বিপণন ব্যবস্থা নেই, ভাঁটা পড়ছে কাটোয়ার ডাঁটা চাষে

কাটোয়া এখন ডাঁটা ছেড়ে কচুতে।
খেতের ফসল বাজারে নিয়ে যাওয়া এবং উপযুক্ত দামে বিক্রির যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায় আপাতত এই পরিণতিই হয়েছে সুস্বাদু ডাঁটা চাষের জন্য প্রসিদ্ধ কাটোয়ার আলমপুর গ্রামের চাষিদের।
আলমপুর গ্রামের ডাঁটা অন্যান্য জায়গায় ‘কাটোয়ার ডাঁটা’ নামেই খ্যাত। তবে এই ডাঁটার আসল নাম ‘নটের ডাঁটা’। সুস্বাদু ও মিষ্টতার জন্য এখানকার ডাঁটার বিপুল চাহিদা রাজ্যজুড়ে। আলমপুর গ্রাম ছাড়াও এই ডাঁটার চাষ হয় আশেপাশের আরও কয়েকটি গ্রামে।
অন্য গ্রামে ডাঁটার চাষ হলেও ফি বছর আলমপুর গ্রামে কমতে শুরু করেছে ডাঁটার চাষ। যদিও চাষিদের কথায়, বিভিন্ন জায়গায়, বিশেষত কলকাতা ও শহরতলির বাজার গুলিতে ‘কাটোয়ার ডাঁটা’র ভাল চাহিদা রয়েছে। ডাঁটা চাষে লাভও ভাল।

ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।
তা সত্ত্বেও আলমপুর গ্রামে ডাঁটার চাষ কমছে কেন? “কমবে না কেন? ডাঁটা চাষ করার পরে গ্রাম থেকে বিক্রির কোনও ব্যবস্থা নেই। চাষিকেই ডাঁটা নিয়ে আড়তদারের কাছে যেতে হয়। পচনশীল হওয়ায় দিনের দিন বিক্রি না হলে আর সেই ডাঁটা বিক্রি হবে না।” বললেন আলমপুর গ্রামের চাষি কানন মণ্ডল, ক্ষুদিরাম ঘোষেরা। এখানকার চাষিরা আরও জানান, ফাল্গুন থেকে শ্রাবণ পর্যন্ত ‘নটের ডাঁটা’র চাষ হত। কিন্তু এখন জলের অভাব না থাকায় সারা বছরই ওই ডাঁটার চাষ হয়।
আলমপুর গ্রামে আগে ফি বছর ৪০ বিঘা জমিতে ডাঁটার চাষ হত। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১০ বিঘায়। স্থানীয় চাষি প্রভাস মণ্ডল, বিপ্লব ঘোষেরা বললেন, “ডাঁটা চাষ করে আগে ভালই লাভ হয়। কিন্তু বিপণনের ব্যবস্থা না থাকায় আমরা উৎসাহ পাচ্ছি না।” তাঁদের আক্ষেপ, “অন্য গ্রামের ডাঁটাও তো এখন কাটোয়া ডাঁটা বলে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।”
গ্রামের এক প্রবীণ বাসিন্দা অনন্তদেব ভট্টাচার্য জানান, ৫০-৬০ বছর আগে কলকাতার বাজারে এই ডাঁটার চাহিদা হয়। তিনি বলেন, “সেই সময় নৌকা করে কাটোয়ার ডাঁটা কলকাতা থেকে নিয়ে যেত বিষ্টু ঘোষ, বালকরাম হালদারেরা।
কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, এখানকার ডাঁটা চাষ দু’করকম পদ্ধতিতে হয়। প্রথম পদ্ধতিতে খেত জমিতে বীজ ছড়িয়ে ও দ্বিতীয় পদ্ধতিতে বীজ মাটিতে পুঁতে কাজ করা হয়। কাটোয়া ১ ব্লকের কৃষি আধিকারিক গোলাম মইনুদ্দিন বলেন, “সব জায়গাতেই নটের ডাঁটার চাষ হয়। কিন্তু কাটোয়ার আলমপুর গ্রামের মাটির উৎকৃষ্টতার জন্যই এই ডাঁটা এত সুস্বাদু। কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, আলমপুরের মাটিতে দোঁয়াশ ও বেলের মিশ্রণ রয়েছে। ফলে উর্বরতা অনেক বেশি। ঝিনুক পাতা ও লম্বা পাতা থাকায় সালোকসংশ্লেষের সময় খাদ্যকণা গাছের প্রতিকণায় সহজেই পৌঁছে যায়। ফলে ওই ডাঁটার স্বাদ অন্য ডাঁটার চেয়ে ভাল।
এত কিছু ভাল হলেও বিপণন ব্যবস্থা এত দুর্বল কেন? কাটোয়া নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কাটোয়া শহরে তাদের বহুমুখী হিমঘর তৈরি হবে। তখন বিপণন সমস্যা অনেকটাই মিটে যাবে বলেই তাদের আশা।
Previous Story Business Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.