প্রায় দু’মাস ধরে একাধিক দুষ্কৃতী দলের লড়াইয়ের জেরে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বাসিন্দাদের ক্ষোভ দানা বাঁধছিল রায়গঞ্জে। সিপিএম, কংগ্রেস এবং তৃণমূলের নেতাদের অনেকেই রায়গঞ্জের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সেই বার্তা পৌঁছেছে মহাকরণেও। এই পরিস্থিতিতে বদলি করা হল রায়গঞ্জের আইসি সমীর পালকে। মাত্র পাঁচ মাস আগে সমীরবাবু রায়গঞ্জের আইসি-র দায়িত্ব নেন। দু’দিন আগে সমীরবাবুকে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটে বদলি করার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্য পুলিশ কর্তৃপক্ষ। পুলিশ সূত্রের খবর, আমজনতার ক্ষোভ প্রশমিত করতেই সমীরবাবুকে সরিয়ে ওই জায়গায় ইটাহারের সার্কল ইন্সপেক্টর দীনেশ প্রামাণিককে নিযুক্ত করা হয়েছে।
জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা বিধায়ক অমল আচার্যের দাবি, “আমি নিশ্চিত, নিষ্ক্রিয় ভূমিকার জন্যই আইসিকে বদলি করা হয়েছে। এই ঘটনা থেকে সাধারণ পুলিশ কর্মীদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। তবে আমি কিংবা আমার দল পুলিশের কোনও কাজে হস্তক্ষেপ করিনি।” তবে সমীরবাবু তাঁকে কেন বদলি করা হয়েছে তা জানেন না বলে দাবি করেছেন। তাঁর বক্তব্য, “বাবার অসুস্থতার কারণে কিছুদিনের জন্য ছুটিতে রয়েছি। বদলির নির্দেশ হাতে পেয়েছি। ২৮ অথবা ২৯ ডিসেম্বর রায়গঞ্জে ফিরে নতুন আইসিকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে শিলিগুড়িতে কাজে যোগ দেব। কী কারণে আমাকে বদলি করা হল তা বলতে পারব না।” বস্তুত, প্রায় দেড় মাস ধরে রায়গঞ্জে অসামাজিক কার্যকলাপ বেড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। নভেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে তিনটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। বেশ কয়েকটি এলাকায় দুষ্কৃতীদের বোমা-গুলির লড়াইও হয়েছে। এ দিন রায়গঞ্জ নাগরিক কমিটির তরফে পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে শহরের আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার দাবিতে মিছিল করা হয়। কমিটির সম্পাদক তপনকুমার চৌধুরী বলেন, “শহরে গুলি-বোমার লড়াই, খুন ও খুনের চেষ্টা সহ একাধিক অপরাধের ঘটনা ঘটেছে। শুধু আইসিকে বদলি করেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না। জেলা পুলিশেও আমূল পরিবর্তনের দরকার।” রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অতনুবন্ধু লাহিড়ী জানান, শহরে অপরাধের ঘটনা বাড়তে থাকায় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন। জেলা বামফ্রন্টের সচিব অপূর্ব পাল বলেন, “দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ার কারণেই আইসিকে বদলি করা হল বলে মনে হচ্ছে।” |