বর্ষা সুদূর। তবে পদ্মায় মাঝে মধ্যে এখনও মাঝি-মল্লার জালে উঠে আসছে ইলিশ। সীমান্ত উজিয়ে চোরাপথে তা ঢুকছে এ বাংলার বাজারেও।
কোচবিহারে সান্ধ্য বাজারে চকচকে সেই রুপোলি শস্য ঘিরে জমে উঠছে ভিড়। কেজি প্রতি দাম প্রায় হাজার টাকা। তাতে কি বাজারে সে মাছ পড়তেই পারছে না। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, নিয়ম মাফিক সীমানা পেরিয়ে নয়, গীতালদহ সামান্তে দিয়ে সেই ইলিশ ঢুকছে কাঁটাতারের বেড়া এড়িয়ে কাগজ-কলাপাতায় মুড়ে।
বিএসএফের কর্তারা অবশ্য চোরা পথে ইলিশ-অনুপ্রবেশ অস্বীকার করে। বিএসএফের ডিআইজি দলবীর সিংহ সাঁধু বলেন, “গীতালদহ এলাকা দিয়ে মাছ পাচারের খবর পাইনি তো। তবে আমরা সজাগ আছি। সীমান্তরক্ষীদের সতর্কও করা হয়েছে।” কোচবিহারের তিন দিক ঘিরে বাংলাদেশ সীমান্ত। তবে, মাথাভাঙা বা তুফানগঞ্জ নয়, ইলিশ ঢুকছে দিনহাটা ও মেখলিগঞ্জের সীমান্ত দিয়ে। এমনই অভিযোগ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। তাঁরা জানান, দিনহাটার সীমান্ত উজিয়ে গীতালদহ, শালমারা, চৌধুরীহাট বা সিতাই এলাকার বাজারে সন্ধেয় খোঁজ নিলে মিলছে ইলিশ।
এলাকার বাসিন্দাদের অনেকে জানান, গীতালদহ বাজার থেকে হাটা পথে দুই কিলোমিটার গেলেই ধরলা নদী। সে নদীর পাশেই বিএসএফের চৌকি। নদী পার হয়ে দিনহাটার জারিধরলা, দরিবস গ্রাম সেখানে কোনও কাটাতারের বেড়া নেই। শুধু সীমানা নির্ধারনের জন্য রয়েছে কয়েকটি সিমেন্টের খুঁটি। পাশেই বাংলাদেশের দুর্গানগর, লাগোয়া মোগলহাট, লালমনিরহাট। সে এলাকায় বিএসএফের নজরদারি নেই বললেই চলে। বাংলাদেশের সীমান্তে রক্ষীদেরও তেমন কড়াকড়ি নেই। সপ্তাহে দুই দিন শনিবার ও মঙ্গলবার লালমনির হাট হয়। সে হাটে পা রাখলে প্রায়ই মিলছে ইলিশ। কোচবিহারের কয়েকটি হোটেলেও বাংলাদেশের ইলিশের প্লেট মিলছে। তেমনই একটি হোটেলের ম্যানেজার কবুল করেন, “খুব ঘন ঘন নয়, তবে বাংলাদেশ থেকে মাঝে মধ্যেই ইলিশ মিলছে। দাম কিঞ্চিৎ বেশি। বাধ্য হয়ে আমাদেরও সেই সব ইলিশের পদের দাম বাড়িয়ে দিতে হয়েছে।” |