আসানসোল, চুরুলিয়া, জামুড়িয়া ও বারাবনির বিভিন্ন প্রান্তের সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দোমহানি বাজার।
সারা দিনে ৬২টি মিনিবাস ও ১৫০টিরও বেশি কয়লা-বোঝাই লরির যাতায়াত এই রাস্তা দিয়ে। কিন্তু নেই যাত্রীদের অপেক্ষার জন্য কোনও ছাউনি। ফলে দুর্ভোগে পড়েন নিত্যযাত্রীরা। আসানসোল-চুরুলিয়া বা সবিসাতলি যাওয়ার সময় বাজারের অপ্রশস্ত চৌরঙ্গি মোড়ে বাস থামে। উল্টো দিক থেকে আসার সময়েও একই অবস্থা হয়। জামুড়িয়া-রানিগঞ্জ রাস্তায় বাস দাঁড়ায় থানার কাছে। কোথাও নেই যাত্রীদের অপেক্ষার জন্য কোনও প্রতীক্ষালয় গড়া হয়নি। নেই পানীয় জলের সংস্থান।
দোমহানির বাসিন্দা শান্তিময় বন্দ্যোপাধ্যায়, চুরুলিয়ার হামিদা কান্তি, জামুড়িয়ার নয়ন মণ্ডলরা জানালেন, গরমকাল ও বর্ষার দিনে সমস্যা চরমে পৌঁছয়। গরমকালে এই খনি এলাকায় জলসঙ্কট চরম আকার নেয়। ক্রেতা ছাড়া কাউকে পানীয় জল দিতে চান না স্থানীয় দোকানিরা।
আসানসোল-দোমহানি রুটের এক বাস চালক জানালেন, সব থেকে বেশি অসুবিধা হয় দোমহানি যাওয়ার সময়। থানা, স্কুল, পঞ্চায়েত সমিতির কার্যালয় হয়ে যাওয়ার পথে চৌরঙ্গিতে বাস ঘুরিয়ে নিতে হয়। ওই স্বল্প পরিসরের জায়গায় বাসের মুখ ঘোরাতে গিয়ে মাঝে মধ্যেই যানজটে পড়তে হয়। ফলে দিনের বেলায় ওই রাস্তা পার হওয়া রীতিমতো সময় সাপেক্ষ হয়ে দাঁড়ায়।
স্থানীয় এক শিক্ষক জানালেন, বাজারের কাছে হাট বসলে রাস্তা দিয়ে চলা ফেরা করা কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে। এ সবের সঙ্গে রয়েছে বাজারের উত্তর দিকের বেহাল রাস্তা। প্রায় ১ কিমি পথ যাত্রীদের নাকাল হতে হয়। বহু বছর আগে একবার সংস্কার করা হয়েছিল ওই রাস্তার।
তৃণমূল নেতা পূর্ণশশী রায় জানান, ২০০১ সালে দশম অর্থ কমিশন পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য জেলা পরিষদকে এক কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছিল। চুরুলিয়া বাসস্ট্যান্ডের জন্য ৫ লক্ষ টাকা ধার্য করে জেলা পরিষদ। জামুরিয়া পঞ্চায়েত সমিতির হাতে ওই টাকা তুলেও দেওয়া হয়েছিল। স্থানীয় নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেয় কম গুরুত্বপূর্ণ চুরুলিয়ার জন্য বরাদ্দ টাকা দোমহানির বাসস্ট্যান্ড নির্মাণে খরচ করা হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত দু’টি জায়গার কোনওটিতেই যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের লক্ষ্যে বাসস্ট্যান্ড তৈরি করা হয়নি।
আসানসোল মহকুমা মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুদীপ রায় জানান, তাঁরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন। একটি ফাঁকা জায়গায় দোমহানি বাসস্ট্যান্ড, প্রতীক্ষালয় ও শৌচাগার নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সে দিকে লক্ষ রেখে বারাবনি পঞ্চায়েত সমিতির তরফে থানার পাশে বাঁ দিকে একটি ফাঁকা জায়গা চিহ্নিত করা হয়। ব্যাস ওই পর্যন্তই।
তার পরে বিষয়টি আর এগোয়নি। বারাবনি পঞ্চায়েত সমিতির তৎকালীন সভাপতি মিঠু চট্টোপাধ্যায় অবশ্য এমন কোনও পরিকল্পনার কথা মনে নেই বলে জানান। তাঁর দাবি, “এর জন্য কোনও টাকাও পাইনি।”
সব পরিকল্পনা অবশ্য এখনও খাতায়-কলমেই রয়ে গিয়েছে। দীর্ঘ দিনের ভুক্তভোগী যাত্রীদের দুর্ভোগও অতএব অব্যাহত। |