মুখোমুখি বসতে রাজি অমিত-অসীম, তবে বিতর্ক মিটবে কি
রাজ্যের কোষাগারের হাল নিয়ে চাপান-উতোর তুঙ্গে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে অভিযোগ তুলছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, পর দিন তার জবাব দিচ্ছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত। দু’জনেরই দাবি, তাঁদের দেওয়া তথ্য পরিসংখ্যানই সঠিক। এই অবস্থায় বিভ্রান্তি বাড়ছে সাধারণ মানুষের। অনেকেই মনে করছেন, দু’জনেই নিজেদের মতো করে তথ্য প্রকাশ করেছেন। এই পরিস্থিতিতে ওই দু’জনে কি মুখোমুখি বসতে পারেন না? কী বলছেন ওই দুই অর্থনীতিবিদ?
অমিতবাবুর উত্তর, “বসতে তো চাই-ই। উনি প্রেসিডেন্সি কলেজে আমার চেয়ে তিন বছরের সিনিয়র। জেতার পরে আমিই তো ওঁকে আগে ফোন করেছিলাম। উনি বললেন, ‘এক দিন বৌমাকে নিয়ে এসো। এক সঙ্গে ভাত খাব।’ ওঁর কাছে ভাত খেতে গেলে এ সব নিয়ে তো আলোচনা হবেই।”
বিরোধীদের মর্যাদা দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভাতেও বিরোধীদের বেশি সময় দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। সেই ধারা মেনে অমিতবাবুও সৌজন্য প্রকাশে বিমুখ নন। তিনিও চান, রাজ্যের উন্নতিতে শরিক হোন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীও। অমিতবাবু বলেন, “সেই জন্যই তো আমি আগ বাড়িয়ে ফোন করেছি ওঁকে।”
অমিতবাবুর ফোনের পরে কি আলোচনায় বসার কথা ভাবছেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী? অসীমবাবুর জবাব, “উনি ফোন করে আলোচনায় বসতে চেয়েছেন। আমিও আসতে বলেছি। যে সমস্যা হচ্ছে, তা আলোচনায় বসলেই মিটে যায়। উনি ব্যস্ততার কারণে বোধ হয় সময় করতে পারেননি।”
নারদ নারদ
অভিযোগ জবাব
৩১ মে ১ জুন
* সব হিসেব টাকায়

সদ্য অর্থমন্ত্রীর কুর্সিতে বসা অমিতবাবু অবশ্য তাঁর ব্যস্ততার কথা গোপন করেননি। রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি বোঝার জন্য গভীর রাত পর্যন্ত মহাকরণে কাজ করতে হচ্ছে তাঁকে। অমিতবাবু বলেন, “সবটা বুঝতে সময় লাগছে। এর মধ্যে শরীরটাও একটু খারাপ হয়ে পড়েছিল। সবটা বুঝে নিয়ে সময় পেলেই ওঁর সঙ্গে বসব। এর মধ্যে আমার স্ত্রী-ও বাইরে গিয়েছেন। তিনি ফেরার পর এক সঙ্গে ওঁর বাড়ি যাব।”
কিন্তু দু’জনে এক সঙ্গে বসলেই কী রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক তরজা বন্ধ হবে? রাজ্যের অর্থ দফতরের এক পদস্থ কর্তা জানান, প্রশ্নটা শুধু অর্থনীতির নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে রাজনীতিও। তৃণমূল প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তারা একটি দেউলিয়া কোষাগার হাতে পেয়েছে। অসীমবাবুর দাবি, সে রকম কোনও খারাপ পরিস্থিতি নেই। বেতন বৃদ্ধির ফলে সাময়িক ভাবে কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এর সঙ্গে রয়েছে কয়লার রয়্যালটি এবং স্বল্প সঞ্চয়ের ঋণ মকুব না করার ‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনা’। দু’জনেরই দৃষ্টিভঙ্গি পৃথক। তাই আলোচনা করে সমস্যার সমাধান এক রকম অসম্ভবই।
বাস্তবে পরিস্থিতিও তাই। যেমন, অমিতবাবু মনে করেন, কয়লার রয়্যালটি বাবদ অসীমবাবু যে ৫০০০ কোটি টাকা দাবি করছেন, তার বিশেষ যুক্তি নেই। তাঁর বক্তব্য, সেস ও রয়্যালটি কী করে এক সঙ্গে নেওয়া যায়! পক্ষান্তরে, অসীমবাবু বক্তব্য, “দু’টোর উপরেই রাজ্য সরকারের অধিকার আছে। ১৯৯১ সাল পর্যন্ত সেটাই পেয়ে আসছিল রাজ্য। হঠাৎই রাজ্যকে রয়্যালটি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।” ওই টাকা পেলেই রাজ্য সরকারের আর্থিক হাল ফিরত বলে মনে করেন তিনি। স্বল্প সঞ্চয়ের ঋণ মকুব নিয়েও দুই অর্থনীতিবিদ ভিন্ন মত পোষণ করেন। অমিতবাবু বলেন, “দেশের কোনও রাজ্যকেই তো ওই ঋণ মকুব করা হয়নি।” অসীমবাবুর বক্তব্য, “এ জন্য তো রাজ্য দায়ী নয়। তাই এর দায় নিতে হবে কেন্দ্রকেই।” তাই বিতর্ক শেষ পর্যন্ত থেকে যাচ্ছে রাজনৈতিক স্তরেই।

যদিও অর্থনীতি নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক চান না কেউই। অমিতবাবুর সাফ কথা, “এ নিয়ে কোনও বিতর্ক চাই না।” অন্য দিকে অসীমবাবুরও বক্তব্য, “বিতর্ক নয়, খোলামেলা ও আন্তরিক আলোচনা হলেই সব ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে।”
Previous Story Rajya Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.