দুই, দলকে একজোট করাও এখন বড় চ্যালেঞ্জ। দলের প্রায় সব স্তরের নেতারা এখনও কোন্দলে ব্যস্ত। বিজেপি ক্ষমতায় আসবে কি না ঠিক নেই, প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য দৌড় শুরু হয়ে গিয়েছে। তার জন্য সুষমা স্বরাজের মতো নেত্রীও নিজেকে ‘কলঙ্কমুক্ত’ করতে সতীর্থ অরুণ জেটলির ঘাড়ে দায় চাপাচ্ছেন। তিন, দুর্নীতিকে মূলধন করে কংগ্রেস-বিরোধিতার রাজনীতি করতে চায় বিজেপি। অথচ কখনও আন্না হাজারে, কখনও বা বাবা রামদেবরাই দুর্নীতি-বিরোধিতার ‘মুখ’ হয়ে উঠছেন। এখন তাঁদের সমর্থন জুগিয়ে, ‘ট্র্যাক-টু’ আলোচনার মাধ্যমে কংগ্রেস-বিরোধিতার রাশ নিজেদের হাতে রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
চার, কংগ্রেসের বিরুদ্ধে এত দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও ইউপিএ-২ সরকারের আমলে তারা কিন্তু
সব বিধানসভাই বিজেপি-কে টেক্কা দিয়েছে।
সম্প্রতি যে পাঁচ রাজ্যে নির্বাচন হয়েছে, তাতে কংগ্রেস দেড়শোর বেশি আসন পেলেও বিজেপি মাত্র পাঁচের কোঠাও পেরোতে পারেনি।
পাঁচ, গত লোকসভা ভোটে বিজেপি-র ঝুলিতে আসা ১১৬টি আসনের সিংহভাগই এসেছিল মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটক, ছত্তীসগঢ়, বিহার ও গুজরাত থেকে। কিন্তু গডকড়ী সভাপতির কুর্সিতে বসার পর শত চেষ্টা করেও বাকি রাজ্যে দাঁত ফোটাতে পারেননি। বাকি রাজ্যে ভোটব্যাঙ্ক না বাড়লে যে দিল্লি দখল অসম্ভব, সেটি বেশ বুঝছেন নেতারা।
ছয়, বিহার নির্বাচনের পর এনডিএ-র উত্থানের আশা কিছুটা উজ্জ্বল হলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়ললিতা, চন্দ্রবাবু নায়ডু, নবীন পট্টনায়কের মতো এনডিএ-র পুরনো শরিকরা যে ফের বিজেপি-র ছাতার তলায় আসবেন, এমন কোনও লক্ষণই দেখা যচ্ছে না।
এই পরিস্থিতিতে দুর্নীতির অভিযোগকে হাতিয়ার করে কী ভাবে এই চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলা করা যায়, তার পথ খুঁজবেন দলের কুশীলবরা। বিশেষ নজর দেওয়া
হবে উত্তরপ্রদেশের দিকেও, ভোট যেখানে ইতিমধ্যেই
কড়া নাড়তে শুরু করেছে। বিজেপি-র শীর্ষ নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণীর মতে, “উত্তরপ্রদেশের মতো বড় রাজ্যে ভাল ফল করতে না পারলে কেন্দ্রে ক্ষমতা দখলের স্বপ্নও দূর অস্ত্। এই রাজ্যে গত কয়েকটি নির্বাচনে বিজেপি-র
ফল ক্রমশই খারাপ হয়েছে। যে কোনও মূল্যে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন করতে হবে। এক দিকে মায়াবতী সরকারের অপশাসন ও অন্য দিকে কেন্দ্রে
অভূতপূর্ব দুর্নীতি এই সবের বিরুদ্ধেই আন্দোলন সংগঠিত করতে হবে।”
দলের প্রধান মুখপাত্র রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, “বিজেপি-র চাপে পিছু হঠলেও মনমোহন সরকারের দুর্নীতির বিরাম নেই। নবতম সংযোজন বস্ত্রমন্ত্রী দয়ানিধি মারানের দুর্নীতি। পঞ্চাশ ঘণ্টা পরে মারান আজ যে সাফাই দেন, তাতেও দুর্নীতি আড়াল হচ্ছে না। মারানের ইস্তফা দেওয়া উচিত। না দিলে, প্রধানমন্ত্রীরই উচিত তাঁকে বরখাস্ত করা।” বৈঠক শুরুর আগেই মনমোহন সরকারের দুর্নীতির বিষয়ে একটি প্রস্তাবের খসড়াও তৈরি করে ফেলেছেন রবিশঙ্কররা। জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে সেটি পাশ হবে। কিন্তু তার পর? |