পরিবেশ ভেঙে আবাসন, জরিমানা কোটি টাকা

রিবেশ বিধি অমান্য করার জরিমানা এক কোটি দশ লাখ টাকা।
বিধি ভেঙে আবাসন তৈরির কাজ শুরু করায় এক নির্মাণ সংস্থাকে ওই বিপুল অঙ্কের জরিমানা করল রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এর আগেও পরিবেশ বিধি ভাঙার জন্য বিভিন্ন নির্মাণ সংস্থাকে জরিমানা করেছে। কিন্তু এত বড় অঙ্কের জরিমানা এই প্রথম।
সংশ্লিষ্ট নির্মাণ সংস্থাটি কোন্নগরে একটি বন্ধ কারখানার জমিতে আবাসন তৈরির কাজ শুরু করে। নির্মাণ কাজ শুরু করার আগে তারা প্রয়োজনীয় পরিবেশ ছাড়পত্র পর্যন্ত নেয়নি না স্টেট এনভায়রন ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট অথরিটির ছাড়পত্র, না রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অনুমতি। কিন্তু ওই ছাড়পত্র এবং অনুমতি ছাড়া কোনও আবাসন তৈরির কাজ শুরু করাই যায় না। এই ভাবে পরিবেশ আইন অমান্য করার জন্যই ওই সংস্থাকে জরিমানা করা হয়েছে বলে পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে।
কোন্নগরে ন্যাশনাল টেক্সটাইল কর্পোরেশনের অধীন বেঙ্গল কটন মিল অনেক দিন ধরেই বন্ধ। সেই বন্ধ কারখানার জমি কিনে নিয়ে সুগম প্রোমোটার্স প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি নির্মাণ সংস্থা সেখানে বিশাল আবাসন প্রকল্প গড়ে তোলার কাজ শুরু করে। স্থানীয় মানুষ পর্ষদের কাছে অভিযোগ জানান, সংস্থাটি আবাসন তৈরির জন্য বহু গাছ কেটেছে, জলা ভরাট করেছে এবং এলাকায় নানা রকম দূষণ ছড়াচ্ছে। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আধিকারিকেরা সেখানে গিয়ে তদন্ত করেন।
তদন্তের আগে ও পরে দু’টি শুনানির ব্যবস্থাও করে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই নির্মাণ সংস্থাটি কোনও বৈধ নথি বা ছাড়পত্র দেখাতে পারেনি এবং তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো রয়েছে তারও কোনও গ্রহণযোগ্য জবাব দিতে পারেনি।
পর্ষদের তদন্ত রিপোর্টে জানানো হয়, যে ১২ একর জমিতে এই আবাসন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে, তার বেশির ভাগটাই নিচু জমি যা সংলগ্ন মাঠপাড়া এলাকার প্রাকৃতিক নিকাশি। নির্মাণ কাজ করার জন্য কারখানার ছাউনি ভাঙা হয়েছে এবং জলাভূমি বালি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। তদন্তে গিয়ে পর্ষদের আধিকারিকরা দেখেছেন, বহু গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্টে মন্তব্য করা হয়েছে, নির্মাণ সংস্থার প্রতিনিধিরা পর্ষদের তদন্তকারী আধিকারিকদের কোনও প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র দেখাতে পারেননি। পরিবেশ ছাড়পত্র না-নেওয়া পর্যন্ত নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়ার সুপারিশ করা হয় ওই রিপোর্টে।
ওই রিপোর্টের ভিত্তিতেই নির্মাণ কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেয় পর্ষদ। একই সঙ্গে ওই নির্মাণ সংস্থাকে ‘দূষণ মূল্য’ বাবদ ১০ লক্ষ টাকা পর্ষদে জমা দিতে বলা হয়। এ ছাড়া মোট প্রকল্প মূল্যের ১ শতাংশ (এক কোটি টাকা) ব্যাঙ্ক গ্যারান্টির মাধ্যমে পর্ষদে জমা দিতে বলা হয়। ওই টাকা আগামী ১৫ তারিখের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনীয় পরিবেশ ছাড়পত্র এবং অনুমতি না-নিয়ে ফের নির্মাণ কাজ শুরু করলে ব্যাঙ্ক গ্যারান্টির টাকা পর্ষদ বাজেয়াপ্ত করবে।
নির্মাণ সংস্থাকে যে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে, সেখানে পরিবেশ আইন অমান্য করার জন্য পর্ষদের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। পর্ষদের মুখ্য আইন আধিকারিক বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “অনেক নির্মাণ সংস্থারই নির্মাণ কাজ শুরু করে দেওয়ার পরে পরিবেশ ছাড়পত্র নেওয়ার কথা মনে পড়ে। এটা একটা বিপজ্জনক প্রবণতা। তাঁরা স্টেট এনভায়রন ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট অথরিটির কাছ থেকে বা পর্ষদ থেকে পরিবেশ ছাড়পত্র নেওয়ার বিষয়টা মনেই রাখেন না। এটা আটকাতে গেলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই।”
সুগম প্রোমোটার্সের জেনারেল ম্যানেজার শুভ হরলারকা বলেন, “দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশ পেয়েছি। ওঁদের যাবতীয় অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমরা আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলছি। আমাদের যা বক্তব্য, তা আমাদের আইনজীবী আদালতে গিয়ে জানাবেন।” তবে তাঁরা পরিবেশ আদালতে যাবেন, নাকি হাইকোর্টে, তা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

First Page Jibjagat First Page



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.