পাহাড় সমস্যা সমাধানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্যোগী হতে উৎসাহিত হয়ে তরাই-ডুয়ার্সের ব্যাপারেও আলোচনা চাইছে অখিল ভারতীয় আদিবাসী বিকাশ পরিষদ। পূর্বতন বাম সরকারের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার দাবি জানিয়েও ফলপ্রসু হয়নি। এ কথা জানিয়ে রাজ্যের নতুন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাক্ষাত প্রার্থনা করে চিঠি পাঠিয়েছে পরিষদ। মোর্চা নেতৃত্বের সঙ্গে পাহাড় বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাতের পরেই ডুয়ার্স-তরাইয়ের সমস্যা নিয়ে আদিবাসী বিকাশ পরিষদের নেতৃত্বও মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে আলোচনা চাইছেন।
মঙ্গলবার জলপাইগুড়ির জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সাক্ষাত চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাছিয়েছে পরিষদ নেতৃত্ব। জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তীর হাতে মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎ প্রার্থনা করে চিঠি সহ পরিষদের দাবিপত্রও তুলে দেওয়া হয়েছে। পরিষদের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে যে চিঠি পাঠানো হয়েছে তার ছত্রে ছত্রে নতুন মুখ্যমন্ত্রীর কাজের উদ্যোগের প্রশংসা রয়েছে। সঙ্গে রয়েছে আগের বাম সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভের সুরও। উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের জন্য পৃথক বিভাগ করে একজন মন্ত্রীকে এবিষয়ের দায়িত্ব দেওয়াকে সাধুবাদ জানিয়েছে পরিষদ। নতুন সরকারে এই উদ্যোগে উত্তরবঙ্গের আদিবাসী সমাজের উন্নয়ন হবে বলে পরিষদ আশা করেছে। সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বকে অবিসংবাদী বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
পরিষদের সধারণ সম্পাদক তেজকুমার টোপ্পো বলেন, “ডুয়ার্স-তরাইয়ের অনগ্রসরতা কাটাতে এবং আদিবাসী সমাজের উন্নতির জন্য আমরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছি। আগের সরকার এবং সেই সরকারের মুখ্যমন্ত্রীকে বারবার আমাদের দাবি জানিয়েও কোনও ফল মেলেনি। রাজ্যের নতুন মুখ্যমন্ত্রীর কাজকর্ম আমাদের মনে আশা জুগিয়েছে। সেকারণেই আমাদের বিশ্বাস ওঁনার সঙ্গে সাক্ষাত হলে আদিবাসীদের অনুন্নয়নের সমস্যা মিটবে।”
এ দিন পাঁচ হাজার সমথর্র্ক নিয়ে জলপাইগুড়িতে স্মারকলিপি দিতে আসেন পরিষদ নেতৃত্ব। সমর্থকদের অবশ্য জলপাইগুড়ি শহরে ঢোকার মুখেই আটকে দেওয়া হয়। পরিষদের বাছাই করা নেতৃত্বকে স্মারকলিপি দিতে জেলা সদরে ঢোকায় পুলিশ প্রশাসন। পরিষদের তরফে জেলা প্রশাসনের কাছে ১৯ দফা দাবি সম্বলিত দাবিপত্র পেশ করা হয়েছে। দাবিপত্রে চা বাগানের শ্রমিকদের দৈনিক ২৫০ টাকা মজুরি প্রদান সহ আদিবাসীদের জমির পাট্টা প্রদান, চা শিল্পের জন্য একজন পূর্ণমন্ত্রীকে দায়িত্ব দেওয়া, আদিবাসীদের নিজস্ব রাতি মেনে করম পুজোয় সবেতন ছুটির দাবি রয়েছে। চা শ্রমিকদের বেতন ছাড়া অন্যান্য যেসব সুযোগ-সুবিধে পাওয়ার কথা আইনে বলা রয়েছে, সেই সুবিধে প্রদান, স্বাস্থ্য পরিষেবা উন্নত করার মতো দাবিও রয়েছে দাবিপত্রে। আদিবাসী বিকাশ পরিষদের সভাপতি জন বার্লা বলেন, “আগেও এই দাবিগুলি জানানো হয়েছিল। বারবার শুধুই আশ্বাস মিলেছে। কিন্তু কোনও সদর্থক উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আমরা আশাকরি ডুয়ার্স এবং তরাইয়ের আদিবাসীদের নিয়ে নতুন মুখ্যমন্ত্রী কোনও পদক্ষেপ নেবেন।”