|
|
|
|
পূণ্যার্থীর ঢল চপলেশ্বরে
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
শিবরাত্রির বিশেষ পুজোয় পুণ্যার্থীর ঢল নামল চপলেশ্বর মন্দিরে। ডেবরা ব্লকের বালিচকের অদূরে কেদারমেলার ওই মন্দির প্রায় সাতশো বছরের প্রাচীন। বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই ডেবরা ব্লকের বালিচকের অদূরে কেদারমেলার ওই মন্দিরে পূণ্যার্থীদের ভিড় জমাতে শুরু করেন। শিবরাত্রি উপলক্ষে ১৫ দিন ব্যাপী মেলা শুরু হয়েছে গত মঙ্গলবার থেকে। পূণ্যার্থীদের উপচে পড়া ভিড় দেখে উচ্ছ্বসিত মন্দির কমিটির সেবায়েতরা।
কথিত রয়েছে, ১২৯৭ খ্রিস্টাব্দে গুজরাতে আলাউদ্দিন খলজির আক্রমণে রাজত্ব হারিয়ে সোলাঙ্কি রাজা দেবনাথ দেশের নানা প্রান্ত ঘুরে এই এলাকায় এসেছিলেন। তখন মেদিনীপুর ওড়িশার অন্তর্গত। দেবনাথ ওড়িশার জগন্নাথ মন্দিরের আশ্রয় নেন। এক রাতে তিনি স্বপ্নাদেশ পান। মহাদেব তাঁর স্বপ্নে আবির্ভূত হয়ে জানান, মেদিনীপুরের কেদারকুণ্ডু পরগনায় পশ্চিমী চুয়াড়দের অত্যাচার থেকে সামন্ত রাজাদের রক্ষা করতে হবে। সেই মতো দেবনাথ আসেন অধুনা কেদারমেলায়। যুদ্ধ করে ৭১৩ জন চুয়াড়ের মুণ্ডচ্ছেদ করেন। পরে স্থানীয় সামন্তরা ১০০ বর্গ কিলোমিটার জায়গা দিয়ে তাঁকে বীরসিংহ রাজার সম্মান দেন। দেবনাথ জলাশয়ের মধ্যে বিশালাকার শিবলিঙ্গ খুঁজে পান। সেই জলাশয়ের ধারে উঁচু জমিতে ১২৯৯ সালে তিনি গড়ে তোলেন চপলেশ্বর শিব মন্দির। |
ডেবরার চপলেশ্বর শিব মন্দির।—ফাইল চিত্র। |
এই মন্দিরে মকরসংক্রান্তিতে বিশেষ পুজো ও ১৫দিন ব্যাপী মেলার সূচনা করেন তিনি। ওড়িশা থেকে মন্দির রক্ষণাবেক্ষণে ১১ জন পুরোহিত নিয়ে আসেন। ১৩৫৫ সালে বাংলার নবাব সামসুদ্দিন ইলিয়াসের আক্রমণে রাজা দেবনাথের মৃত্যু হয়। সেই পুরোহিতদের উত্তরসূরী ২৫ জন সেবায়েতই এখনও এই উৎসবের আয়োজন করেন। তবে মকর সংক্রান্তিতে একদিন মেলা বসে। আর উৎসব হয় শিবরাত্রিতে। মন্দিরের সেবায়েত অসিত পণ্ডা বলেন, “দোকানিরা মকর সংক্রান্তির সময় আসতে না চাওয়ায় এক দিনের বেশি মেলা চালানো যায় না। মকর সংক্রান্তির মেলা প্রাচীন হলেও শিবরাত্রির উৎসব কম জনপ্রিয় নয়।” এ দিন দুপুরের পর থেকে চপলেশ্বরের মাথায় জল ঢেলেছেন বহু পুণ্যার্থী। রঘুনাথপুরের জ্যোৎস্না শী, হরিপুরের মঞ্জুশ্রী মাইতিরা বলেন, “গ্রামে বহু মন্দির রয়েছে ঠিকই। কিন্তু এত প্রাচীন নয়। তাই বাড়ি থেকে দূরে হলেও প্রতি বার শিবরাত্রিতে চপলেশ্বরের মন্দিরেই পুজো দিতে আসি।” |
|
|
|
|
|