জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতরে স্থায়ী কর্মীর অভাবে উত্তর দিনাজপুর জেলার স্কুলগুলিতে পঠনপাঠন থেকে মিড ডে মিলে নজরদারি ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ। দু’দশকের বেশি জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতরে স্থায়ী কর্মী নিয়োগ হয়নি বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। যার জেরে দফতরে এখন বিদ্যালয় পরিদর্শক ছাড়া অন্য স্থায়ী পদে কোনও কর্মী-আধিকারিক নেই। বর্তমানে অতিরিক্ত জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক-সহ ৮টি গুরুত্বপূর্ণ পদ ফাঁকা পড়ে রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
৩১ ডিসেম্বর এক সহ বিদ্যালয় পরিদর্শকের অবসরের পর থেকে দফতরে স্থায়ী কর্মী বা আধিকারিক বলতে শুধুমাত্র জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক সুবল সাহু। দৈনন্দিন কাজকর্ম চালাতে সর্বশিক্ষা মিশনের এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মী, কালিয়াগঞ্জ পুরসভার এক সহকারি বিদ্যালয় পরিদর্শক এবং এক জন ডেটা এন্ট্রি অপারেটরকে অস্থায়ী ভাবে কাজ করানো হচ্ছে। সুবলবাবু জানিয়েছেন, এক বছরে একাধিক বার কর্মী অভাবের কথা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। রাজ্যের শিক্ষা সচিব ও কমিশনারকেও চিঠি পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, “কর্মীর অভাবে দীর্ঘদিন ধরে জেলার ৯টি ব্লকের ১৭টি সার্কেলের ১৪৮৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নজরদারিতে কিছু সমস্যা তো হচ্ছেই। কোন স্কুলে পাঠক্রম শেষ হয়নি, অথবা স্কুলগুলির মিড ডে মিল কেমন ভাবে চলছে তাতে নজরদারি করা সম্ভব হচ্ছে না।”
জেলার প্রাথমিক শিক্ষকদের অভিযোগ, জেলা পরিদর্শকের দফতরে কর্মী সঙ্কটের জেরে প্রশাসনিক কাজ থমকে। নথি তৈরি, অবসরপ্রাপ্তদের পেনশনের কাগজপত্র তৈরি, রিপোর্ট পাঠানো, বদলি নিয়ে অভিযোগের নিষ্পত্তির মতো সমস্যাগুলিও দ্রুত সমাধান হচ্ছে না। সুবলবাবু নিজেই জানিয়েছেন, জেলার বেশ কিছু স্কুলে মিড ডে মিল যথাযথ ভাবে চলছে না অভিযোগ থাকলেও নজরদারি চালানো যাচ্ছে না। জেলাশাসক স্মিতা পান্ডে বলেন, “জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকের সঙ্গে কথা বলে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী দ্রুত উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
১৯৯২ সালে পশ্চিম দিনাজপুর ভেঙে উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা গঠনের পর ১৯৯৩ সালে কর্ণজোড়ায় উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতর তৈরি হয়। ১৯৯৪ সালে বালুরঘাট থেকে ৮ জন কর্মীকে বদলি করে ওই দফতরে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ ছাড়া ওই দফতরে স্থায়ী কর্মী নিয়োগ হয়নি বলে অভিযোগ। রাজ্যের পরিষদীয় সচিব তথা ইটাহারের বিধায়ক অমল আচার্য শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে বলে জানিয়ে, দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। |