|
|
|
|
নিত্য দারিদ্র জয় করেই উজ্জ্বল সুব্রত |
নিজস্ব সংবাদদাতা ² খয়রাশোল |
দারিদ্র নিত্যসঙ্গী। তবু হাল ছাড়েনি সে। নিত্য অনটনের মধ্যেও এ বারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় যথেষ্ট ভাল ফল করেছে খয়রাশোলের ভাড্ডি গ্রামের সুব্রত বাউরি। ফল প্রকাশের পর ইতিমধ্যেই দু’তিনটি স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তির আবেদনপত্রও সংগ্রহ করেছে সে। কিন্তু সুযোগ পেলেও অর্থাভাবে উচ্চমাধ্যমিকের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবে কি না তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় সুব্রত।
খয়রাশোলের লোকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র সুব্রত। ওই স্কুল থেকে যে কয়েকজন এ বার ভাল ফল করেছে সে তাদের একজন। এ বার মাধ্যমিকে তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৪০। অঙ্কে ৮১, ভৌতবিজ্ঞানে ৯০, জীবন বিজ্ঞানে ৯৫, বাংলা দু’টি পত্র মিলিয়ে পেয়েছে ১৬৪, ইতিহাসে ৮০, ইংরাজী ও ভূগোলে পেয়েছে ৬৪ ও ৬৬ নম্বর। তার ইচ্ছে এরপর বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার। কিন্তু সংসারের অভাব অনটন সামলে ভবিষ্যতে ছেলেকে কীভাবে পড়াবেন সেটাই ভেবে পাচ্ছেন না সুব্রত’র বাবা দয়াময় বাউরি।
খুব ইচ্ছে থাকলেও মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে আর পড়তে পারেননি বলে আক্ষেপ আছে দয়াময়বাবুর। তিনি বলেন, “এত ভাল ফল করার পরও যদি ছেলেকে উচ্চশিক্ষার সুযোগ করে দিতে না পারি, তাহলে বাবা হয়ে কীভাবে সান্ত্বনা পাব?” কিন্তু বাস্তবকে মেনেই দয়াময়বাবুর আবেদন, “নিজে দিনমজুরি করি। যা আয় হয় দুই ছেলে, স্ত্রী-সহ পরিবারের চারজনের খাওয়ার খরচ যোগাতেই তা শেষ হয়ে যায়। যদি কোনও সরকারি বা বেসরকারি অর্থ সাহায্য পাওয়া যেত তা হলে খুব ভাল হত।”
সুব্রত’র মা নীলিমা বাউরি বললেন, “একচালা বাড়িতে কোনওমতে মাথা গুঁজে থাকি। মাধ্যমিকের খরচ চালাতে এমনিতেই হিমশিম খেতে হয়েছে। স্কুলের শিক্ষক এবং গৃহশিক্ষকেরা ভীষণভাবে সাহায্য করেছেন। অনেক সময় তাঁদের সাম্মানিক পর্যন্ত দিতে পারিনি।”
আর সুব্রত নিজে বলছে, “যে রকম ফল আশা করেছিলাম তা হয়নি। উচ্চ মাধ্যমিকে ভাল ফল করতে চাই। স্বপ্ন দেখি ভবিষ্যতে চিকিৎসক হব। কিন্তু পড়াশোনার কী যে হবে তা জানি না।” লোকপুর স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মহম্মদ হোসেন মল্লিক বলেন, “সুব্রত খুবই ভাল ছাত্র। ভীষণ গরিব। আমরা চাই ও উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাক। দেখি, আমরা স্কুলের তরফে কোনও সাহায্য করতে পারি কি না।”
|
ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত। |
যোগাযোগ--৯০০২৮৬৫৯৬২। |
|
|
|
|
|