগমারি এবং পাত্রসায়রের ইদিলচক থেকে মোট তিনটি একনলা বন্দুক, দু’টি পিস্তল, দুটি হাত কামান, তিনটি কার্তুজ এবং বেশ কিছু বোমা উদ্ধার হয়। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি দেশপ্রাণ ব্লকের বসন্তিয়া মক্তবে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় সিপিএম-তৃণমূলে। যথেচ্ছ বোমা পড়ে। তৃণমূলের অভিযোগ, তাদের সমর্থক এক ব্যবসায়ীর উপরে হামলা চালায় সিপিএম। তাতে এক মহিলা-সহ ৫ সমর্থক আহত হন। তৃণমূলের ৩ সমর্থক অপহৃত হয়েছেন বলেও অভিযোগ। সিপিএমের পাল্টা দাবি, তৃণমূলের দুষ্কৃতীরাই গোলমাল পাকিয়েছে। কিছু বাড়িঘরেও ভাঙচুর চালিয়েছে ওরা।
|
ছবি: রামপ্রসাদ সাউ |
|
|
|
|
|