ঘরছাড়াদের গ্রামে ফেরাতে এসপির দ্বারস্থ তৃণমূল
রছাড়া দু’টি পরিবারকে গ্রামে ফেরানোর দাবিতে বুধবার জেলা পুলিশের দ্বারস্থ হল তৃণমূল। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সিউড়ি ২ ব্লকের তাপাইপুর গ্রামটি আদিবাসী অধ্যুষিত। তৃণমূলের অভিযোগ, অন্যায়ের প্রতিবাদ করে সিপিএম নেতা গোপাল টুডুর শাসানিতে ওই গ্রামের এক মহিলা-সহ দুই আদিবাসী পরিবারকে গ্রাম ছাড়তে হয়েছিল। তাই তাঁদের ঘরে ফেরানোর দাবিতে এ দিন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ওই দু’টি পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ সুপারের কাছে যান। জেলা পুলিশ সুপার নিশাদ পারভেজ বলেন, “তাঁদের অভিযোগ শুনেছি। তাঁদের গ্রামে ফেরানোর জন্য সব রকম ব্যবস্থা করা হবে।”
তৃণমূলের দাবি, ওই গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দা সিপিএম করতেন। অনেকে স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অধীনে নানা রকম কাজ করতেন। আর্থিক সুযোগ-সুবিধা আসত। কিন্তু ওই সব সুবিধা সিপিএমের লোকেদের জন্য তাঁরা পেতেন না। এর প্রতবাদ করায় কয়েক জনের সঙ্গে বিরোধ বাধে সিপিএম নেতৃত্বের। প্রতিবাদ করার অপরাধে বেশ কয়েক জনকে জরিমানা করা হয়েছিল। ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অধীনে কাজ করা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর নেত্রী পুতুল সোরেন ও যুগল মাড্ডিকে গ্রাম ছাড়ার ‘ফতোয়া’ দেয় সিপিএম। তখন থেকেই সিপিএমের ভয়ে গ্রামছাড়া আছেন পুতুল ও যুগলের পরিবারএমনটা দাবি তাঁদের।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের দাবি, “গ্রামে-গঞ্জে সিপিমের অত্যাচার কোন পর্যায়ে পৌঁছেছিল, তা ভাবা যায় না। শুধু আদিবাসী নয়, সাধারণ, গরিব মানুষদের জন্য সরকারি ও বেসরকারি যে সমস্ত সুযোগ সুবিধা আসত, তা কার্যত ভোগ করতেন সিপিএম নেতৃত্ব। কোনও ভাবে তার প্রতিবাদ করলেই সিপিএমের শাসানি মুখে পড়তে হত তাঁদের।” তাঁর অভিযোগ, “পুতুল সোরেন, যুগল মাড্ডি-সহ ওই গ্রামের বেশ কয়েক জন আদিবাসী লোকজন স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অধীনে কাজ করতেন। তাঁদের কয়েক জন ওই সংস্থার কাছে সাহায্য চাইতে গেলে সিপিএম নেতা গোপাল টুডু ও তাঁর লোকজন ওই সব বাসিন্দার উপরে চড়াও হন। তার পর থেকে অনেকে সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। তাই পুলিশ সুপারের কাছে দাবি জানানো হয়েছে, ঘরছাড়াদের গ্রামে ফেরানোর সময়ে শান্তি বজায় থাকে তা দেখার। এসপিও আশ্বাস দিয়েছেন।”
গ্রামবাসী পুতুল সোরেনের অভিযোগ, “বছর দেড়েক আগে আমাদের কয়েক জনকে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা প্রশিক্ষণের জন্য ইলামবাজারে পাঠায়। জানতে পারি আমাদের সাহায্য ও সুযোগ সুবিধার জন্য নানারকম অনুদান আসে। কিন্তু কিছুই পাই না। ফিরে কয়েক জন সাহায্য চাই। তাতেই সিপিএম নেতা গোপাল টুডু আমার উপরে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। আমার বাবা-সহ কয়েক জনকে ৫-৭ হাজার টাকা জরিমানা করে। আর আমাকে বলেন, ‘তুই নেত্রী। সবাইকে উসকেছিস। তোর গ্রামে থাকা যাবে না। একই বিধান যুগলবাবুকেও।” সিপিএম নেতা গোপাল টুডু অবশ্য বলেন, “আমি সম্প্রতি শিক্ষকতা থেকে অবসর নিয়েছি। আমি বর্তমানে সিপিএমের কোনও নেতা নই। দীর্ঘদিন আগে পুরনন্দরপুর লোকাল কমিটির সম্পাদক ছিলাম। পরে পুরন্দরপুর জোনাল কমিটির সদস্য ছিলাম। প্রায় ১০ বছর ধরে পার্টির কোনও পদে আমি নেই। এই সব ঘটনার সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। যতদূর জানি, পুতুল ও যুগলের নিজেরাই গ্রাম ছেড়েছিলেন।” সিপিএমের সিউড়ি জোনাল কমিটির সম্পাদক দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “অনুব্রতবাবু যে সব অভিযোগ করেছেন, সেগুলি তাঁদের দলের নীতি হতে পারে। আমাদের নয়।”
Previous Story Purulia Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.