মঙ্গলবার বিকেলে আধ ঘণ্টার ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেল বনগাঁ মহকুমার বেশ কিছু এলাকা। ঝড়ের দাপটে উপড়ে যায় বেশ কিছু বড় বড় গাছ। বেশ কিছু ঘরবাড়ির মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে অন্ধকারে ডুবে গিয়েছে বেশ কিছু এলাকা। বিভিন্ন জায়গায় গাছ পড়ে, পাঁচিল ভেঙে পড়ে দু’জন মারা গিয়েছেন। মৃতদের মধ্যে এক বৃদ্ধাও রয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে। একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এ ছাড়া এ দিন ঝড়ে গাছ পড়ে বেশ কিছুক্ষণ যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় যশোহর রোডে। ফলে যানজটের কবলে পড়েন অফিস ফেরতা বহু নিত্যযাত্রী। আটকে পড়ে পেট্রাপোলমুখী পণ্যবোঝাই অনেক লরিও। ওভারহেডের তার ছিঁড়ে ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হয় বনগাঁ-শিয়ালদহ শাখায়।
মঙ্গলবার বিকালে ৫টা নাগাদ ঝড়ের জন্য হাবরা ও অশোকনগর স্টেশনের মধ্যে ওভারহেডের তার ছিঁড়ে যায়। এর জন্য বেশ কিছুক্ষণ ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে ওই শাখার আপ ও ডাউন লাইনে। পরে রাতের দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেল ৪টে থেকে সাড়ে ৪টে পর্যন্ত আধঘণ্টা ধরে প্রবল ঝড় শুরু হয় বনগাঁ মহকুমার গাইঘাটার ধর্মপুর, মাটিকুমড়া, খড়ুয়ারাজাপুর, মধ্যরামপুর এবং গোপালনগর থানার রসুলপুর, ভান্ডারখোলা প্রভৃতি এলাকায়। ঝড়ের তাণ্ডবে ভেঙে পড়ে বেশ কিছু বড় বড় গাছ। উপড়ে পড়ে বিদ্যুতের খুঁটি। ফসলেরও ক্ষতি হয়েছে। বেশ কিছু বাড়িঘরের আংশিক এবং সম্পূর্ণ ক্ষতি হয়েছে।
গাইঘাটার মধ্যরামপুরের বাসিন্দা নগরবাসী মণ্ডল (৫২) ঝড়ের সময়েই মাঠে ছাগল আনতে গিয়েছিলেন। ঝড় থেকে বাঁচতে একটি হিমঘরের পাঁচিলের ধারে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। আচমকা পাঁচিলটি তাঁর উপরে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
গাইঘাটারই ধর্মপুর দাসপাড়ার বাসিন্দা জবারানি দাস (৬৫) ঝড়ের সময় মেয়ের সঙ্গে ঘরে শুয়েছিলেন। ঝড়ের দাপটে ঘরের পাশেই একটি মেহগনি গাছ ঘরের উপরে ভেঙে পড়ে। ঘটনাস্থলেই মারা যান জবাদেবী। মেয়েকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ ছাড়াও রামপুরের বাসিন্দা বীরেন সদার্র, লিচুমনি সর্দার ঝড়ের সময় গাছের ডাল ভেঙে জখম হন। মাটিকুমড়া গ্রামে ঝড়ে গোবরডাঙা পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলার শম্ভূ মণ্ডলের পোলট্রির ঘর ভেঙে প্রচুর মুরগি মারা গিয়েছে। বহু জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে, তার ছিঁড়ে যাওয়ায় অন্ধকারে ডুবে যায় এলাকা। অনেক রাত পর্যন্ত বহু এলাকাতেই বিদ্যুৎ সংযোগ আসেনি। |