মামলার পর মামলা। এবং স্বামী ও স্ত্রীর সেই সব মামলা পরস্পরের বিরুদ্ধেই। বিচারক-স্বামী সঞ্জীব দত্তের বিরুদ্ধে আগেই বধূ-নির্যাতনের মামলা করেছিলেন ত্রিবর্ণা দত্ত। তারই মধ্যে স্বামী বিবাহ-বিচ্ছেদের মামলা ঠুকে দিয়েছেন স্ত্রীর বিরুদ্ধে। এই অবস্থায় স্ত্রী এবং বছর চারেকের মেয়ের জন্য আলাদা বাসস্থানের ব্যবস্থা
করে দিতে হবে বলে ওই বিচারককে নির্দেশ দিয়েছে আলিপুর আদালত। বিচারক-স্বামীর বিরুদ্ধে ‘পারিবারিক হিংসা’ আইনে অভিযোগ এনে সম্প্রতি পৃথক মামলা দায়ের করেছেন ত্রিবর্ণাদেবী। তার
পরিপ্রেক্ষিতেই এই নির্দেশ। বেশ কিছু দিন আগে বিচারক-স্বামীর বিরুদ্ধে বধূ-নির্যাতনের মামলা করেছিলেন ত্রিবর্ণাদেবী। আলাদা ভাবে করেছিলেন খোরপোষের মামলাও। বছর দেড়েক আগে শিশুকন্যাকে নিয়ে কী ভাবে ঠাকুরপুকুর এলাকার শ্বশুরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হন, সেটাও আদালতকে জানিয়েছেন ওই মহিলা। তার পর থেকে ত্রিবর্ণাদেবী মেয়েকে নিয়ে বাপের বড়িতে রয়েছেন।
ত্রিবর্ণাদেবীর তৃতীয় মামলায় আদালতের নির্দেশ, তাঁর এবং মেয়ের জন্য আলাদা বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দিতে হবে অভিযুক্ত বিচারককেই। সেই সঙ্গেই ত্রিবর্ণাদেবীকে প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য ঠাকুরপুকুর থানার ওসি-কে নির্দেশ দিয়েছেন পঞ্চম বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট সন্তোষকুমার পাঠক। বিচারক-স্বামীকে কোনও রকম পারিবারিক অশান্তি করতেও নিষেধ করা হয়েছে ওই নির্দেশে।
স্ত্রী ও মেয়েকে খোরপোষ বাবদ মাসে ১২ হাজার টাকা দিতে হবে বলে আগেই বিচারককে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। তার মধ্যে ন’হাজার টাকা দিতে হবে স্ত্রীর খোরপোষ হিসেবে। বাকি তিন হাজার টাকা দিতে হবে মেয়ের জন্য। ত্রিবর্ণাদেবীর আইনজীবীর অভিযোগ, ন’মাস আগে থেকে তাঁর মক্কেলের ওই খোরপোষ পাওয়ার কথা। কিন্তু বকেয়া টাকা দেওয়া হয়নি। মক্কেলের সেই পাওনা অবিলম্বে মিটিয়ে দেওয়ার জন্য আদালতে আর্জি জানিয়েছেন ত্রিবর্ণাদেবীর আইনজীবী।
অন্য দিকে, আলিপুরের নবম জেলা ও দায়রা জজ অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদালতে ত্রিবর্ণাদেবীর বিরুদ্ধে বিবাহ-বিচ্ছেদের মামলা করেছেন তাঁর বিচারক-স্বামী। সঞ্জীববাবুর আইনজীবী জানান, ওই মামলায় শিশুকন্যাকে নিয়ে রীতিমতো আইনি টানাপোড়েন চলছে।
এখানেও স্বামীর কাছে আলাদা ভাবে ভরণপোষণ দাবি করেছেন ত্রিবর্ণাদেবী। সঞ্জীববাবু এক সময় আলিপুর আদালতের বিচারক ছিলেন। বর্তমানে তিনি উলুবেড়িয়ায় দেওয়ানি আদালতে রয়েছেন। |