|
|
|
|
অশ্লীল নাচা-গানা |
চম্পারণে উদ্ধার কিশোরী |
নিজস্ব সংবাদদাতা ² শিলিগুড়ি |
ক্যাটারিংয়ের কাজ করানোর নাম করে উত্তরবঙ্গের কিশোরীদের বিহারে নিয়ে গিয়ে অশ্লীল নাচতে বাধ্য করছে দালালদের একটি চক্র। সোমবার রাতে বিহারের চম্পারণ থেকে এক কিশোরীকে উদ্ধারের পরে চক্রের হদিস পায় শিলিগুড়ির প্রধাননগর থানার পুলিশ। পুলিশ জানায়, ওই দিন চম্পারণের চাকিয়া থেকে এক কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়। ওই কিশোরীর বাড়ি কুলিপাড়ার ধর্মনগরে। মাসখানেক আগে ওই কিশোরী ও তার বিবাহিতা দিদিকে ডাঙ্গিপাড়ার এক মহিলা কাজের টোপ দেখিয়ে চম্পারণে নিয়ে যায়। দিন দুয়েকের মধ্যে বিবাহিতা দিদি সেখান থেকে পালাতে পারলেও কিশোরীটি আটকে পড়ে। কিন্তু, ওই বধূর অভিযোগের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ। শিলিগুড়ির ডিএসপি সীতারাম সিংহ বলেন, “ওই ঘটনায় অসৎ উদ্দেশ্যে ফুঁসলে কিশোরী অপহরণের একটি মামলা করা হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করা হয়েছে।” প্রাথমিক ভাবে পুলিশের সন্দেহ, ওই চক্রের সঙ্গে শিলিগুড়ি ডাঙ্গিপাড়ার বাসিন্দা দম্পতি সোনু ও দিলীপ জড়িত রয়েছে। ওই দুজনের পুরো নাম তদন্তের স্বার্থে পুলিশ জানাতে রাজি নয়। তবে পুলিশ জানিয়েছে, দুজনেরই বিহারের চাকিয়াতে একটি বাড়ি রয়েছে। সেখানেই কিশোরীদের আটকে রাখা হয়। শিলিগুড়ি ও সংলগ্ন এলাকার বেশ কিছু কিশোরী সেখানে রয়েছে। এদিন শিলিগুড়ি আদালতের সামনে অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে শিউরে উঠছিল ১৫ বছরের কিশোরীটি। সে জানায়, একটি বাড়িতে ১২ জন কিশোরীকে আটকে রাখা হয়। সেখান থেকে তাদের বেরোতে হতে দেওয়া হয় না। একটি ঘরে চার জন করে কিশোরীর থাকার জায়গা রয়েছে। রাতে বিভিন্ন জলসায় ছয়-সাত জন কিশোরীকে নিয়ে যাওয়া হয়, অশ্লীল নাচ করতে বাধ্য করা হয় তাদের। দর্শকরাও ছিল ভয়ঙ্কর। প্রত্যেকে রাইফেলধারী। অনুষ্ঠান শুরু হতেই রাইফেল থেকে শূন্যে গুলি ছুড়ত তারা। গুলির শব্দে ভয় পেলেও কিছু করার ছিল না। ঠিকমতো নাচতে না পারলে মারধর করা হয় তাদের। একবার বিয়ের জলসায় ঠিকমতো নাচতে না পারার জন্য কিশোরীটিকে মারধর করা হয়। অবস্থা বুঝতে পেরে ওই বাড়ি থেকে পালানোর চেষ্টা করে সে। কিন্তু পাহারাদারদের হাতে ধরা পড়ে যায় সে। তাঁকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়। কিশোরীটি বলে, “এক মাসে ১২টি জলসায় নাচতে হয়েছে। টাকা হাতে কিছুই দেয়নি। শুধু দিনে ও রাতে ডাল, ভাত দিত। মোবাইল ফোনও কেড়ে নেওয়া হয়।” ওই কিশোরীরা ৫ বোন। মা আয়ার কাজ করেন। তিন মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। পরিচয়ের সূত্রে সোনু তাঁর দুই মেয়েকে ক্যাটারিংয়ের কাজ দেওয়ার কথা বলে বিহারে নিয়ে যায়। এ জন্য আগাম ৫ হাজার টাকাও দেয় সোনু। |
|
|
|
|
|