দ্বারকেশ্বর নদ থেকে ‘অবৈধভাবে’ জল তোলায় অভিযুক্ত কারখানার পাম্প মঙ্গলবার বন্ধ করে দিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রধান। ওই কারখানার বিরুদ্ধে ‘অবৈধ ভাবে’ জল তোলার বিষয়ে অভিযোগকারী স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশও ছিলেন প্রধানের সঙ্গে। তবে তাঁরা সম্পূর্ণ নিয়ম মেনেই জল তুলছেন, এই দাবি করে কারখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, পাম্প বন্ধ করার ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করা হবে।
ছাতনার ঝাঁটিপাহাড়ির স্পঞ্জ আয়রন, ফেরো অ্যালয়-সহ ১২ ধরনের পণ্য উৎপাদনকারী ওই কারখানা কাঁকি গ্রামে দ্বারকেশ্বর নদের চর থেকে চারটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পাম্পের সাহায্যে বছর পাঁচেক ধরে জল তুলছে। সেই জল কারখানার কাজে ব্যবহার করা হয়। ‘আইনি জন অধিকার রক্ষা ও দুর্নীতি, হিংসা প্রতিরোধ কমিটি’ নামে একটি সংগঠনের জেলা সভাপতি রাহুল সেন বাঁকুড়ার জেলাশাসক মহম্মদ গুলাম আলি আনসারির কাছে অভিযোগ করেন, কারখানা কর্তৃপক্ষ ওই খরা-প্রবণ এলাকা থেকে ‘অবৈধভাবে’ জল তুলছেন।
গত ২৪ মে রাজ্য জল অনুসন্ধান দফতরের (সুইড) বাঁকুড়া বিভাগের সিনিয়ার জিওলজিস্ট রঞ্জিত সাহা ঘটনাস্থলে গিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে জল তোলার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় অনুমতিপত্র তলব করেন। রঞ্জিতবাবু জানিয়েছেন, সুইডের কাছ থেকে ওই কারখানা কর্তৃপক্ষ দ্বারকেশ্বর নদ থেকে জল তোলার ব্যাপারে কোনও অনুমতি নেননি। অভিযোগের তদন্ত করা হচ্ছে।
এ দিন দুপুরে রাহুল সেনের নেতৃত্বে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ স্থানীয় আড়রা পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান সনাতন টুডু এবং উপ-প্রধান শিবপ্রসাদ মণ্ডলকে কাঁকিতে ডেকে আনেন। প্রধান পাম্পগুলি বন্ধ করে দেন। পরে বলেন, “ওই কারখানা কর্তৃপক্ষ নদ থেকে জল তোলার সময় আমাদের পঞ্চায়েতের সঙ্গে চুক্তি করেছিল পাল্লাগ্রামে নদের উপর ‘ চেকড্যাম’ তৈরি করে দেবে। তারা কথা রাখেনি। তাই জল তোলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”
অন্য দিকে কারখানার সিনিয়ার জেনারেল ম্যানেজার পৃথ্বীশকুমার মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “চেকড্যাম তৈরির জন্য সরকারি অনুমতি পঞ্চায়েতের নেওয়ার কথা ছিল। তারা তা নেয়নি বলেই আমরা চেকড্যাম তৈরির জন্য টাকা খরচ পারিনি। তাছাড়া, সেখানে একটি কাঁচা চেকড্যাম তৈরি করা হয়েছে। চারটি গ্রামে পানীয় জলের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। পাশাপাশি সোমবার জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করে আমরা জল তোলার ব্যাপারে সরকারি অনুমতিপত্র জমা দিয়েছি। এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত প্রধান পাম্পগুলি বন্ধ করে ঠিক কাজ করেননি। আমরা ছাতনা থানায় অভিযোগ জানাব।” জেলাশাসক বলেন, “কারখানাটির নদ থেকে জল তোলার ব্যাপারে সুইডের তদন্ত শেষ হয়নি। তদন্ত শেষেই এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট ভাবে কিছু বলা যাবে।” |