বাজার ধরতে কী ভাবে চা পাতার গুণগত মান ঠিক রাখবেন, কাকে চা বিক্রি করতে হবে, কী ভাবে, কোন শর্তে বিক্রি করতে হবে এমনই পেশাদারিত্বের পাঠ নিলেন জেলার ক্ষুদ্র চা চাষিরা। বুধবার জলপাইগুড়ি শহরে কদমতলায় এক হোটেলে ক্ষুদ্র চাষিদের নিয়ে কর্মশালার আয়োজন করেছিল ভারতীয় চা পর্ষদ। ইন্ডিয়ান ইন্সস্টিটিউট অব প্ল্যান্টেশন ম্যানেজমেন্ট (আইআইপিএম)-এর বিশেষজ্ঞরা এ দিন ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ি, রাজগঞ্জ এলাকার ক্ষুদ্র চা চাষিদের হাতেকলমে পেশাদারি মনোভাব তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। চা পর্ষদের চেষ্টায় সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতি। নিজস্ব কারখানা না-থাকায় জেলার ক্ষুদ্র চা চাষিরা কাঁচা পাতার উপযুক্ত দাম পান না বলে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ রয়েছে। কাঁচা পাতার দাম যে ভাবে ওঠা নামা করে তাতে বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে বিপাকে পড়েন ক্ষুদ্র চা চাষিরা। সে কারণে সমস্যা কাটিয়ে তাঁদের ঘুরে দাঁড়ানোর সাহায্য করতেই এই কর্মশালার আয়োজন। আইআইপিএমের বিশেষজ্ঞদের মতে, পাতার গুণগত মান বজায় থাকে না বলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে পাতার দাম পেতে সমস্যা হয়। পাতার ওজন বেশি করার জন্য দু’টি কুড়ি, একটি পাতা না ছিঁড়ে চা গাছের বেশির ভাগ পাতা তুলে কারখানায় দেওয়া হয়। বটলিফ কারখানাগুলিকেও চা তৈরির সময় বেশিরভাগ পাতা ফেলে দিতে হয়। সেই অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখে কারখানাগুলি কাঁচা পাতার দামও কমিয়ে দেয়। এই প্রবণতা এড়াতে ওজনকে প্রাধান্য না দিয়ে পাতার মান বজায় রাখার দিকে জোর দিতে বলা হয়েছে। আইআইপিএমের বিশেষজ্ঞ তন্ময় চক্রবর্তী বলেন, “যদি কোনও ছোট বাগান এক মাস লাগাতার ভাল মানের পাতা কোনও নির্দিষ্ট কারখানায় সরবরাহ করেন তার পর থেকে কারখানাও উপযুক্ত দাম দিতে বাধ্য থাকে। এমনই নানা পেশাদারি মনোভাবের পাঠ দেওয়া হয়েছে চা চাষিদের। যা আদপে তাদের পাতা বিক্রি করতে ও গোষ্ঠী গড়ে ছোট বাগান চালাতে সাহায্য করবে।” উত্তরবঙ্গের আরও কিছু জেলায় আইআইপিএম-এর উদ্যোগে কর্মশালার আয়োজন করা হবে বলে জানানো হয়। ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির যুগ্ম সম্পাদক বিজয় গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “রসদ এবং ধারণার অভাবে ক্ষুদ্র চা চাষিরা মার খায়। পর্ষদের এ উদ্যোগ ফলপ্রসূ হবে আশা করি।” |