|
|
|
|
চা শ্রমিকদের মজুরি বাড়াতে আগ্রহী সরকার |
নিজস্ব সংবাদদাতা ² ফালাকাটা |
চা বাগানের শ্রমিকদের মজুরি ৯০ টাকার চেয়ে বেশি হারে ধার্য করার জন্য জোর দিলেন রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু। লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পাশাপাশি আদিবাসী বিকাশ পরিষদের উত্থানের পরে বাগানের জমি ফিরে পাওয়ার জন্য বাম সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী অনাদি সাহু ৩৪ বছরে প্রথম বার বাগানের শ্রমিকদের মজুরি ১২০ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছিল। এর আগে বাম সরকার শ্রমিকদের মজুরি কত করা হবে তা নিয়ে জোর দেয়নি। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর শুরু থেকে শ্রম দফতর চা শ্রমিকদের নিয়ে বিশেষ ভাবে ভাবছে। কিছুতে যাতে দৈনিক ৯০ টাকার নীচে চা শ্রমিকদের মজুরি ধার্য করা না হয় সে বিষয়ে আলাদাভাবে জোর দিয়েছেন মন্ত্রী। যা বাম আমলে লোকসভা ভোটের আগে এই ধরণের উদ্যোগ লক্ষ করা যায়নি বলে দাবি করছেন শ্রমিক ইউনিউয়নগুলি। নতুন মজুরি পাহাড়, তরাই-ডুয়ার্সে যাতে সমহারে করা হয় সে বিষয়ে জোর দেন মন্ত্রী। শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু বলেন, “ত্রিপাক্ষিক চুক্তির ভিত্তিতে আমরা ৯০ টাকার চেয়ে বেশি হারে মজুরির উপর জোর দেব। সাধারণ শ্রমিকরা যাতে ৯০ টাকার চেয়ে কম হারে মজুরি না পায় সে বিষয়ে আমাদের নজর থাকবে। ওই নয়া হারের মজুরি সর্বত্র এক থাকবে।” ওয়েজ বোর্ড গঠন করার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা রয়েছে বলে মন্ত্রী জানান। আগামী জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে শ্রম দফতরের কয়েকজন আধিকারিককে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি সহ বাগানের সামগ্রিক হাল হকিকৎ দেখতে কলকাতা থেকে পাঠাচ্ছেন শ্রমমন্ত্রী। বর্তমানে চা বাগানগুলি কী ধরণের অবস্থার মধ্যে দিয়ে চলছে তা দেখা ছাড়াও শ্রমিকরা সুযোগ-সুবিধা ঠিকঠাক পাচ্ছেন কিনা তা দেখে মন্ত্রীকে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দেবেন আধিকারিকরা। পরে শ্রমমন্ত্রী সরজমিনে বাগানের হাল দেখতে আসবেন বলে বাগান সূত্রে জানা গিয়েছে। তিন বছর অন্তর শ্রমিকদের বেতন নিয়ে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হয়ে আসছে। গতবার মালিকদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করার পর ৩ বছরে ধাপে ধাপে ১৩ টাকা মজুরি বৃদ্ধিতে সম্মত হয় শ্রমিক ইউনিয়নগুলি। বেতন বেড়ে শ্রমিকরা বর্তমানে ৬৭ টাকা হাতে পাচ্ছেন। ৬৭ টাকা দিয়ে বর্তমানে বাজারে শ্রমিকরা অত্যন্ত অভাবে দিন যাপন করছেন। শ্রমিকদের এই ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে ২৫০ টাকা ন্যূনতম বেতনের দাবিতে সরব হয় আদিবাসী বিকাশ পরিষদ। অন্য ইউনিয়নগুলি শ্রমিকের কষ্ট বোঝে না বলে প্রচার চালানোয় একের পর বাগান সিটুর হাত থেকে কেড়ে নিতে থাকে আধিবাসীদের ওই সংগঠন। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর বাগানের বিষয়ে কয়েকটি পদক্ষেপের কথা জানানোয় আদিবাসী বিকাশ পরিষদের নেতারা নয়া সরকারকে স্বাগত জানিয়েছেন। শ্রমমন্ত্রীর এই উদ্যোগের কথা জানার পর সংগঠনের রাজ্য সভাপতি বিরসা তিরকে বলেন, “সেভাবে রাজ্য সরকার চা বাগানের শ্রমিকদের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে, তাতে আমরা খুশি। আগের সরকারের কাছ থেকে এত উদ্যোগ কখনও দেখিনি।” ১৫ টি শ্রমিক সংগঠন নিয়ে তৈরি ডিফেন্স কমিটির আহ্বায়ক সমীর রায় বলেন, “বাম জমানাতে শ্রমিকদের নিয়ে কোনও চিন্তাভাবনা হয়নি। শ্রমিকরা যাতে ন্যায্য মজুরি পান। সে দিকে শ্রমমন্ত্রী দৃষ্টি রয়েছে। আমরা তাঁর উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছি।” |
|
|
|
|
|