শুধু ‘ইন্ডিয়া’-র বাজার নয়। চাই ‘ভারত’-এর বাজারও।
দু’টি বাজারের মধ্যে এখনও ইংরেজি ভাষার দেওয়াল রয়েছে। দেশের মোট জনসংখ্যার দশ ভাগের মাত্র এক ভাগ ইংরেজি জানেন।
শুধুমাত্র ওই এক ভাগ বাজার দিয়ে যে ব্যালান্স শিটের চেহারা ঝকঝকে হবে না, তা বুঝছে দেশি-বিদেশি সব সংস্থাই। তাই বাকি ন’ভাগ বাজার ধরতে এ বার ঝাঁপাচ্ছে কোরীয় সংস্থা স্যামসাং। মোবাইল বিক্রি বাড়াতে আঞ্চলিক ভাষার ‘কনটেন্ট’ বা বিষয় বাজি ধরছে তারা।
এ পথে আগেই পা রেখেছে ইন্টারনেট প্রযুক্তির সঙ্গে জড়িত সংস্থাগুলি। আঞ্চলিক ভাষা-ভাষীদের নিজেদের গ্রাহক করতে বহু দিন ধরেই নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছে গুগ্ল। আঞ্চলিক ভাষায় ই-মেল চালাচালিতে জোর দিয়েছে ইয়াহু ইন্ডিয়াও। |
স্যামসাঙের গ্যালাক্সি নোট-প্রো। প্রদর্শনে বিনীত তানেজা। ছবি: পিটিআই। |
তার পর বাজার ধরার চাবিকাঠি যে আঞ্চলিক ভাষা, তা বুঝতে দেরি করেনি মোবাইল ফোন নির্মাতারাও। কারণ বিক্রির হার বাড়াতে ছোট শহর ও গ্রামাঞ্চলের অসংখ্য গ্রাহকের দিকে নজর দিতেই হবে বলে দাবি তাদের। এবং সেই বাজারকে পাখির চোখ করে স্যামসাং আঞ্চলিক ভাষার উপরেই জোর দিচ্ছে। ভারতে সংস্থার মোবাইল ফোন বিভাগের প্রধান বিনীত তানেজা বলেন, “তথ্য বা ডেটার হাত ধরেই মোবাইল দুনিয়ায় পরবর্তী বিপ্লব আসবে। সেই তথ্যের সদ্ব্যবহার করতে ভাষার ভূমিকা অপরিসীম।” ওই লক্ষ্যেই মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন নির্মাতাদের সঙ্গে একজোট হয়ে কাজ করছে সংস্থা।
মোবাইল এখন স্রেফ যোগাযোগের মাধ্যম নয়, গান শোনা এবং সিনেমা দেখার যন্ত্র তো বটেই, সেই
সঙ্গে অবশ্যই যাবতীয় ‘সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং’-এর সদস্যপদ টিকিয়ে রাখার জোরালো মাধ্যম। আর এ সবের জন্য ‘মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন’ (অ্যাপ) জরুরি।
তাই শুধুই হ্যান্ডসেট বিক্রি করে ব্যবসা বৃদ্ধি নয়। গান ও সিনেমা ডাউনলোড করা ও তা হ্যান্ডসেটে সংরক্ষণ করে রাখা - এ সবই বিবিধ ‘অ্যাপ্লিকেশন’-এর হাত ধরে করা যায়। সেই বাজারের জন্যই মোবাইল ও মোবাইল পরিষেবা সংস্থাগুলি নিত্যনতুন অ্যাপ আনছে। ক্রেতাদের মন বুঝে ‘কনটেন্ট’ অর্থাৎ বিষয় জোগান দিচ্ছে তারা। এবং সেই কনটেন্ট-এর ভাষা হতে হবে আঞ্চলিক। তানেজা জানান, ইতিমধ্যেই হিন্দি, বাংলা, মরাঠি-সহ ন’টি ভাষায় ব্যবহার করা যায় সংস্থার তৈরি বেশ কিছু মোবাইল। তাঁর দাবি, এ বার স্মার্টফোন থেকে শুরু করে কম দামি ফোন, সবেতেই আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহারের সুযোগ দিতে চায় সংস্থা। সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়ার বালিতে স্যামসাং-এর আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতেও উঠেছে আঞ্চলিক ভাষার গুরুত্ব। এই ভাষাকে প্রাধান্য দিয়েই স্যামসাং তৈরি করেছে নিজস্ব তথ্যভাণ্ডার স্যামসাং ক্লাব। |