দুই গোষ্ঠীর সর্ংঘষের জেরে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল। বৃহস্পতিবার সকালে কালিয়াচক থানার নওদা যদুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাগলপুর বাসস্ট্যান্ডে ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত যুবকের নাম গফ্ফর মোমিন (২২)। তাঁর মাথায় গুলি লেগেছিল। তাঁকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনার পথে মৃত্যু হয়। ঘটনার প্রতিবাদে সাড়ে এগারোটা থেকে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু কংগ্রেস। পুলিশ অপরাধীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধরার আশ্বাস দিলে তিন ঘণ্টা পর অবরোধ ওঠে। অবরোধের জেরে জাতীয় সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। জেলা পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, “অভিযুক্তদের ধরতে তল্লাশি চলছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি তৃণমূল কংগ্রেসের প়ঞ্চায়েত সদস্য জাকির শেখে দলবল নিয়ে কংগ্রেস যোগ দিয়েছেন। এর পর থেকে দুটি গোষ্ঠীর গোলমাল শুরু হয়েছে। নিগত যুবক চপ ঘুগনির দোকানদার ছিলেন। নিহত যুবকের বাবা মহিবার মোমিন বলেন, “দুই পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হতেই ছেলে দোকান বন্ধ করে বাড়ি পালাচ্ছিল। তখন একটা গুলি ছেলের মাথায় লাগে। মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে আসার পথে ছেলে মারা যায়।” |
জেলা কংগ্রেস সভাপতি মৌসম বেনজির নূরের অভিযোগ, “নওদা যদুপুরে গত পঞ্চায়েত নিবার্চনে কংগ্রেস একটি আসনেও প্রার্থী দিতে পারেনি। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূল পঞ্চায়েত দখল করেছিল। সম্প্রতি তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য জাকির শেখের নেতৃত্বে ওখানকার কিছু যুবক কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। তার পরেই স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা কংগ্রেসিদের উপর হামলা শুরু করেছে।” তাঁর দাবি, কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকদের দেখে এ দিন ওই দুষ্কৃতীরা গুলি চালাতে থাকে। তাতেঈই নিরীহ ওই যুবক মারা যান। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী তথা মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র। তিনি বলেন, “জাকির শেখকে আমরা কিছুদিন আগে দল থেকে বার করে দিয়েছি। এখন ও কংগ্রেসে নাম লিখিয়ে এলাকায় সন্ত্রাস করছে। এ দিন স্থানীয় বাসিন্দারা জাকিরদের তাড়া করেছিল। সেই সময় ওরা এলোপাথাড়ি গুলি চালায় তাতেই ওই দোকানদারের মৃত্যু হয়।”
তৃণমূল সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর নওদা যদুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান কে হবে তা নিয়ে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি বকুল শেখের সঙ্গে জাকির শেখের গোলমাল শুরু হয়। বকুল শেখের ভাইয়ের স্ত্রী ফারানা বিবিকে প্রধান করা হয়। তার পর থেকে দু’পক্ষের মধ্যে টানাপোড়েন আরও বাড়তে থাকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, “এ দিন ওই দুই পক্ষের মধ্যেই গোলমাল হচ্ছিল।” এ দিন বকুল শেখ বলেন, “আমাকে মারার জন্য জাকির দলবল নিয়ে হামলা করেছিল। পাল্টা গ্রামবাসীরা তাড়া করলে ওরা গুলি চালাতে চালাতে পালায়।” আর জাকির শেখের পাল্টা অভিযোগ, “আমার নেতৃত্বে এলাকার লোকজন তৃণমূল ছেড়েছে। এতেই বকুলরা ক্ষেপে নিয়ে আমাকে খুন করতে হামলা করেছিল।” |