সৌমিত্র কুন্ডু • শিলিগুড়ি |
অন্য দিকে, শহরে হিলকার্ট রোড, এসএফ রোড, মহানন্দা সেতু লাগোয়া বর্ধমান রোড, সেবক রোডের একাংশ-সহ প্রধান রাস্তাগুলিতে পুরসভার তরফে ১৩টি পার্কিং জোন চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই সব জোনের মধ্যে বড় হোটেল বা দোকানগুলির একাংশ তাদের সামনে পার্কিংয়ের জায়গা অবৈধভাবে আটকে রাখছে বলে অভিযোগ। পার্কিংয়ের বরাত পাওয়া ঠিকাদারদের টাকা দিয়ে হোটেল বা দোকানের সামনে পার্কিং জোনের অংশ অবৈধ ভাবে ‘কিনে’ রাখা হচ্ছে। অভিযোগ পেয়ে সম্প্রতি হিলকার্ট রোড, সেবক রোডের একাধিক জায়গায় পুরসভার তরফে অভিযান চালানো হয়। তবে পুরসভার কর্মীদের কাছে পার্কিংয়ের বরাত পাওয়া ঠিকাদার বা ব্যবসায়ীদের কেউ বিষয়টি স্বীকার করতে চাননি। তা হলেও বাস্তবে তা যে চলছে তা ভুক্তভোগীদের অনেকেই পুরসভায় জানিয়েছেন। পুরসভার ট্রেড লাইসেন্স বিভাগে মেয়র পারিষদ হিসাবে পার্কিং বিষয়টি দেবশঙ্করবাবুকে দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছিলেন মেয়র। গত সোমবার থেকে দেবশঙ্করবাবু ট্রেড লাইসেন্স ছেড়ে ইউপিএ দফতরের দায়িত্ব পেয়েছেন। এখন থেকে পার্কিং বিষয়টি মেয়র নিজেই দেখভাল করবেন বলে জানিয়েছেন। মেয়র বলেন, “অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখা হবে।” তবে পুরসভা এর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেবে তা তিনি স্পষ্ট করেননি। এ দিন যিনি পার্কিং বিভাগ দেখতেন সেই দেবশঙ্করবাবু বলেন, “বরাত পাওয়া ঠিকাদারদের কাছ থেকে পার্কিং জোনের একাংশ কেউ টাকার বিনিময়ে দখল করতে পারেন না। ওই দোকান বা হোটেলের খদ্দের এবং নিজেদের লোকজনের গাড়ি ছাড়া আম জনতা সেখানে গাড়ি দাঁড় করাতে দিচ্ছেন না। শহরের অনেকেই এই অভিজ্ঞতার শিকার হয়ে পুরসভায় বিষয়টি জানিয়েছে।” অভিযোগ প্রমাণিত হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া কথা জানিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্ত ঠিকাদারদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবেন তাঁরা। তবে এখনও কাউকে ধরতে পারেনি পুরসভা। দেবশঙ্করবাবু জানান, ক্ষুদিরামপল্লি-সহ শহরের বেশ কয়েকটি রাস্তায় অবৈধ ভাবে পার্কিং ফি সংগ্রহের অভিযোগ মিলেছে। কে বা কারা এ কাজ করছেন তা নজরদারি করা হচ্ছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে পুলিশে অভিযোগ জানানো হবে।
ট্রেড লাইসেন্স বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগ পাওয়ার পরেই বরাত পাওয়া ঠিকাদারদের কাছেও বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়েছে। তাঁরা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে পুরসভার তরফে নজরদারি চালানো হচ্ছে। পুরসভার একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্ষুদিরামপল্লি, সেবক রোডে দুই মাইলে একটি শপিংমলের গা ঘেঁষে থাকা রাস্তায়, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে এমআর রোডের মতো বেশ কিছু গলি রাস্তায় অবৈধ পার্কিং জোন তৈরি করে ফি সংগ্রহের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি পার্কিং ফি আদায় নিয়ে বরাত পাওয়া ঠিকাদারদের একাংশের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, কোথাও অবৈধ ভাবে ৬ টাকা, ১০ টাকার স্লিপ ছাপিয়ে বাইক বা গাড়ি দাঁড় করালেই ফি সংগ্রহ করা হচ্ছে। কোথাও পার্কিং জোনে থাকা হকারদের কাছ থেকে টাকা তোলা হচ্ছে। এর পরেই এক ঠিকাদারের বরাত খারিজ করে পুর কর্তৃপক্ষ। তিনি মামলা করায় চেক পোস্ট লাগোয়া ওই পার্কিং জোনে আপাতত ফি সংগ্রহ করা হচ্ছে না। তবে অন্য অনিয়মের বিরুদ্ধে এখনও সে ভাবে ব্যবস্থা নিতে পারেননি তাঁরা। |