দাবিদার ছিলেন একাধিক জন। শেষ মুহূর্তে অবশ্য জল্পনা চলছিল দু’টি নাম ঘিরে। ময়না থেকে জেলা পরিষদে সদস্য তথা বর্তমান বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ গান্ধী হাজরা এবং ভাগবানপুর থেকে নির্বাচিত সদস্য তথা বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ স্বপন রায়। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত জেলা তৃণমূলের অন্দরে সভাধিপতি পদ নিয়ে টানাপোড়েন চলে। জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব বিষয়টি নিয়ে দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও কথা বলেন। দলনেত্রী কার নাম নির্দিষ্ট করেছেন, বুধবার সকালে সভাধিপতি নির্বাচনের আগের মুহূর্ত পর্যন্ত তা গোপন রাখা হয়।
এ দিন বেলা ১১টায় জেলা পরিষদের সভাকক্ষে সভাধিপতি নির্বাচনের সভা নির্দিষ্ট ছিল। তার আগে দলের জেলা পরিষদ সদস্যদের নিয়ে আলাদা এক ঘরোয়া সভা ডাকেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সেখানে বন্ধ খামে জেলা তৃণমূল সভাপতি শিশির অধিকারীর স্বাক্ষরিত চিঠি নিয়ে পৌঁছন ভগবানপুরের বিধায়ক অর্ধেন্দু মাইতি। সেই চিঠিতেই সভাধিপতির নাম লেখাছিল। সভায় দলীয় পর্যবেক্ষক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন তমলুকের বিধায়ক তথা রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। ওই সভায় জেলা পরিষদের সদস্যদের হাতে বন্ধ খামে শিশিরবাবুর চিঠি তুলে দেওয়া হয়। এবং সরাসরি সভাধিপতি নির্বাচনের সভায় খাম খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়। ঘরোয়া সভায় শুধু সভাধিপতি পদের প্রস্তাবক এবং সমর্থনকারী সদস্য কে হবেন, সেটাই নির্দিষ্ট করা হয়।
এর পর জেলা পরিষদের সভাকক্ষে সভাধিপতি নির্বাচনের সভা শুরু হয়। সভাপতিত্ব করেন জেলা পরিষদের সচিব সঞ্জয় সরকার। উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক শ্রীমতী অর্চনাও। ওই সভায় সভাধিপতি পদে গান্ধী হাজরার নাম প্রস্তাব করেন রাধানাথ মিশ্র এবং প্রস্তাব সমর্থন করেন পীযূষ ভুঁইয়া। দ্বিতীয় কোনও নামই প্রস্তাবিত হয়নি। সভাধিপতি হিসাবে তাই গান্ধী হাজরার নামই ঘোষণা করা হয়।
নতুন সভাধিপতি গান্ধীবাবু নতুন দায়িত্বভার নিয়ে জানান, শিক্ষা ক্ষেত্রেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হবে। স্বাস্থ্য-পরিষেবা, কৃষি-সেচ, রাস্তা-বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের উন্নয়নেও জোর দেবে জেলা পরিষদ। শিক্ষা-উন্নয়নে স্কুল-কলেজের পরিকাঠামো ঢেলে সাজা, শিক্ষক নিয়োগই সর্বাধিক গুরুত্ব পাবে বলেও জানিয়েছেন নতুন সভাধিপতি। ব্লক ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির পরিকাঠামো উন্নয়ন, চিকিৎসক-কর্মীর সংখ্যা বাড়িয়ে পরিষেবার মান উন্নয়ন, কৃষি-সেচের উন্নয়নে খাল ও পুকুর সংস্কার গুরুত্ব পাবে বলেও জানান সভাধিপতি। অস্থায়ী নলকূপ বসানো নিয়ন্ত্রণ, নদীবাঁধ মেরামতি, গ্রামীণ সড়কের সম্প্রসারণ এবং প্রতিটি গ্রামে বিদ্যুদয়নেও বিশেষ উদ্যোগের কথা জানান গান্ধীবাবু। |