জেলার প্রধান তিনটি সমস্যা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে অনিয়ম সংক্রান্ত জটিলতা, একশো দিনের কাজের প্রকল্পে প্রায় ১২০ কোটি টাকা বকেয়া এবং চা শ্রমিকদের ন্যায্য সুবিধে দেওয়া, এই তিনটি বিষয় মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীকে একটি রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব জেলার জেলাশাসকদের নিয়ে প্রথমে যে বৈঠক ডেকেছিলেন সেখানে ওই তিন সমস্যার কথা জানানো হয়। প্রশাসন সূত্রের খবর, জলপাইগুড়ি জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তীর কাছে তিনটি বিষয় শুনে চা বিষয়ে পৃথক সেল গঠনের কথা জানান। এ ছাড়াও ১০০ দিনের কাজের টাকা বকেয়া থাকার বিষয়টিও মুখ্যমন্ত্রী নিজে দেখবেন বলে জানিয়েছেন। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে সব প্রশাসনিক জটিলতার অবসান ঘটানো হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের নির্দেশে জেলার ১৮৮টি চা বাগানে শ্রমিকরা কী কী সুবিধে পান তার খোঁজখবর নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করছে জেলা প্রশাসন। জেলার এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, “প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে জটিলতা, একশো দিনের কাজ এই দুটি মূলত জেলা প্রশাসনের কাজের অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। পাশাপাশি বিগত বছরগুলিতে জেলার চা শ্রমিকদের দুর্দশার কারণে জেলাকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছিল। সে কারণেই এই তিনটি বিষয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়। মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছেন।” গত বছর জলপাইগুড়ি জেলায় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ ওঠার পর তদন্ত কমিটি গঠন হয়। সেই কমিটি ইতিমধ্যেই রিপোর্ট জমা দিয়েছে। তার ভিত্তিতেই ৪২৩ জন সদ্য নিযুক্তকে শো কজ করা ছাড়া কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। ফলে জেলা প্রশাসনের পক্ষে প্রাথমিক শিক্ষা সংক্রান্ত বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়নি বলে দাবি। এ ছাড়াও চাকরির দাবিতে ভূমিহারাদের লাগাতার আন্দোলন চলতে থাকায় জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের কাজ ব্যহত হয়ে চলেছে। ভূমিহারাদের বিষয়টিও মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন। একশো দিনের প্রকল্পে ২০০৯-১০ সালে জলপাইগুড়ি জেলা রাজ্যের মধ্যে প্রথম স্থানে থাকলেও পরের বছরে বরাদ্দ পায়নি জেলা প্রশাসন। কেন্দ্রীয় বরাদ্দের ষাট শতাংশ খরচের হিসেব দেখাতে না পারায় জলপাইগুড়ি জেলায় আর্থিক বরাদ্দ গত বছর আটকে যায়। জেলা প্রশাসনের হিসেবে ৮১ কোটি টাকা পায়নি জলপাইগুড়ি। গত বছরের বয়েকার পাশাপাশি চলতি বছরের হিসেব ধরে রাজ্যের কাছে ১২০ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। |