|
|
|
|
পুরসভার স্বপ্ন আজও অধরা বগুলার |
নিজস্ব সংবাদদাতা ²কৃষ্ণনগর |
পুরসভা হওয়ার যোগ্যতা থাকলেও বারবার সেই স্বপ্ন ব্যাহত হচ্ছে বগুলায়। পুরসভা হলে এই ছোট শহরটির পরিষেবার অনেক প্রয়োজনীয় উন্নতি হতে পারে।
সীমান্তঘেঁসা জনবহূল এই গঞ্জ নদিয়া জেলার মানচিত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক কেন্দ্র। কোটি কোটি টাকার লেনদেনের বাজার রয়েছে। সেই সঙ্গে শিক্ষা-সংস্কৃতির ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করে নিয়েছে এই ছোট শহরটি। বিভিন্ন দিক থেকে যোগাযোগ ব্যবস্থার সুবিধা যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে অবস্থানগত সুবিধাও। সেই কারণেই এই এলাকা ক্রমশ জনবহূল হয়ে উঠছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, পুরসভা হওয়ার সব রকম পরিকাঠামো সত্ত্বেও এত দিন এই বিষয়ে কোনও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তাই পরিকাঠামোগত উন্নতির সুবিধা হচ্ছে না। শহরটিও পরিকাঠামোর অভাবে ক্রমশ ঘিঞ্জি হয়ে উঠছে। জেরবার হচ্ছে যানজটে। ভেঙে পড়ছে নিকাশি ব্যবস্থা। কিন্তু অর্থাভাবে স্থানীয় পঞ্চায়েত পরিকাঠামোগত উন্নতি করতে পারছে না।
বছরখানেক আগে করিমপুর, তেহট্ট, নাকাশিপাড়াকে পুরসভা করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। কিন্তু সেই তালিকায় বগুলার নাম নেই বগুলার। হাঁসখালি পঞ্চায়েত সমিতির কংগ্রেস সভাপতি অতসী চক্রবর্তী বলেন, “বগুলাকে পুরসভা করার স্থানীয় স্তরে একাধিকবার চেষ্টা করা হয়েছে। দলমত নির্বিশেষে বৈঠক করা হয়েছে। সেই মতো সরকারের কাছে দাবিও পাঠানো হয়েছে।” তিনি বলেন, “কিন্তু একবার শুধু জেলা প্রশাসন থেকে কিছু জানতে চাওয়া হয়েছিল, এই পর্যন্ত।”
বগুলা গঞ্জটি বগুলা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত। জনসংখ্যা এখন ৩০ হাজারেরও বেশি। সড়ক পথে কৃষ্ণনগর শহর প্রায় ২০ কিলোমিটার। পাশ দিয়ে চলে গিয়েছে শিয়ালদহ-গেদে রেললাইন। ৫টি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল। রয়েছে কলেজ ও একটি সাংস্কৃতিক ভবন। রয়েছে হাসপাতাল।
তবে বগুলার প্রধান পরিচিতি ব্যবসা কেন্দ্র হিসেবেই। পাট, ভুসিমাল, সব্জির ব্যবসায় প্রতিদিন বহু টাকার লেনদেন হয় এই বাজারে। বগুলা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক ও প্রাক্তন প্রধান কংগ্রেসের পীযূষকান্তি কুণ্ডু বলেন, “বগুলা বাজারে দৈনিক প্রায় এক থেকে দেড় কোটি টাকার লেনদেন হয়। জনসংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভেঙে পড়ছে পরিকাঠামো। পুরসভা না হলে মানুষ প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোগত উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হবেন।” বগুলা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কংগ্রেসের অরুণ বিশ্বাস বলেন, “নিকাশি ব্যবস্থা খুবই খারাপ। আবর্জনা ফেলার জায়গা নেই। কিন্তু আমাদের সেই আর্থিক সঙ্গতি নেই যে এই সব ব্যবস্থা করতে পারি।”
বগুলা থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত মাত্র ৮ কিলোমিটার। সম্পন্ন কৃষিজীবীদের সংখ্যাও এখানে বেশ বেশি। গ্রামের চাকুরিজীবী মানুষেরাও বগুলায় স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করেছে। বগুলার বাসিন্দা হাঁসখালি পঞ্চায়েত সমিতির অন্যতম কর্মাধ্যক্ষ শশাঙ্ক বিশ্বাস বলেন, “অনেক দিন ধরেই শুনছি বগুলা পুরসভা হবে। কিন্তু এত দিন ধরে সরকারি স্তরে কোনও উদ্যোগই চোখে পড়েনি। বগুলার মানুষ স্বপ্ন দেখেন বগুলা এক দিন পুরসভা হবে। আশা করছি, সরকার সেই স্বপ্নকে মর্যাদা দেবে।” |
|
|
|
|
|