|
|
|
|
পাম্পহাউস তৈরি, রয়েছে খুঁটিও বিদ্যুতের অভাবে শুরু হয়নি সেচের কাজ |
দয়াল সেনগুপ্ত ² দুবরাজপুর |
জমিতে সেচের জন্য যখন একগুচ্ছ সাবমার্সিবল পাম্প বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল তখন খুব খুশি হয়েছিলেন দুবরাজপুরের ছোটগুনসীমা মৌজার কৃষকেরা। সময়টা ২০০৮ এর প্রথম দিক। এরপর একে একে সাবমার্সিবল গুলির জন্য খনন কাজ শেষ হয়। তৈরি হয় পাম্প ঘর। বিদ্যুতের খুটিও পোতা হয়ে গিয়েছে বছর দেড়েক আগে। অথচ, শুধুমাত্র বিদ্যুৎ সংযোগের অভাবে তাঁদের সেচের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে দেখে রীতিমতো ক্ষুব্ধ এলাকার চাষিরা। তাঁদের অভিযোগ, “বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ার জন্য বহুবার সংশ্লিষ্ট দফতরে যোগাযোগ করা হয়েছে। বারবার অনুরোধ করা হয়েছে জেলা পরিষদের বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষকে। কিন্তু ফল পাওয়া যায়নি।” কীভাবে সংযোগ পাওয়া যাবে বা পেলেও তা কতদিন পরে পাওয়া যাবে সেটা নিয়ে উদ্বিগ্ন তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুবরাজপুর ব্লকের পদুমা পঞ্চায়েতের ছোটগুনসীমা মৌজার ওই প্রকল্প শুরু হলে তা থেকে লাভবান হবেন পদুমা পঞ্চায়েতের গুনসীমা, ভগবতীপুর, আরোয়া এবং সাহাপুর পঞ্চায়েতের যাত্রা গ্রামের বহু চাষি। ওই প্রকল্পের অধীনে মোট ছ’টি সাবমার্সিবল বসানোর কথা। তার মধ্যে একটির খননকার্য সফল হয়নি। বাকি পাঁচটি সাবমার্সিবলের জন্য ‘বোরিং’ হয়ে গিয়েছে। প্রত্যেকটির বাড়ি বা পাম্প হাউস তৈরির কাজ শেষ হয়েছে ২০০৯ সালের মধ্যেই। এরপর খুঁটিও পোতা হয়। কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগ না আসায় জমিতে সেচ দেওয়ার ভাবনা আপাতত বিশ বাঁও জলে। |
|
নিজস্ব চিত্র। |
গুনসীমা গ্রামের খিলাফত খাঁ, যাত্রা গ্রামের মনিরুল হক বা শেখ আলাউদ্দিনরা বলেন, “সব কাজ শেষ হওয়ার পরেও কেন বিদ্যুৎ সংযোগ পাচ্ছিনা তার কোনও সদুত্তর কোথাও পাইনি। জেলা পরিষদ, কৃষি দফতর, বিদ্যুৎ দফতর কেউ স্পষ্ট করে কিছু বলছে না। বারবার এ বিষয়ে সিউড়ি গিয়ে তদ্বির করা সময় ও অর্থ সাপেক্ষ। তা সত্ত্বেও, আমরা সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিতে গিয়েছি। কিন্তু কাজ হয়নি।” খিলাফত, মনিরুলদের আরও ক্ষোভ, একই সময়ে শুরু হওয়া ওই প্রকল্প অন্য জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়ে গিয়েছে। সেচের জন্য প্রয়োজনীয় জল পেতেও শুরু করেছেন ওই এলাকার চাষিরা।” স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রকল্পটি সফল হলে বর্ষাকালে প্রায় ৩০০ একর এবং গ্রীষ্মকালে ৬০-৮০ একর জমিতে চাষ করা সম্ভব। চাষিদের আরও ক্ষোভ, পাশের গ্রামের বাসিন্দা হওয়া সত্ত্বেও এবং জেলা পরিষদের বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ সিপিএমের সাধন ঘোষকে বলা হলেও তিনি দেখছি দেখব বলে এড়িয়ে গিয়েছেন।
যদিও চাষিদের আনা অভিযোগ মানেননি সাধনবাবু। তিনি বলেন, “অনিচ্ছার কোনও প্রশ্নই নেই। সব কিছুই একটা পদ্ধতি অনুযায়ী হয়। একটি নির্দিষ্ট সময় লাগে। এই প্রকল্পে তিনটি ধাপ আছে। একটি বোরিং বা খনন। দুই, পাম্প হাউস তৈরি করা। তিন, বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার জন্য খুঁটি পোতা। সেটাও সম্পূর্ণ। এখন শুধু বিদুৎ সংযোগ দেওয়ার কাজ বাকি।” সাধনবাবুর দাবি, “জেলার বিভিন্ন অংশে এই ধরনের প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে যেটা সমস্যা, তা হল বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা সংশ্লিষ্ট কৃষককে দেওয়ার কথা। সেটা না দেওয়ায় বা জোগাড় করতে না পারার জন্যই বিদ্যুত সংযোগ পাওয়া যায়নি।” সাধনবাবু জানিয়েছেন, “সেই সব ক্ষেত্রে জেলা পরিষদ ওই অর্থের বন্দোবস্ত করে ফেলেছে। সেটা জমা পড়লেই বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া যাবে। চালু হবে সাবমার্সিবলগুলি।” |
|
|
|
|
|