রাজ্যে এখন জওহরলাল নেহরু জাতীয় নগর পরিকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প বা জেএনএনইউআরএম-এর বাস চালানো যায় শুধু কলকাতা ও আসানসোলে। এ বার পশ্চিমবঙ্গের সব জেলায় ওই প্রকল্পে বাস চালাতে কেন্দ্রের কাছে আর্জি জানাবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী জানান, উত্তরবঙ্গে এই ধরনের বাসের বিশেষ দরকার। উত্তরবঙ্গ-সহ রাজ্যের সর্বত্র যাতে এই বাস চালানো যায়, কেন্দ্রের কাছে সেই আবেদনই জানাবেন তিনি।
কথা ছিল, জেএনএনইউআরএম-এ কেনা হবে ১৩০০ বাস। আসানসোল-দুর্গাপুরের জন্য ১০০টি, কলকাতার জন্য ১২০০টি বরাদ্দ হয়। কলকাতায় ৯০০টি ছিল সাধারণ ‘সুন্দরী’ বাস। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত বাস ৩০০টি। ২০০৯-এর মে-র মধ্যে এই ১৩০০ বাসের বরাত দেওয়া হয়। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এই প্রকল্পের ৩০০টি বাস পড়ে আছে। প্রকল্প অনুযায়ী বাস-মালিকেরা বাসগুলি কিনবেন। সরকার তাঁদের ভর্তুকি দেবে।” পরিবহণের নানা বিষয় নিয়ে আলোচনার সময়ে মুখ্যমন্ত্রী জেএনএনইউআরএম-এর বাসের উপরে জোর দেন।
মালিকেরা জেএনএনইউআরএম-এর বাস কিনছেন না কেন? জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেট্সের সাধারণ সম্পাদক সাধন দাস বলেন, “সরকারকে বলেছি, যে শর্তে এই প্রকল্পের বাস বরাদ্দ হচ্ছে তা আমাদের পক্ষে মোটেই আকর্ষণীয় নয়। রক্ষণাবেক্ষণের খরচ এত বেড়ে গিয়েছে, অনেকে কিস্তির টাকা সরকারকে দিতে গিয়ে সঙ্কটে পড়ছেন।” জট কাটানোর পথ খুঁজতে মুখ্যমন্ত্রী পরিবহণ-অফিসারদের নির্দেশ দেন। তিনি আরও জানান, রাজ্যের অন্যত্রও যাতে এই প্রকল্পের বাস চালানো যায়, তার অনুমতির জন্য কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রককে চিঠি দেবেন।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্য পরিবহণ দফতরের কর্তাদের এ দিনের বৈঠকে কলকাতার যানজট নিয়েও কথা হয়। যানজট সমস্যা রুখতে মুখ্যমন্ত্রী কয়েক দফা সমাধানসূত্র ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, “কলকাতায় আরও বেশি ভূগর্ভস্থ পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করানো কমলে গাড়ি চলার জায়গা বাড়বে। বাড়বে গাড়ির গতিও।” হকার উচ্ছেদ না করেই যে এ কাজ করা যায়, তা-ও এ দিন স্পষ্ট করে দেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ডিভাইডার সরু করেও রাস্তা চওড়া করা যায়। তিনি বলেন, “যাদবপুর ফাঁড়ি থেকে ৮বি বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত রাস্তার চওড়া ডিভাইডার সরু করতে মেয়রকে নির্দেশ দিয়েছি।”
সাত দিনের মধ্যে নন্দনের কাজ শুরুর নির্দেশও দেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার রাতেই তিনি নন্দন চত্বর ঘুরে দেখেন। বুধবার মহাকরণে পূর্তমন্ত্রী সুব্রত বক্সী, পূর্তসচিব-সহ কিছু অফিসারের সঙ্গে নন্দন নিয়ে বৈঠক করেন মমতা। তিনি বলেন, “নন্দনের অবস্থা খুবই খারাপ। ৭ দিনের মধ্যে কাজ শুরু করতে বলেছি।” |