|
|
|
|
|
ইউরোপ জুড়ে আতঙ্কের নাম বিবিসি |
মহাজুটিদের মধ্যে এক নম্বর রোনাল্ডো-বেলই
সুব্রত ভট্টাচার্য
রিয়াল মাদ্রিদ-৬ (বেঞ্জিমা-২, বেল-২, রোনাল্ডো-২)
শালকে-১ (হুন্টেলার) |
|
রিয়াল মাদ্রিদের হাফডজন গোল রাত জেগে দেখার পর সাধারণ ফুটবলপ্রেমীদের মতো আমিও খুব উত্তেজিত। তবে নিজের সামান্য ফুটবল খেলার অভিজ্ঞতা থেকে এ-ও বুঝছি, যতই জার্মান টিম হোক, শালকে দলগত শক্তি, ব্যক্তিগত নৈপুণ্য, গতি, স্কিলমানে ফুটবল খেলতে হলে যা-যা দরকার সবেতে রিয়ালের চেয়ে অনেক পিছিয়ে। ইন্টারনেটে দেখছিলাম, জার্মানির মাটিতে রিয়ালের এটা মাত্র দ্বিতীয় জয়! এমনকী ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নক আউট পর্বে কোনও অ্যাওয়ে দলের এটাই সর্বোচ্চ গোলে জয়!
আসলে যে মারাত্মক গতিতে নিজেদের ডিফেন্স থেকে আক্রমণ তৈরি করছিল র্যামোস, জাভি আলোন্সো, মার্সেলোরা, থার্ডম্যান মুভ কিংবা মিডল থার্ড থেকে অ্যাটাকিং জোনে মুহুর্মুহু পৌঁছে যাচ্ছিল কার্বাজাল, বেঞ্জিমা, মডরিচ, ইস্কোরা, তাতে এই সব বোমা নিক্ষেপের সঙ্গে রোনাল্ডো-বেলের মহাজুটির মারাত্মক স্কিলের সামনে পড়ে শালকের টিপিক্যাল জার্মান লড়াইও উধাও। |
কমলা রিয়ালের দিনে। ছবি: এএফপি। |
ম্যাচে সাতটা গোলের ছ’টা করেছে বেঞ্জিমা-বেল-রোনাল্ডো ত্রিভুজ, কিন্তু আমার কাছে সেরা শালকের হুন্টেলারের ইনজুরি টাইমে দুর্ধর্ষ ভলিতে করা একক দক্ষতায় গোলটা। ওটা হল ব্যক্তিগত দক্ষতার জ্বলন্ত প্রমাণ। কিন্তু রিয়ালের দলগত নৈপুণ্য আর গতি সত্যিই দেখার মতো। বেল নিজের প্রথম গোলটা করল অনেকগুলো পাস খেলা হওয়ার পর দু’পায়ের ডজে শালকে ডিফেন্স অসহায় করে দিয়ে। একবার ডান পায়ে ইনসাইড করছে তো পরক্ষণে বাঁ পায়ে ইনসাইড! বিপক্ষের একসঙ্গে দু’জন কেটে যাচ্ছে। এবং সবশেষে বাঁ পায়ের আউটসাইডে গোল। যে জন্য বলটা অতটা কাটল আর বেল ফার্স্ট পোস্ট-টু ফার্স্ট পোস্ট গোল করে গেল। দ্বিতীয় গোলটা আবার ওর প্রচণ্ড গতির ফসল। রোনাল্ডোর আবার গত রাতের দুটো ধরে এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১১টা গোল হয়ে গেল ‘রাউন্ড অব সিক্সটিন’ শেষ না হতেই। গত রাতেও দু’টো গোল করার পাশাপাশি দু’টো গোল করাল।
বার্সেলোনার চেয়ে রিয়ালের যেটা বেশি ভাল লাগে আমার তা হল, অনেক কম পাস খেলে গোলের জায়গায় পৌঁছে যেতে পারাটা। অনেক বেশি ডাইরেক্ট পাস। এই ম্যাচটার কথাই ধরা যাক। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ওয়েবসাইটে দেখলাম, বল পজেশনে ৫৭-৪৩ এগিয়ে ছিল রিয়াল। সাতান্ন পার্সেন্ট বল পজেশনেই হাফডজন গোল! যেখানে কখনও-সখনও প্রায় আশি শতাংশ বলের উপর দখল রেখেও দু-তিন গোলের বেশি করে না মেসি-নেইমারের বার্সা। সোজা কথা, অনেক সময় অনাবশ্যক বেশি স্কোয়ার আর ব্যাকপাস খেলে যেখানে বার্সেলোনা, সেখানে রিয়াল ব্যাকপাস খেললে সেটার মধ্যেও থাকে পরের সেকেন্ডেই আক্রমণ তৈরির রাস্তা। শালকে ম্যাচে লেফট ব্যাক মার্সেলো-ও বারবার আক্রমণে যোগ দিচ্ছিল।
জার্মানির মাঠেও রিয়াল-ঝড় ওঠায় ইউরোপিয়ান ফুটবল মহলে নাকি দি’স্তেফানো, পুসকাস, জেন্টোরিয়ালের সেই বিখ্যাত ত্রয়ীর যুগের সঙ্গে রোনাল্ডো-বেল-বেঞ্জিমা ত্রিভুজের তুলনা শুরু হয়ে গিয়েছে। আমার প্রশ্নই নেই এই আলোচনায় ঢোকার। শুধু বলব, রোনাল্ডোর অসাধারণত্ব প্রশ্নাতীত। বেল টিপিক্যাল ব্রিটিশ ফুটবলের গতি আর ওর ড্রিবলিং ক্ষমতা নিয়ে ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে স্প্যানিশ ক্লাবেও। আগামী দিনে হয়তো আরও ভয়ঙ্কর দেখাবে। কিন্তু বেঞ্জিমার একে অত গতি নেই। তা ছাড়া ছেলেটা শুধুই ডান পায়ের ফুটবলার।
তবে হ্যাঁ, মেসি-নেইমার আর রোনাল্ডো-বেল, দুই মহাজুটির মধ্যে এই মুহূর্তে রিয়াল জুটিকেই বেশি ভয়ঙ্কর লাগছে। |
|
|
|
|
|