ফের বাধার মুখে পড়ল পস্কোর জন্য ওড়িশা সরকারের জমি অধিগ্রহণ। প্রতিশ্রুতি জলাঞ্জলি দিয়ে জগৎসিংহপুরে বলপূর্বক জমি নিচ্ছে সরকার, এই অভিযোগে আগামী কাল থেকেই রাজ্য সচিবালয়ের কাছে আইন অমান্য আন্দোলনের ডাক দিয়েছে রাজ্যের পাঁচ রাজনৈতিক দল। যার জেরে কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্ট মহলের।
পারাদীপের কাছে এরসামা ব্লকের তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় জোর করে বাসিন্দাদের কাছ থেকে সরকার জমি নিচ্ছে বলে সম্প্রতি এক বৈঠকে অভিযোগ আনে সিপিআই, সিপিএম, ফরোয়ার্ড ব্লক, আরজেডি ও সমাজবাদী পার্টির নেতারা। সিপিআই রাজ্য সম্পাদক দিবাকর নায়ক বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন অধিগ্রহণে বলপ্রয়োগ হবে না। অথচ যাঁরা পানের বরজ ছাড়তে রাজি হননি, তাঁদের পড়তে হয়েছে পুলিশি আক্রমণের মুখে।”
পাঁচ রাজনৈতিক দলের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বেশ কয়েক প্রজন্ম ধরে এরসামা ব্লকের প্রায় ৪,০০০ পরিবার ওই বনাঞ্চলে চাষবাস করে জীবিকা নির্বাহ করে। কিন্তু তার পরোয়া না-করে সরকার ২০০৬ সালের বনাঞ্চল আইন তো লঙ্ঘন করেইছে, সেই সঙ্গে দক্ষিণ কোরীয় বহুজাতিকের স্বার্থরক্ষার তাগিদে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করেছে সাধারণ কৃষকের স্বার্থ।
এই পরিপ্রেক্ষিতে তাদের দাবি, প্রস্তাবিত প্রকল্পকে ওই তিন গ্রাম পঞ্চায়েতের উর্বর জমি থেকে সরিয়ে নিতে হবে। ঠিক যেমনটি করেছে ইন্ডিয়ান অয়েল। তাদের তেল শোধনাগার প্রকল্পকে ঢিনকিয়া অঞ্চল থেকে পারাদীপে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের সায় পাওয়ার পর গত ১৮ মে থেকে শুরু হয়েছে পস্কোর জন্য জমি অধিগ্রহণ। এত দিন বিচ্ছিন্ন ভাবে প্রকল্প বিরোধীদের আন্দোলনের আঁচ পেয়েছে ওড়িশা সরকার। কিন্তু এ বার সম্মিলিত আইন অমান্য আন্দোলনের ডাকে ‘বাড়তি সতর্ক’ প্রশাসন। অভিযোগে প্রকাশ, ফসলি জমিকে তাদের বলে বহু ক্ষেত্রেই দাবি করছে রাজ্য। সে ক্ষেত্রে গ্রামবাসীদের ‘বেআইনি দখলদার’ হিসেবে চিহ্নিত করে অধিগ্রহণে এগোচ্ছে প্রশাসন। তা আটকাতেই এই আন্দোলন বলে জানিয়েছেন পাঁচ রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। |