ইট তৈরিতে যথেচ্ছভাবে মাটি কাটার ফলে ফাঁসিদেওয়ার বিধাননগরে কৃষিজমি বেহাত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে অভিযোগ জানানো হলেও কোনও তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ। ওই ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন এলাকার বাসিন্দা ফাঁসিদেওয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রণবেশ মণ্ডল। বিডিও বাদশা ঘোষাল বলেন, “এ বিষয়ে আমার কাজে কেউ অভিযোগ জানায়নি। অভিযোগ জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, বিধাননগর-১ অঞ্চলে কয়েকটি ইটভাটা রয়েছে। ইটভাটার জন্য যেসব জমি কেনা হয়েছে, সেটা বাদ দিয়েও অন্য সব গরিব কৃষকদের অনেকের কাছ থেকে ট্রাক হিসাবে মাটি কেনা হচ্ছে। টাকার লোভে বহু কৃষক তাঁদের কৃষিজমিরও মাটি বিক্রি করছেন ইটভাটার মালিকদের কাছে। মাটি কাটার ফলে জমিগুলিতে গভীর পুকুরের সৃষ্টি হয়। জমি লাগোয়া অন্য কৃষকদেরও জমির ক্ষতি হচ্ছে। জমি ভেঙে যাচ্ছে। চাষের কাজে সমস্যা তৈরি হয়েছে। বাসিন্দাদের একাংশের মতে, “কৃষিজমি থেকে মাটি কাটা যায় না। ভূমি সংস্কার দফতর কী করে মাটি কাটার অনুমতি দিচ্ছে?” তা নিয়ে ভূমি সংস্কার দফতরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দারা। বাসিন্দাদের পক্ষে এলাকার সিপিএম নেতা জমির মহম্মদ বলেন, “অনেক ইটভাটার মালিক ইটভাটার জন্য জমি কিনলেও ওই জমি থেকে ইট তৈরি করা হচ্ছে না। জমিগুলি নিজের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাঁরা গরিব কৃষকদের টাকার লোভ দেখিয়ে জমির মাটি কিনে ইট তৈরি করছেন। অপরিকল্পিতভাবে যত্রতত্র মাটি কাটা হচ্ছে। ওই সব জমির পাশে যাঁদের জমি রয়েছে তাঁদের ক্ষতি হচ্ছে। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে অভিযোগ জানানো হয়েছে। এ নিয়ে কৃষকদের কয়েকজন আদালতের দ্বারস্থ হন।” কৃষকদের কয়েকজন জানান, এমন চললে এলাকায় কৃষিজমির চিহ্ন থাকবে না। স্থানীয় মোতিয়া ও মহানন্দা নদীর গতিপথ পাল্টে গিয়ে বহু কৃষিজমি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। রাস্তাঘাটও ভেঙে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপের দাবিতে সরব বাসিন্দারা। ইটভাটার মালিক পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ভূমি সংস্কার দফতরের অনুমতি বৈধ অনুমতি নিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। তাঁদের দাবি, “আমরা নিজেরা এই কাজ করি না। মাটির সরবরাহের জন্য লোকই রয়েছে। তাঁরাই ট্রাক হিসাবে মাটি সরবরাহ করে থাকেন। এই নিয়ে আমাদের বলার কিছু নেই।” এই কাজে যুক্ত রয়েছেন এমন এক মাটি সরবরাহকারীর জবাব, “কেউ তাঁর নিজের জমির মাটি বিক্রি করতে চাইলেই আমরা কী করতে পারি?” |